আপত্তি-ক্ষোভ অনেকেরই ছিল। সমালোচনাও হচ্ছিল। প্রথম করে দেখাল হাওয়াই।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিষেধাজ্ঞা মানছি না— জোর গলায় জানিয়ে দিল এই প্রদেশটি। তিন মাসের জন্য ছ’টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় ঢোকা বন্ধ করতে নয়া নিষেধাজ্ঞায় সদ্যই সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই দেশগুলির তালিকায় রয়েছে ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। জানুয়ারির নিষেধাজ্ঞায় থাকা ইরাককে বাদ দিতে বাধ্য হন তিনি। নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে ১৫ মার্চ থেকে। তার আগেই নয়া নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে হাওয়াই। প্রশাসন জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে এখানকার মুসলিম জনতার ক্ষতি হবে। তা ছাড়া বিপদে পড়বে বিদেশি পড়ুয়ারা। মার খাবে পর্যটনও।
রাজধানী হনলুলুর ফেডারেল কোর্টে মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে এই নিয়ে মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, ট্রাম্পের নয়া নিষেধাজ্ঞা নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী। আর যে ছয় দেশের কথা বলা হয়েছে, সেখানে হাওয়াইয়ের বাসিন্দাদের পরিজন থাকতেই পারেন। তাঁরা পরস্পর দেখা করতে পারবেন না, এটা হতে পারে না। তাঁদের মন্তব্য, ‘‘ট্রাম্পের নির্দেশ মানতে হলে আমাদের একটি বিশেষ ধর্মকে অবহেলা করতে হয়।’’
হাওয়াইয়ের অ্যাটর্নি জেনারেল ডগলাস চিন-এর মতে, ‘নয়া নিষেধাজ্ঞায় ট্রাম্প তো এমন কিছু বদল ঘটাননি। সেই মুসলিম অধ্যুষিত দেশের নাগরিকদের উপরে নিষেধাজ্ঞা চেপেই রইল। সংবিধান এবং ইতিহাসের দিক থেকে হাওয়াই কোনও দিন বৈষম্যমূলক আচরণ করেনি।’ তিনি জানিয়েছেন, হাওয়াইয়ে নাগরিকদের ২০ শতাংশ বিদেশে জন্মেছেন, মার্কিন নাগরিক নন অন্তত এক লক্ষ মানুষ, কাজের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ শ্রমিক বিদেশি।
ধর্মের উপরে ভিত্তি করে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা কেন ভয়াবহ, তা হাওয়াইয়ের মানুষ জানেন বলে দাবি ডগলাসের। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল জাপানি-মার্কিনদের। হাওয়াইয়ে তেমন শিবির ছিল। তাই এখানকার মানুষ জানেন, বাইরে থেকে কেউ যদি অন্য দেশে ঢুকতে ভয় পান, তাতে খারাপ নীতিরই জন্ম হয়।
হাওয়াইয়ের মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের ইমাম ইসমাইল আলশেখ বলেছেন, তাঁর শাশুড়ি সিরিয়ায় থাকেন। ট্রাম্পের এই নীতি তাঁদের পরিবারকে বিপর্যস্ত করে দিল।
ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে সব দেশ আপত্তি জানিয়েছে, তারাও হাওয়াইয়ের পথেই হাঁটবে কি না এখনও স্পষ্ট নয়। ওয়াশিংটন বা নিউ ইয়র্ক— দু’জায়গারই অ্যাটর্নি জেনারেলরা বলছেন, তাঁরা নতুন নির্দেশ খতিয়ে দেখছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy