Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Ukraine Dam Disaster

ইউক্রেনের বাঁধ বিপর্যয় কি ষড়যন্ত্র, তদন্ত চলছে

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের এ অঞ্চলের একাংশ রাশিয়ার দখলে। নিপ্রো নদীর পশ্চিম পাড় ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, নদীর উপর জলাধার-সহ পূর্ব দিকটি রাশিয়ার অধীনে।

An image of the local people

খেরসনের নোভা কাকোভকা শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
কিভ শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৯:১৯
Share: Save:

চের্নোবিল পরমাণু বিপর্যয়ের পরে নোভা কাকোভকা জলাধারে ভাঙন ইউক্রেনের ‘সবচেয়ে ভয়ানক পরিবেশগত বিপর্যয়’। এমনই আর্তি প্রকাশ করেছে কিভ প্রশাসন। তাদের আশঙ্কা, জল সরলে তখন বোঝা যাবে কত ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার আগে উত্তর খুঁজছে সরকার, অঘটন নাকি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র! ইউক্রেনীয় নেতাদের একাংশের স্পষ্টতই দাবি, ‘‘এ বারে জলকে হাতিয়ার করল ওরা (রাশিয়া)।’’

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের এ অঞ্চলের একাংশ রাশিয়ার দখলে। নিপ্রো নদীর পশ্চিম পাড় ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, নদীর উপর জলাধার-সহ পূর্ব দিকটি রাশিয়ার অধীনে। গত কাল সকালে একটি প্রকাণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। তার পরেই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রাচীরে ফাটল ধরে বলে সন্দেহ। হুড়মুড় করে জল বেরোতে শুরু করে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার থেকে। বাঁধের জলে ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। হাজার হাজার বাড়ি জলের তলায়। উদ্ধার করা হয়েছে হাজারো বাসিন্দাকে, এখনও অনেকে আটকে রয়েছেন বিপর্যয়স্থলে। কিন্তু এর পর কী! বিদ্যুৎ-সঙ্কট তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে জলকষ্টও দেখা দিতে পারে। অরণ্য, বন্যপ্রাণীদের ক্ষতির আশঙ্কা প্রবল। দূষণের ভয়ও রয়েছে। বিপর্যয়স্থল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে জ়াপোরিজ়িয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই জলাধার থেকেই জল সরবরাহ করা হয় সেখানে। ফলে এ নিয়েও চিন্তা বেড়েছে প্রশাসনের। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি তড়িঘড়ি টুইট করে জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে, আপাতত পরমাণু কেন্দ্রটির নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। পরমাণু চুল্লিগুলিকে ঠান্ডা রাখার জন্য এ ধরনের কেন্দ্রে বিশেষ ‘কুলিং পুল’ থাকে। জ়াপোরিজ়িয়া পরমাণু কেন্দ্রের পুলগুলি ভর্তি রয়েছে। তবে জল সরবরাহ দ্রুত ঠিক না হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। চুল্লিগুলিকে শীতল রাখার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, ডিজ়েল জেনারেটরে সমস্যা হবে।

জলাধার বিপর্যয়ের পরেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি ‘ইকোসাইড’ বা ইচ্ছাকৃত ভাবে পরিবেশের ক্ষতি করা নাকি, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঠিক কেন ও কী ভাবে বাঁধ ভেঙেছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরকে দুষে চলেছে। দু’পক্ষেরই দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিপ্রো নদীর জলাধারটির কংক্রিটের প্রাচীরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফাটল ধরানো হয়েছে। খেরসন অঞ্চলের ইউক্রেনীয় প্রধান অলেকজ়ান্ডার প্রোকুডিন জানিয়েছেন, ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলে অন্তত ১৬ হাজার মানুষ বিপদে রয়েছেন। রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন নোভা কাকোভকা শহরের অবস্থাও সঙ্গীন। একেবারে বাঁধের গা ঘেঁষে এই শহর। সেখানে খেলার স্টেডিয়াম থেকে সিটি কাউন্সিল ভবন, সবই জলের তলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE