—প্রতীকী চিত্র।
সম্পূর্ণ অচেনা এক মানুষের কোলে নিজের ন’মাসের সন্তানকে তুলে দিচ্ছেন রক্তাক্ত মা। কাতর আর্তি, সন্তানকে যেন নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। আহত শিশুটিও।
দৃশ্য ২: শপিং মলের ঝকঝকে মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে কয়েকটি নিথর দেহ, আর তার মাঝে চলাফেরা করছে আততায়ী। পরনে অস্ট্রেলিয়ান রাগবি লিগের জার্সি, হাতে প্রায় ১১ ইঞ্চি লম্বা ছুরি।
দৃশ্য ৩: আতঙ্ক এখনও যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে বাঙালি দম্পতি সৈরিন্ধ্রী ঘোষাল ও দেবাশিস চক্রবর্তীকে। ঘটনার দিন ওই মলে ছিলেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শক্ত কাগজের বাক্স বা কার্টনের আড়ালে লুকিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন।
সিডনির পশ্চিম শহরতলিতে ওয়েস্টফিল্ড বন্ডাই জাংশন শপিং মলে ছুরি হামলার ঘটনার টুকরো টুকরো চিত্রগুলি এমনই। যে হামলায় প্রাণ গিয়েছে ৫ জন মহিলা ও এক পুরুষের। গুরুতর জখম ১২ জনেরও বেশি। যে হামলার প্রেক্ষিতেই উঠছে বেছে বেছে স্রেফ মেয়েদের আক্রমণ করার তত্ত্ব।
গত শনিবার শপিং মলে হামলা চালিয়েছিল বছর ৪০-এর জোয়েল কাউচি। এলোপাথাড়ি ছুরি চালিয়ে সে খুন করে ৫ জন মহিলাকে। রেয়াত করেনি ন’মাসের শিশুকেও। তাকে বাধা দিতে এসে নিহত হন শপিং মলটির নিরাপত্তাকর্মী। শেষ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তার। সেই হামলার ঠিক তিন দিনের মধ্যে ফের এক গির্জায় এক জন ধর্মযাজকের উপর হামলার ঘটনা ঘটল অস্ট্রেলিয়ায়। এ বারও ঘটনাস্থল সিডনি। ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। সোমবারের ছুরি-হামলার ঘটনায় অবশ্য আততায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, এই হামলার পিছনে কোনও জঙ্গি সংগঠনের হাত নেই। জোয়েল মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। তার পরিবারও তা সমর্থন করেছে। জোয়েলের বাবা নিহতদের পরিজনের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘একটি নৃশংস দৈত্যকে ভালবাসছিলাম।’ তিনি এ-ও জানান, তাঁর ছেলের অন্যতম হতাশার কারণ ছিল কোনও প্রেমিকা বা বান্ধবী না থাকা।
এই প্রসঙ্গেই প্রশ্ন উঠছে, জোয়েল কি তবে বেছে বেছে মহিলাদের আক্রমণ করছিল? নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ কমিশনার কারেন ওয়েবের উত্তর, “এখনও কোনও কিছুই নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে, তদন্তের সময় এই বিষয়টিও ভেবে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy