Advertisement
০২ জুন ২০২৪

ফের ইরানপন্থী আধাসেনার কনভয়ে হানা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, ‘‘আমরা যুদ্ধ চাই না। বরং যুদ্ধ থামাতেই সোলেমানিকে মেরে ফেলা হয়েছে।’’

অশান্ত পরিবেশ।

অশান্ত পরিবেশ।

সংবাদ সংস্থা
বাগদাদ শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১৫
Share: Save:

জেনারেল কাসেম সোলেমানি খুনের বদলার দাবিতে ফুঁসছে তেহরান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, ‘‘আমরা যুদ্ধ চাই না। বরং যুদ্ধ থামাতেই সোলেমানিকে মেরে ফেলা হয়েছে।’’ এ দিকে কাল ভোররাতে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মাথায় আজ ফের ইরানপন্থী যোদ্ধাদের কনভয়ে বিমান হামলার অভিযোগ উঠল ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে। আবার এ দিনই বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস ও বালাড বায়ুসেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে রকেট। বাগদাদে মার্কিন ‘গ্রিন জ়োন’ লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে মর্টার। তবে হতাহতের খবর নেই।

ফের ইরাকে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করলেও ট্রাম্প আজ ফের সোলেমানির ‘জঘন্য নেশা’-র নিন্দা করে দাবি করেন, পশ্চিম এশিয়া থেকে বেরিয়ে লন্ডন এমনকি নয়াদিল্লিতেও জঙ্গি হামলার ছক কষেছিল তাঁর কাডস বাহিনী।

বাগদাদের উত্তরে তখন সোলেমানি ও ইরানির সমর্থনপুষ্ট ইরাকের ভাড়াটে সেনার নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিসের কফিনবন্দি দেহ নিয়ে শেষযাত্রার প্রস্তুতি চলছিল। শোকমিছিলে নামবেন বলে তৈরি হচ্ছিলেন শিয়াপন্থী সাধারণ মানুষেরও একটা বড় অংশ। হঠাৎই হামলা হল ইরানি সাহায্যপ্রাপ্ত ইরাকের আধাসেনা হাশেদ আল-শাবি বাহিনীর কনভয়ে। আজও বেশ কয়েক জন মারা গিয়েছেন বলে জানালেও হতাহতের সংখ্যা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। ইরাকের সরকারি টিভি ট্রাম্পের প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। মার্কিন সেনা জোটের মুখপাত্র মাইলস ক্যাগিনস যদিও সেই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘‘আমেরিকা কিংবা ন্যাটো আজ হামলা চালায়নি।’’

বাগদাদের শোকমিছিলে তবু আজ ভাটা পড়েনি বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। কালো পোশাকে প্রতিশোধের হুঙ্কার দিতে দিতে পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। মিছিলে পা মেলান ইরাকের তদারকি প্রধানমন্ত্রী আদিল আব্দুল-মাহদি-সহ বেশ কয়েক জন প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তা। ছিলেন ইরাকের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকিও। সূত্রের খবর, বাগদাদ থেকে আজই সোলেমানির দেহ ইরাক সীমান্ত লাগোয়া ইরানের খুজ়েস্তানে আনা হবে। সেখান থেকে আগামিকাল, দেহ যাবে সোলেমানির জন্মস্থান কেরমানের শহরতলিতে। সেখানেই শেষকৃত্য হবে।

সোলেমানির মৃত্যুতে কাল থেকেই তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করছে ইরান। কাডস বাহিনীর পরবর্তী প্রধান হিসেবে সোলেমেনির ডেপুটি ইসমাইল কানি-র নাম ঘোষণাও হয়ে গিয়েছে। এ দিকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তেহরানের ছায়াযুদ্ধের জল্পনায় আমেরিকা তো বটেই, ব্রিটেনও তাদের নাগরিকদের ইরান-ইরাক থেকে ফিরে আসার আর্জি জানিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত কালই পশ্চিম এশিয়ায় অতিরিক্ত তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। কিন্তু মার্কিন সেনা জোটের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পশ্চিম এশিয়ায় বাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং ‘জেহাদি-অভিযান’ আপাতত স্থগিত রেখেছে পেন্টাগন। ইরান-ইরাকের পরিস্থিতির কথা জানিয়ে ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টোলেনবার্গ মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব মার্ক এসপারকে নিয়মিত ফোন করছেন বলেও জানা গিয়েছে।

এ দিকে মার্কিন ড্রোন হামলায় সোলেমানির মৃত্যু নিয়ে ইরাকের আমজনতা দ্বিধাবিভক্ত। সোলেমানির বাহিনীই যে হেতু ২০১৪-য় আইএস-কে ঘাঁটিছাড়া করেছিল, তাই মার্কিন হামলার কড়া নিন্দা করেছেন অনেকে। প্রতিশোধের দাবিতে সরব তাঁরা। দ্বিতীয় অংশে আবার চোরা উল্লাস। ইরানের সমর্থনপুষ্ট ইরাকি সরকারের কুশাসন এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে পথে নেমে আন্দোলন করা এই মানুষেরা একটু ভয়ও পাচ্ছেন। তাঁদের আশঙ্কা, শিয়া বাহিনী আরও চেপে বসবে। ইরাকে সরকার-বিরোধী আন্দোলনকে সোলেমানি, আল-মুহানদিসের বাহিনী বহু দিন ধরেই মার্কিন চক্রান্ত বলে চালানোর চেষ্টা করে আসছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Iran Donald Trump Qasem Soleimani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE