খুন ১৯ প্রতিবন্ধী
হামলার ইঙ্গিত দিয়ে আগেই এক চিঠিতে ছক খোলসা করেছিল আততায়ী। প্রায় ছ’মাসের মাথায় অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল সেই হুমকি। মঙ্গলবার রাতে জাপানের একটি হোমে ঢুকে ৯ মহিলা-সহ ১৯ জন প্রতিবন্ধী আবাসিককে গলা কেটে খুন করল সে। আর তার পর সোজা থানায় গিয়ে স্বীকার করল অপরাধ। ঠিক যেমনটা সে লিখেছিল চিঠিতে।
খুনির নাম সাতোশি উয়েমাতসু। বছর ছাব্বিশ বয়স। টোকিওর সাগামিহারার ওই হোমটিরই প্রাক্তন কর্মী সে। গত ফেব্রুয়ারিতে জাপানের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে পাঠানো ওই চিঠিতে শুধু খুনের পরিকল্পনা নয়, খুনের উদ্দেশ্যও সবিস্তার ব্যাখ্যা করেছিল সাতোশি। লিখেছিল, পৃথিবী থেকে সমস্ত প্রতিবন্ধী মানুষকে সে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। খুনের পরেও রক্তমাখা ছোরা হাতে পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে একই কথা বলেছে সে। প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত ভয়াবহ গণহত্যার সাক্ষী হয়নি জাপান।
মঙ্গলবার তখন মধ্যরাত। হাতুড়ি দিয়ে জানলা ভেঙে ভিতরে ঢুকে নিঃশব্দে ঘুমন্ত আবাসিকদের গলায় ছুরির কোপ বসাতে থাকে। মিনিট চল্লিশে এ ভাবেই ১৯ জনকে হত্যা করে সে। মারাত্মক জখম করে অন্তত ৩০ জনকে। পরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। স্থানীয়েরা বলেন, কালো পোশাকে এক যুবককে ব্লেড হাতে ওই হোম চত্বরে ঘুরতে দেখেই পুলিশ ডাকা হয়। একই রকম চেহারার এক যুবকের টুইটার অ্যাকাউন্ট পরে নজরে আসে গোয়েন্দাদের। যেখানে লেখা ছিল, ‘সারা বিশ্বে শান্তি আসুক। জাপান এক সুন্দর দেশ।’ হত্যাকাণ্ডের আধ ঘণ্টার মাথায় এই টুইটটি করা হয়। ওই যুবককেই সাতোশি বলে চিহ্নিত করেছে সংবাদমাধ্যম।
একটি সূত্র বলছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঝামেলা করে ফেব্রুয়ারিতে হোমের চাকরি খুইয়েছিল সাতোশি। তার পর-পরই পার্লামেন্টে ওই চিঠি পাঠিয়ে সে জানায়, দু’টি হোমে ঢুকে ৪৭০ জন প্রতিবন্ধীকে হত্যা করবে সে। চিঠিতে সে লেখে, যে মানুষরা দৈহিক অক্ষমতার কারণে বাড়িতে থাকতে পারেন না, অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে তাঁদের নিষ্কৃতি-মৃত্যু দেওয়া উচিত। তাঁদের হত্যা করে বিশ্ব অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করবে সে। চিঠি পেয়েই মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয় সাতোশিকে।
দু’সপ্তাহের মধ্যে ছেড়েও দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন উঠছে, সাত-তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে সাতোশিকে ছাড়া না হলে হয়তো এড়ানো যেত এই গণহত্যা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy