Know the only place in on earth where lions live alone dgtl
Kenya
বিশ্বে এটাই একমাত্র জঙ্গল যেখানে সিংহেরা একা থাকে, কেন জানেন?
বিশ্বের একমাত্র জায়গা যেখানে সিংহেরা একা থাকতেই পছন্দ করে। কেন জানেন?
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০৯:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
সামাজিক, দল বেঁধে থাকা আর এক জোট হয়ে শিকার করাই এদের প্রকৃতি। কেনিয়ার সাম্বুরুর সিংহেরা কিন্তু আলাদা। বিশ্বের একমাত্র জায়গা যেখানে সিংহেরা একা থাকতেই পছন্দ করে। কেন জানেন?
০২১৩
সিংহের এই একা থাকাকে বেছে নেওয়ার পিছনে বাঁচার তাগিদ লুকিয়ে রয়েছে। আফ্রিকার অন্যান্য জঙ্গল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা সাম্বুরু। আর এই জঙ্গলের প্রকৃতিই সিংহদের একা থাকতে বাধ্য করেছে।
০৩১৩
২০০২ সালে সাম্বুরু জঙ্গলে আসেন প্রাণীবিদ শিবানী ভাল্লা। শিবানী ভাল্লা ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলের তরফ থেকেই শিবানী কেনিয়ার সাম্বুরুতে আসেন। ভারতীয় বংশদ্ভূত শিবানীর জন্ম-কর্ম সবই কেনিয়াতে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এই জঙ্গলে চিতার সংখ্যা নিয়ে গবেষণা করার।
০৪১৩
তবে চিতার দেখা সে ভাবে না পেলেও বরং একটা বিষয় তাঁর খুব চোখে লেগেছিল। পুরো জঙ্গলে একটাও সিংহের দল নেই! সিংহেরা জঙ্গলের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে একাই ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আর কেউ কেউ নিজের শাবকদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরছিল। চিতাদের ছেড়ে তিনি পড়লেন সিংহদের এই অদ্ভুত আচরণের কারণ খুঁজতে।
০৫১৩
সিংহের প্রকৃতিই হল দল বেঁধে শিকার করা। দলের বাকিরা যখন শিকার করে, দু’একটি সিংহ গুহার কাছে থেকে শাবকদের পাহারা দেয়। কিন্তু এই জঙ্গলে সিংহেরা শাবকদের সঙ্গে নিয়েই শিকার করে। সাম্বুরু জাতীয় অরণ্য অন্য জঙ্গলের থেকে আলাদা কেন? এই জঙ্গলে এলেই সিংহের স্বাভাবিক প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে কেন? ভাবিয়ে তোলে শিবানীকে।
০৬১৩
দীর্ঘ দিনের গবেষণায় উঠে আসে সম্পূর্ণ নতুন এক তথ্য। আর তা হল সিংহ-মানুষ দ্বন্দ্ব। সাম্বুরু জাতীয় সংরক্ষিত উদ্যানের মধ্যেই বসবাস সাম্বুরু জাতির মানুষের। সাম্বুরুদের জনসংখ্যা যত বাড়তে থাকে, সমান তালে সিংহের বাসস্থান কমতে শুরু করে।
০৭১৩
বাসস্থানের কমার সঙ্গে সিংহের খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তার উপর চোরা শিকার, বিষ প্রয়োগের কারণেও প্রচুর সিংহের মৃত্যু হয়। আসলে সাম্বুরুরা গবাদি পশুপালন করেন। সিংহের হাত থেকে প্রতিপালিত পশুদের বাঁচাতে তাঁরাই মাংসে বিষ মিশিয়ে জঙ্গলে রেখে দেন।
০৮১৩
২০০৯ সালে সমীক্ষা অনুযায়ী ২০০০ সিংহ ছিল এই জঙ্গলে। তারপর মাত্র ৭ বছরে ২৬ শতাংশ সিংহের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালের হিসাবটা জানা যায়নি।
০৯১৩
আসলে দলে না থেকে একা থাকাটাই এখানকার সিংহদের অভিযোজন। কারণ সিংহের একটা দলে ১০-১২টা সিংহ থাকে। তাদের জন্য অনেক বেশি শিকারের প্রয়োজন। জঙ্গলে চরে বেড়ানো গবাদি পশুদের বেশিরভাগটাই সাম্বুরু প্রজাতির মানুষের। ফলে মানুষের সঙ্গে সিংহের দ্বন্দ্ব বাড়বে। মানুষের হাতে সিংহের মৃত্যুও হবে বেশি।
১০১৩
আরও একটা বিষয় প্রাণীবিদ ভাল্লা লক্ষ্য করেছিলেন, অন্যান্য জাতির তুলনায় সাম্বুরু জাতির মানুষ বেশি ধৈর্যশালী। গবাদিপশু পালক এই সাম্বুরুদের একটা গরু বা মোষ শিকার হলে সিংহের কোনও ক্ষতি এরা সাধারণত করে না। অনেকগুলো একসঙ্গে শিকার হলে তবেই সিংহ-শিকারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে।
১১১৩
এটাই বোধহয় বুঝে নিয়েছিল সাম্বুরুর সিংহেরা। তাই যতটা সম্ভব একা থাকা অভ্যাস করে ফেলে তারা। একা থাকার জীবন বেছে নেওয়ায় সাফল্যও এসেছে।
১২১৩
ভাল্লার গবেষণা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার কিছু সিংহ ১৬ বছর পর্যন্ত জীবিত রয়েছে। দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা ১৬ বছর বাঁচাটা এমন একটা প্রতিকূল পরিবেশে খুবই কঠিন। এর পাশের এলাকা তানজানিয়ার সেরেনজেটির জাতীয় উদ্যানের সিংহরা বাঁচে ১৯ বছর।
১৩১৩
সাম্বুরুর সিংহেরা খুব ভাল ভাবে নিজের এলাকা চেনে। সামান্য বিপদের আঁচ করতে পারলেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। আর শাবকেরাও বেশি দিন মায়ের ছত্রছায়ায় থাকে না এখানে। একা শিকার করতে শিখে গেলেই তারা নিজের আলাদা এলাকা খুঁজে নেয়। শুধুমাত্র মিলনের সময়ই সিংহ এবং সিংহী কিছু দিনের জন্য এক সঙ্গে থাকে।