চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মৃতদেহ। আশপাশ থেকে উঁকি দিচ্ছে পিঠে নেওয়ার ব্যাগ, সিটবেল্ট, মোবাইল ফোন। আর তন্নতন্ন করে সেই সব জিনিসপত্র হাতড়াচ্ছে কয়েক জন মানুষ।
গত বছরের ১৭ জুলাই মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ-১৭ ২৯৮ জন আরোহী সমেত আছড়ে পড়ে ইউক্রেনের মাটিতে। সে সময় ইউক্রেন অভিযোগ করে, রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ক্ষেপণাস্ত্র হানাতেই ভেঙে পড়ে এমএইচ-১৭। সেই দুর্ঘটনার বর্ষপূর্তিতে এমনই একটি ভিডিও প্রকাশ করল সিডনির একটি সংবাদপত্র।
সতেরো মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ক্ষেপণাস্ত্রের হানায় যুদ্ধবিমান না নামিয়ে যাত্রিবাহী বিমান নামিয়ে ফেলেছে বুঝতে পেরে, অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। রুশ ভাষায় তাদের বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘এটা তো যাত্রিবাহী বিমান!’’ ভিডিওতে আরও দেখা যাচ্ছে, যাত্রীদের ব্যাগে কী জিনিস রয়েছে, তন্নতন্ন করে তা খুঁজে দেখছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। হাতে তুলে নিচ্ছে যাত্রীদের মোবাইল ফোন।
ভিডিওটি দেখলে অসুস্থ বোধ হয় বলে মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী জুলি বিশপ। গত বছরের বিমানহানা যে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েই করা হয়েছিল, এই ভিডিও দেখার পর তা আরও এক বার প্রমাণ হয়ে গেল বলে মনে করেন তিনি। অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবটের আবার মত, গোটা ঘটনাটি দুর্ঘটনাটি তো নয়ই। বরং নৃশংসতা— ভিডিওটি দেখার পর এই তত্ত্ব ফের প্রমাণ হল। অ্যাবটের কথায়, ‘‘আকাশে বিরাট মাপের বিমান উড়তে দেখে ক্ষেপণাস্ত্রের হানায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তা নামিয়ে ফেলে। তবে তারা যে একটা যাত্রিবাহী বিমান নামাচ্ছে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি।’’
অ্যাবট জানিয়েছেন, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের হদিস পাওয়া সহজ নয়। রাশিয়া থেকেই এমন ক্ষেপণাস্ত্র এসেছিল বলে অস্ট্রেলিয়ার দৃঢ় বিশ্বাস। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তদন্তে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেছেন অ্যাবট।
একটি যৌথ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং ইউক্রেন পুলিশ। ভিডিও ফুটেজটি তাদের দেওয়া হয়েছে এবং চার মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
গত বছরের ১৭ জুলাই আমস্টারডাম থেকে কুয়ালা লামপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ-১৭। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ইউক্রেনের ডনেৎস্কের গ্রাবোভো গ্রামের কাছে ভেঙে পড়ে বিমানটি। মৃত্যু হয় বিমানে থাকা সব আরোহীরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy