কোনও ভাবেই নিরস্ত করা যাচ্ছিল না তাকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নির্দেশ অমান্য করে একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছিল উত্তর কোরিয়া। উল্টে হুমকি দিয়েছিলেন কিম জং উন, নিজের দেশকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু অস্ত্রধর দেশ হিসেবে গড় তুলবেন তিনি। এ বার তাই ঘুরপথে কিমের ‘রথের’ লাগাম টানতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ।
১৫ সদস্য দেশের পরিষদ শুক্রবার সর্বসম্মত ভাবে সায় দিয়েছে আমেরিকার খসড়া প্রস্তাবে। নজিরবিহীন ভাবে চিনও সমর্থন জানিয়েছে ওয়াশিংটনকে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় পরিশোধিত পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্যের জোগান সীমিত করে দেওয়া হবে। উদ্দেশ্যটা হল— জ্বালানিই হাতে না থাকলে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালাবে কী ভাবে!
আরও পড়ুন: ওসামার দশা হবে না তো হাফিজের
গত ২৮ নভেম্বর ‘আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’ (আইসিবিএম) -এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছিল উত্তর কোরিয়া। হুঙ্কার ছেড়েছিল, পিয়ংইয়ংয়ে বসেই সুদূর আমেরিকায় আক্রমণ শানাতে সক্ষম তাদের ক্ষেপণাস্ত্র। সম্প্রতি গবেষণার সাফল্যের কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণাও করেছিলেন কিম। এর পরেই রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা। তাতে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার শক্তি মন্ত্রক, আমদানি ও রফতানি দফতরের উপরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। বিদেশে কাজ করতে যাওয়া উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। আটকানো হোক সমুদ্রপথে তাদের লাগামহীন পাচার। শুক্রবার চিন-সহ পরিষদের ১৫টি সদস্য দেশই আমেরিকার প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছে। তাতে উত্তর কোরিয়ার পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম-জাত দ্রব্যের ৯০ শতাংশ আমদানিই নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মার্কিন দূত নিকি হ্যালি এ দিন বলেন, ‘‘ওদের দেশে লোকজন না খেতে পেয়ে মরছে, দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে, এ দিকে ওরা পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছে, শক্তি প্রদর্শনের ভান করছে। বিশ্বের উদ্দেশে বেনজির চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল ওরা, আমরাও নজিরবিহীন পদক্ষেপ করলাম।’’
উত্তর কোরিয়া থেকে খাদ্যদ্রব্য, যন্ত্র, শিল্প ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রফতানির উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকী উত্তর কোরিয়া থেকে বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে।
দু’দিন আগেই উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ দিন আমেরিকার প্রস্তাবনাকে ‘দারুণ পদক্ষেপ’ বলে প্রশংসা করে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রফ্ট বলেন, ‘‘আমেরিকার কূটনৈতিক সাফল্যকে অভিনন্দন জানাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy