প্রতীকী ছবি।
ট্রাফিক আইন ভাঙায় আমেরিকার ব্রুকলিন সেন্টারে পুলিশের হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যায় ফিরল ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের উত্তাপ। রবিবার মিনিয়াপোলিসের উত্তর-পশ্চিম সীমানায় ওই শহরতলিতে ডন্টে রাইট নামে এক ২০ বছরের যুবককে হত্যা করে পুলিশ। ঠিক এক বছর আগে আর এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে এক আদালতে চলছিল শভিনের শুনানি। যে কারণে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত ছিল মিনিয়াপোলিস। রবিবারের ঘটনার পরে আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারী জনতাকে রুখতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। ঘটনাস্থলে জারি করা হয়েছে কার্ফুও।
ব্রুকলিন সেন্টার পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টো নাগাদ ট্রাফিক আইন ভাঙায় ডন্টে রাইটকে আটকায় অফিসারেরা। সেই সময়ে জানা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে আগে থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। অভিযোগ, পুলিশ রাইটকে গ্রেফতার করতে গেলে ফের গাড়িতে উঠে পড়ার চেষ্টা করেন ওই যুবক। তখন তাঁকে গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই তিনি গাড়ি চালিয়ে এগোনোর চেষ্টা করলে অন্য একটি গাড়িতে ধাক্কা মারেন। সেখানেই মৃত্যু হয় রাইটের।
ওই যুবকের মা জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে তাঁকে ফোন করেছিলেন ছেলে। ফোনেই বাদানুবাদের আওয়াজ পান মা। এর পরে ফোন কেটে যায়। মায়ের কথায়, ‘‘এর এক মিনিটের মাথায় ছেলের বান্ধবীকে ফোন করি। সে-ও গাড়িতে ছিল। ও জানায়, আমার ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। প্রাণহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার ছেলের দেহ মাটিতে ফেলে চলে যায় অফিসারেরা। কেউ আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়নি। বার বার অনুরোধ করার পরেও...।’’
রবিবার রাতেই ডন্টে রাইটের নামে স্লোগান দিতে দিতে ব্রুকলিন সেন্টারে পুলিশের সদর দফতর ঘিরে ফেলে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। রায়ট পুলিশ রাস্তায় নামলে পরিস্থিতি আরও তেতে ওঠে। পুলিশের গাড়িতেও ভাঙচুর চালায় জনতা। ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিক্ষুব্ধদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও গ্রেনেড ছুড়ছে পুলিশ। অশান্তি চলাকালীন বেশ কিছু দোকানেও লুটপাট চলে। এর পরেই কার্ফু ঘোষণা করেন শহরের মেয়র।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষুব্ধদের আটকাতে পুলিশের সদর দফতরের বাইরে মানব-ব্যারিকেড তৈরি করে ফেলে হেলমেট, শিল্ড পরা রায়ট পুলিশ। তা সত্ত্বেও একটু একটু করে এগোনোর চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। ভিড়ের মধ্যে স্লোগান ওঠে, ‘‘আমরা বিচার না-পেলে ওরা শান্তি পাবেন না।’’ কেউ কেউ মাথায় হাত দিয়ে পুলিশের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন। অনেকে আবার পুলিশের হাতে খুন হওয়া কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের ছবির তালিকা হাতে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন নিহত যুবকের পরিজনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy