ফাইল চিত্র।
গত বছর অগস্টে দ্বিতীয় বারের জন্য আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিল তালিবান। তখনই তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আগের মতো রক্ষণশীল নীতি নিয়ে এ বার আর দেশ শাসন করবে না তারা। বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার সুরক্ষিত থাকবে নতুন সরকারের অধীনে। কিন্তু আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি তালিবান। প্রথমে নানাবিধ পোশাকবিধি ও শর্ত চাপিয়ে মেয়েদের স্কুল-কলেজ চালু করেছিল তারা। কিন্তু চলতি বছরের গোড়ায় মেয়েদের হাইস্কুল ও কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এ বার তাদের প্রতিশ্রুতি, নারীশিক্ষা নিয়ে খুব শীঘ্রই বড় ‘সুখবর’ দিতে চলেছে তারা।
একটি আমেরিকান টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানের বর্তমান অভ্যম্তরীণ মন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হক্কানি এমন বার্তাই দিয়েছেন। মন্ত্রী পুরোটা খোলসা না করলেও আফগান মেয়েরা ফের হাইস্কুল বা কলেজে পড়তে যেতে পারবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
চলতি বছর মার্চে আচমকা মেয়েদের হাইস্কুল ও কলেজে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপায় তালিবান। যাতে আমেরিকা-সহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই প্রতিবাদ জানিয়েছিল। হক্কানি ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁদের সরকার মোটেও নারীশিক্ষার বিরোধী নয়। কিন্তু পোশাক বিধি-সহ বেশ কিছু দিকে তাদের নজর দিতে হয়েছে। সে জন্যই এই কয়েক মাস মেয়েদের পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা-মায়েরা যখন তাঁদের কন্যাসন্তানকে পড়তে পাঠাচ্ছেন, তখন আমাদের দায়িত্ব সেই সন্তানের সুরক্ষা ও সম্মান রক্ষা করা।’’ অনেকেই মনে করছেন, দেশে নারীদের জন্য উচ্চশিক্ষার দরজা খুললেও পোশাক ও অন্যান্য বিধি আরও কড়া করবে তালিবান। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারি স্তরে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। তবে প্রথম দিকে, মেয়েদের প্রকাশ্যে আসার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মাথায় হিজাব রাখার পক্ষে সওয়াল করলেও এখন তালিবান চাইছে, মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরোলেই যেন বোরখায় তাঁদের পুরো শরীর ঢাকা থাকে।
সাক্ষাৎকারে হক্কানি আরও জানিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে তাঁরা সম্পর্কের উন্নয়নে আগ্রহী। তাঁর কথায়, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে কোনও শত্রুতা আমাদের নেই। বরং আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসমুক্ত করার যে প্রতিশ্রুতি আমেরিকান প্রশাসনকে আমরা দিয়েছে, তা বজায় রাখাই আমাদের অগ্রাধিকার।’’
তবে আমেরিকার হাতে যখন দেশভার ছিল, সেই আমলের বেশ কিছু মন্ত্রক ও বিভাগ সম্প্রতি বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান তালিবান সরকার। যার মধ্যে অন্যতম— মানবাধিকার কমিশন। গত শনিবারই তাদের প্রথম বাজেট পেশ করেছে তালিবান সরকার। যেখানে তারা বলেছে, দেশ এখন চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের খরচ কমাতে বেশ কয়েকটি মন্ত্রক ও বিভাগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যার মধ্যে মানবাধিকার কমিশন অন্যতম। তালিবান সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য, এখন এই সব মন্ত্রকের পিছনে অহেতুক খরচ করার কোনও অর্থ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy