কী ভাবে ডরিস করোনায় আক্রান্ত হলেন, স্পষ্ট নয়।
করোনায় কাবু এ বার খোদ ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাদিন ডরিস। কাল স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেয়ে বছর বাষট্টির ডরিস নিজেই নিজেকে ‘কোয়ারেন্টাইন’ করে রেখেছেন বাড়িতে। সে কথা টুইট করে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন সবচেয়ে বেশি চিন্তা মাকে নিয়ে। ৮৪ বছর বয়স, আমার সঙ্গেই থাকেন। আজই দেখলাম মা কাশছে। কাল মায়েরও টেস্ট!’’ ৫ মার্চ ডরিসের কিছু উপসর্গ ধরা পড়ে। ওই দিনই ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন-সহ প্রায় একশো জন এমপি-মন্ত্রী-সচিবের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাঁকে!
এই ভাইরাসের কবলে ইতিমধ্যেই ৬ জনের প্রাণ গিয়েছে ব্রিটেনে। বুধবার পর্যন্ত করোনা-পরীক্ষা হয়েছে ২৫ হাজার জনের। সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৩৮২ জনের। শুধু লন্ডনেই সংখ্যাটা ৯১! এখন রোজ গড়ে দেড় হাজার জনের স্বাস্থ্যপরীক্ষার করা হচ্ছে। আগামী দিনে যাতে রোজ অন্তত ১০ হাজার জনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা যায়, সেই বন্দোবস্ত করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
শুক্রবার হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন ডরিস। সেই সময়ে তিনি নাকি নিজের অফিসে বসে করোনা সংক্রান্ত একটি বিমা বিলে সই করছিলেন। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে লালারস পরীক্ষা করা হয় তাঁর। চিকিৎসায় ভালই সাড়া দিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলা হচ্ছে, শীঘ্রই সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন তিনি। তবু তাঁর থেকে সংক্রমণের আশঙ্কায় সিঁটিয়ে রয়েছে ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহল। কার থেকে এবং কী ভাবে ডরিস করোনায় আক্রান্ত হলেন, স্পষ্ট নয়। তাই এখন মন্ত্রীর শরীরে উপসর্গ দেখা দেওয়ার কয়েক দিন আগে ও পরে তিনি যাঁদের সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন, তাঁদের সকলকেই নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সব সচিব, অফিসারদের উপরও নজর রাখা হচ্ছে। করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ার দিনেই তিনি যে হেতু জনসনের সঙ্গে দেখা করেন, তাই বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে বরিসের উপরেও।
সংবাদ সংস্থার খবর, করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে আজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জার্মানিও। সে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়েছে। বুধবার পর্যন্ত মৃত ৩। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭০ শতাংশেরও বেশি জার্মান এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। সাংবাদিক বৈঠকে এই তথ্য দিয়েই করোনা মোকাবিলায় আরও জোর দেওয়ার কথা বলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। হাজার জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কাল থেকে তালাবন্দি ইটালির ৬ কোটি মানুষ। মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬৩১। অসময়ে ইটালির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে চিন। বেজিং থেকে রোমে আসছে ১ লক্ষ মাস্ক, ২০ হাজার বিশেষ পোশাক এবং এক হাজার ভেন্টিলেটর। চিনের রেড ক্রস সোসাইটি পাঠাচ্ছে চিকিৎসকের দল।
করোনা উদ্বেগে সিঁটিয়ে আমেরিকাও। আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গিয়েছেন ৩১ জন। ন’টি প্রদেশে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে নিউ ইয়র্ক শহরে প্রথম বার মাঠে নেমেছে ‘ন্যাশনাল গার্ড’। নিউ ইয়র্কে শুক্রবার করোনা নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। করোনা-আতঙ্কে সেটিও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
আজ বেলজিয়ামে প্রথম করোনা-মৃত্যুর সংবাদ মিলেছে। ব্রাসেলসে মারা গিয়েছেন নব্বই বছরের এক বৃদ্ধ। স্পেন এবং সুইৎজারল্যান্ড থেকে ফেরা দুই নাগরিকের দেহে প্রথম করোনা সংক্রমণ মিলেছে হন্ডুরাসেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy