Advertisement
১৪ মে ২০২৪
Israel-Hamas Conflict

ইজ়রায়েল-বিরোধী মেমো এ বার বাইডেনের দরবারেও

ইজ়রায়েল এখন অনেক দিক থেকেই চাপে। গাজ়ায় ‘গণহত্যা’ কোনও দেশই ভাল চোখে দেখছে না। সবচেয়ে কাছের বন্ধু দেশেও ইজ়রায়েল কাঠগড়ায়।

প্য়ালেস্টাইপন্থী বিক্ষোভকারীরা।

প্য়ালেস্টাইপন্থী বিক্ষোভকারীরা। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
তেল আভিভ শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫৬
Share: Save:

পরম বন্ধুও কি একটু একটু করে পাশ থেকে সরে যাচ্ছে! সতর্ক ইজ়রায়েল। আমেরিকার সঙ্গে তাদের সম্পর্কে সামান্য হলেও চিড় ধরেছে। এক তো গোটা আমেরিকা জুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইজ়রায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ, আন্দোলন চলছে। তার প্রভাব পড়ছে। দ্বিতীয়ত, আমেরিকান সরকারের অন্দরমহলেও যুদ্ধে অর্থসাহায্য নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় আমেরিকার বিদেশ দফতরের একটি গোপন মেমো প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে লেখা রয়েছে, আমেরিকা ইজ়রায়েলকে যে সব অস্ত্র দিচ্ছে, তা যে তেল আভিভ আন্তর্জাতিক আইন মেনে ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে ‘ভরসাযোগ্য সদুত্তর’ দিতে পারেনি তারা। মেমোটি বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে পাঠানো হয়েছিল। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই মেমো থেকে স্পষ্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ভিতরেও ইজ়রায়েলের যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তা ছাড়া স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই গাজ়া-প্রসঙ্গে বেশ কয়েক জন আমেরিকান আধিকারিক পদত্যাগ করেছেন।

ইজ়রায়েল এখন অনেক দিক থেকেই চাপে। গাজ়ায় ‘গণহত্যা’ কোনও দেশই ভাল চোখে দেখছে না। সবচেয়ে কাছের বন্ধু দেশেও ইজ়রায়েল কাঠগড়ায়। ‘ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি মেমোরান্ডাম’ (এনএসএম)-এর আওতায় আগামী ৮ মে-র মধ্যে ব্লিঙ্কেনকে জানাতে হবে, আমেরিকার পাঠানো অস্ত্র ইজ়রায়েল আন্তর্জাতিক আইন মেনে ব্যবহার করছে কি না। উত্তর যদি নেতিবাচক হয়, সে ক্ষেত্রে আরও চাপ বাড়বে ইজ়রায়েলের উপর। গণহত্যার অভিযোগে তাদের ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক আদালত অবশ্য
এখনও চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেনি। তবে একটি অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণা করেছিল তারা। সেখানে বলা হয়েছিল, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকা যে অভিযোগ করেছিল, সেই অপরাধের কিছুটা হলেও গাজ়ার সঙ্গে করেছে ইজ়রায়েল। যা ‘জিনোসাইড কনভেনশন’ ভাঙার শামিল।’’ জবাবে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলা ‘ভয়ানক আপত্তিকর’, ইজ়রায়েল আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধ। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে নতুন করে চিন্তুায় তেল আভিভ। এমন গুঞ্জনও উঠেছে, নেতানিয়াহু ও তাঁর সঙ্গী অফিসারদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিন্যাল কোর্ট। তেল আভিভে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক বসেছে। গ্রেফতার হওয়ার তালিকায় শীর্ষে নাম রয়েছে নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট
এবং সেনার চিফ অব স্টাফ হার্জ়ি হালেভি-র।

তবে এ সবের মধ্যেও গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি হামলা অব্যাহত। যে কোনও মুহূর্তে রাফায় স্থল-অভিযান শুরু হতে পারে। ইজ়রায়েলি বাহিনীর নির্দেশেই এক সময়ে উত্তর ও মধ্য গাজ়া থেকে মানুষ দল বেঁধে চলে এসেছিল রাফায়। বলা হয়েছিল, এখানে হামলা করা হবে না। সেই রাফাতে এখন কোণঠাসা ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। ইজ়রায়েলি বাহিনীর দাবি, এই ঘরহারা লাখো মানুষের ভিড়ে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। অতএব এখানেও হামলা চলবে। প্যালেস্টাইনি প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আব্বাস আজ আমেরিকার কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘একমাত্র আমেরিকাই পারে এই গণহত্যা ঠেকাতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Israel-Palestine Conflict USA Joe Biden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE