মার্ক জুকেরবার্গ। ফাইল চিত্র।
মার্কিন যুক্তরাষ্টের ভোট প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ অস্বীকার তো করলেনই, পাশাপাশি ভারতের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কোনও অভিপ্রায় ফেসবুকের নেই বলেও জানিয়ে দিলেন মার্ক জুকেরবার্গ। কিন্তু এর পরেও আশঙ্কা কি দূর হল?
এমনিতেই দুর্নীতি কিংবা টাকার বিনিময়ে ভোটের অভিযোগ নিয়ে দেশের রাজনীতি উত্তাল হয় মাঝে মধ্যেই। তার উপর যদি সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য ভাণ্ডারে থাকা ভোটারদের তথ্য রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে চলে যায়, তবে আরও বিপদ। যদিও ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জুকেরবার্গের মন্তব্য, ‘‘শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নয়, সামনেই বড় ভোট রয়েছে ভারতে। বড় ভোটের প্রহর গুনছে ব্রাজিল। আরও অনেক দেশ। ফেসবুকের তথ্য ভাণ্ডার ব্যবহার করে যাতে কোনও দেশের ভোটকে প্রভাবিত করা না যায়, সে ব্যাপারে আমরা সত্যিসত্যিই দায়বদ্ধ।’’
উদ্বেগ বাড়ছে লন্ডনের সংস্থা কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসার পর। ফেসবুকের ডেটাবেস থেকে ইউজারদের তথ্য ব্যবহার করে যে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে আনার যে চেষ্টা হয়েছিল, সে কথা অ্যানালিটিকার এক শীর্ষ কর্তা স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে কী ভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করা যায়?
আরও পড়ুন: তথ্য ফাঁস: ভুল স্বীকার করলেন জুকেরবার্গ
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, বিষয়টা জটিল কিছু নয়। বিশাল সংখ্যক মানুষের পছন্দ-অপছন্দ জেনে ফেলা যায় সোশ্যাল মিডিয়ার ডেটাবেস থেকে। যদি জানা যায়, কোনও ব্যক্তি জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে সেই বিষয়ের হরেক তথ্য (কখনও কখনও ভুয়ো বা বানানো তথ্যও) সামনে এনে তাঁকে প্রভাবিত করা যায় খুব সহজেই। অভিযোগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন জেতার জন্য এই অস্ত্রই ব্যবহার করেছিল ট্রাম্প শিবির।
আরও পড়ুন: ফেসবুক কাণ্ড: ঠিক কী হয়েছিল
ভারতে লোকসভা ভোট সামনের বছরেই। তথ্য বলছে, দেশে ভোটারের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮১ কোটি। সেখানে অ্যাক্টিভ ফেসবুক ইউজার প্রায় ২৫ কোটি। অর্থাত্ দেশের ভোটার সংখ্যার নিরিখে তা তিরিশ শতাংশেরও বেশি। ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য ভাণ্ডারের নাগাল পেয়ে গেলে ভোটে হিসেব-নিকেশ বদলে দেওয়া যায়, তা মানছে রাজনীতির সব পক্ষই। রাশিয়া যে এ ভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটের ফলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল, সে কথাও জুকেরবার্গ স্বীকার করে নিয়েছেন। যদিও তিনি দাবি করেছেন, ‘‘সেই চেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য ফেসবুক এক গুচ্ছ ব্যবস্থাও নিয়েছিল।’’
তবুও উদ্বেগ যাচ্ছে না। ভারতের তথ্য প্রযুক্তি আইন শেষবার সংশোধন করা হয়েছিল ১০ বছর আগে। বিশেযজ্ঞদের একাংশের মতে, অবিলম্বে সেই আইনকে আরও শক্তপোক্ত করতেই হবে। নইলে কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া লাক গলাতেই থাকবে ভোটের ময়দানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy