মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু খুন ও সন্ত্রাসবাদের অন্য একটি মামলায় পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-জাংভির নেতা ইশাক মালিককে দু’সপ্তাহের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠাল পাক আদালত।
গত তিন বছর ধরে পাকিস্তানের জেলে আটক ছিল ইশাক। কিন্তু পঞ্জাব প্রদেশের প্রশাসন সেই মেয়াদ বাড়ানোর জন্য নতুন করে আবেদন না করায় গত সোমবার ইশাকের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল পাক আদালত। আজই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু খুন ও সন্ত্রাসবাদের অন্য একটি মামলায় গত কাল তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় মুলতানের দায়রা আদালত। ফলে আপাতত জেলেই থাকতে হচ্ছে ইশাককে।
শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য ও ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট টিমের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে গত তিন বছর ধরে জেলে বন্দি ছিল ইশাক। ২০০৮ সালে মুম্বই হানার অন্যতম চক্রী জাকিউর রহমান লকভিকে যে আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই একই আইনে বন্দি ছিল ইশাকও। সম্প্রতি জামিন পায় লকভি। বিশ্বজুড়ে নিন্দা শুরু হয়, মুখে তীব্র বিরোধিতা করলেও পরোক্ষ ভাবে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে। মান বাঁচাতে আপাতত লকভিকে কোনওমতে জেলেই আটকে রেখেছে পাক-প্রশাসন। কিন্তু তার মধ্যেই ইশাকের মুক্তির নির্দেশ নতুন বিপত্তি তৈরি করে। সরকারি সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলার পর এখন যা পরিস্থিতি তাতে ইশাকের মুক্তি ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালত। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উপর চটে যেত শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ব্যস্ত পাক প্রশাসনের পক্ষে এমন পরিস্থিতি মোটেও কাম্য নয়। সম্ভবত সে কারণেই গত কাল মুলতানের বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট গুলাম মুজতবা বালোচের সামনে ইশাককে হাজির করানো হয়।
সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে কোনও সমঝোতাই যে করা হবে না, সে কথা ফের এ দিনও স্পষ্ট করে নওয়াজ শরিফ জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ১৭ দফা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম বিশেষ সেনা আদালত তৈরি।
সন্ত্রাসের যাবতীয় মামলার বিচার ওই আদালতেই হবে বলে জানিয়েছেন শরিফ।
পাক প্রধানমন্ত্রীর বয়ানে, “জঙ্গি-হামলা সংক্রান্ত মামলার দ্রুত শুনানির জন্যই সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের নেতৃত্বে বিশেষ আদালত তৈরি হবে।” আগামী দু’বছর আদালতগুলি কাজ করবে।
এর পাশাপাশি পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলার প্রাথমিক রিপোর্টও তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে খবর। পুলিশ ও সন্ত্রাসদমন স্কোয়াডের তৈরি ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই হামলা চালাতে অন্তত ১১ জন জঙ্গি এসেছিল। তার মধ্যে সাত জন স্কুল চত্বরে ঢোকে। বাকি চার জন বাইরে থেকেই হামলা চালাতে ওই সাত জনকে সাহায্য করেছিল। হামলায় সাত জঙ্গির মৃত্যু হলেও চার জন বেঁচে পালিয়ে যায়। নিহত সাত জঙ্গির মধ্যে ছ’জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। সকলেই হামলার দিন সকালে খাইবার প্রদেশ থেকে পেশোয়ার এসেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy