বয়স তখন বাইশ কি তেইশ। সদ্য যাজক হওয়ার প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু হয়েছে। ঠিক সেই সময়ই ঘটে গিয়েছিল ব্যাপারটা। চার চোখ এক হয়ে গিয়েছিল সবার অজান্তে। তিনিও প্রেমে পড়েছিলেন। এক বছর হতে চলল ভ্যটিকানের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। পোপ ফ্রান্সিস। এক ইতালীয় পত্রিকার কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের মুখেই তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন প্রেমে পড়ার বিষয়টি।
পোপ হিসেবে এক বছর পার হবে আগামী ১৩ মার্চ। সেই উপলক্ষে ফ্রান্সিসের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিল ইতালির এক সংবাদপত্র। খোলামেলা সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বর্ণনা করেছেন যৌবনে কী ভাবে তাঁর জীবনেও প্রেম এসেছিল।
পোপ ফ্রান্সিস জানিয়েছেন, টানা এক সপ্তাহ পছন্দের সেই মেয়েটির স্বপ্নে বিভোর ছিলেন তিনি। তার পর এক দিন হঠাৎই খেয়াল হয়, প্রেম-বিয়ে-সংসার কোনওটাই তাঁর জন্য নয়। যাজক হওয়ার জন্য নিজেকে মনে মনে তৈরি করছেন। প্রেমিকাকে মন থেকে বার করতেই হবে। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। সঙ্গে সঙ্গে ছুটলেন গির্জায়। কনফেশন রুমে গিয়ে স্বীকারোক্তিও দিলেন। যাজক হওয়ার প্রস্তুতিই যখন নিচ্ছিলেন, তখন প্রেমে পড়লেন কী করে? ফ্রান্সিসকে প্রশ্ন ছিল সাংবাদিকের। পোপের স্পষ্ট জবাব, “আমাদের দু’জনেরই তখন বয়স কম। আর আমি তো কনফেশন রুমে গিয়ে সবটাই বলেছিলাম।”
তবে এটাই প্রথম ও শেষ বার নয়। ফ্রান্সিসের জীবনে একাধিক বার নারীর আগমন হয়েছে। পোপ নিজমুখেই তা স্বীকার করেছেন। মেয়েদের মন জয় করতে নাকি তাঁর জুড়ি ছিল না। এর আগেও এক সাক্ষাৎকারে আর্জেন্তিনীয় বান্ধবীর কথা বলেছিলেন ফ্রান্সিস। জানিয়েছিলেন, সতেরো বছর বয়সে সেই মেয়েটির সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। দু’জনে মিলে সালসা ক্লাসেও যেতেন।
পোপের পদে আসীন হওয়ার পরপরই খোঁজ মিলেছিল ফ্রান্সিসের আরও এক প্রাক্তন বাল্য প্রেমিকার। আর্জেন্তিনায় ফ্রান্সিসদের বাড়ির পাশেই থাকতেন অ্যামেলিয়া ডামোন্টে। ফ্রান্সিস নয়, পোপের নাম তখন হোর্হে মারিয়া বেরগগলিও। অ্যামেলিয়া বলেছিলেন, “১২ বছর বয়সে আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল হোর্হে। কিন্তু তখন ওর আর আমার পরিবার মিলে জোর করে আমাদের আলাদা করে দিয়েছিল।”
যাজক হওয়ার প্রশিক্ষণ পর্বটাও প্রথম প্রথম খুব একটা সুখের ছিল না বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সেই সময় বন্ধুদের নিয়ে নিয়মিত বুয়েনস আইরেসের নৈশক্লাবে যেতেন তিনি। আর তার জন্য নাকি কোনও দিন গির্জায় গিয়ে স্বীকারোক্তিও দেননি তিনি।
পোপ হওয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন ফ্রান্সিস। কখনও মহিলা বন্দিদের পা ধুইয়ে দেওয়া। কখনও বা মুখ ফস্কে অশালীন শব্দ বার হওয়া। খবরের শিরোনামে ঘুরেফিরে তাঁর নাম এসেই থাকে। সাক্ষাৎকারে আরও একটি বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন পোপ। জানিয়েছেন, পূর্বসূরি ষোড়শ বেনেডিক্টকে ভ্যাটিকানের কাজকর্মের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে চান তিনি। এই ষোড়শ বেনেডিক্টের স্বঘোষিত স্বেচ্ছাবসর নিয়ে এক সময় ভ্যাটিকানে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। গির্জার জীবন থেকে সরে নির্জনে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। ফ্রান্সিসের এই ঘোষণার পরে আবার নতুন কোনও বিতর্ক হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy