সংগৃহীত চিত্র।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রিমন্ট শহরে দুর্গোৎসব মানেই এক দশক ধরে বাঙালিদের মিলনমেলা। পুজোর তো আনন্দ শেষ হয়েও হয় না শেষ! নবমী-দশমীর সেই মনকেমন করা সুর যেন বাতাসে মিশে থাকে আরও বেশ কিছু দিন। ঠিক সেই আবহেই জানা গেল ফ্রিমন্টের প্রবাসী বাঙালিরা মহা উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করলেন তাঁদের দুর্গাপুজোর দশম বর্ষপূর্তি। বছর দশেক আগে যে পুজো শুরু হয়েছিল নিতান্তই ছোট পরিসরে, তা আজ ফ্রিমন্ট হিন্দু টেম্পলে কেবল ধর্মীয় আরাধনা নয়, বরং ক্যালিফোর্নিয়ার প্রবাসী বাঙালিদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের এক মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এ বছরের পুজো আরও খানিকটা বিশেষ। কারণ, এই মঞ্চেই ঘটল এক অভাবনীয় ঘটনা— ছৌ নাচের মাধ্যমে জীবন্ত হয়ে উঠল দেবী দুর্গার মহাযুদ্ধ। প্রবাসের মাটিতে বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার যে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, এটি তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পুরুলিয়ার বিখ্যাত এই লোকনৃত্য বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির শতাব্দী প্রাচীন এক ধারা। মুখোশ, রঙের বৈচিত্র্য, দেহের বলিষ্ঠ ভঙ্গিমা ও নাট্যশৈলীর এক অনন্য মিশেল তৈরি করে এই নাচ।
এ বারের এই ছৌ নাচের প্রস্তুতি পর্বও কম আনন্দের ছিল না। পুরুলিয়ার ছৌগ্রাম থেকে সযত্নে আনা মাটির গন্ধে ভরা, শিল্পীর হাতের রঙে আঁকা মুখোশগুলো যেন প্রবাসের ক্যানভাসে এঁকে দিয়েছিল উৎসবের এক অন্য ছবি। হাসি, ঠাট্টা আর উচ্ছ্বাসে ভরে উঠেছিল কয়েকটি সন্ধ্যা। সেই প্রস্তুতিপর্বের আনন্দ-উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছে গেল চূড়ান্ত মুহূর্তে।
মহানবমীর জাদুকরী সন্ধ্যায় মঞ্চে ছৌ নাচের ছন্দে মিলল মুখোশ আর হৃদয়ের মোহনা। ঢোল-ধামসা ও সানাইয়ের তালে নৃত্যশিল্পীরা যখন দেবীর আবির্ভাব, দেবতাদের শক্তির মিলন, এবং মহিষাসুরের পরাজয়ের দৃশ্য ফুটিয়ে তুললেন, দর্শকরা যেন চোখের সামনে দেখতে পেলেন বৈদিক যুদ্ধক্ষেত্রের আবহ। মুখোশের তীক্ষ্ণ চোখ আর দেহের শক্তিশালী ছন্দে মঞ্চে ফুটে উঠল এক পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দৃশ্য। প্রবাসে, বিশেষ করে সুদূর আমেরিকায়, ছৌ নৃত্যের এমন পরিবেশনা এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা, যা দুর্গাপুজোর আচার ও ধর্মীয় তাৎপর্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভাবে মিশে গেল। ফ্রিমন্টের পুজো তাই এ বার শুধু প্রবাসী বাঙালির আনন্দ নয়, হয়ে উঠল বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতিরও এক বিজয়বার্তা।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।