সংগৃহীত চিত্র
কালীপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই চলে আসে ভাইফোঁটা। চলতি বছরের ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ভাইফোঁটার রীতি। এই দিন, দাদা রোহিত ও সর্বজিতের কপালে ফোঁটা আঁকলেন অভিনেত্রী ঐশ্বর্য সেন। প্রতি বছরের মতো এ বারও ভাইফোঁটার সকালে বাড়িতেই বসেছিল বিশেষ আয়োজন। সাজানো থালা, আরতি, প্রথাগত সব উপাচার মিটিয়ে দুই দাদাকে ভালবাসার বন্ধনে বাঁধলেন তিনি, কামনা করলেন দীর্ঘায়ু আর মঙ্গল। এই দৃশ্য যেমন চিরাচরিত, তেমনই এই বিশেষ দিনে তাঁদের খুনসুটি আর হাসি-ঠাট্টায় ধরা পড়ল এক অন্য মেজাজ।
ভাইফোঁটা পর্ব মিটতেই শুরু হয় দুই দাদা-বোনের মিষ্টি খুনসুটি। উপহার দেওয়া-নেওয়ার রীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ঐশ্বর্য রাখঢাক না রেখে বলেন, “সাধারণত আগে উপহার দেয় ওরা, তার পর আমি দিই। আগে আমি দেখি কী উপহার পাচ্ছি, যদি ঠিকঠাক উপহার পাই, সেই হিসেবে ওরা উপহার পায়।” বোনের এই শর্ত শুনে দাদা সর্বজিৎ হেসে বলে ওঠেন, “বিশ্বাসের জায়গায় প্রশ্ন চলে আসছে!” সর্বজিতের এমন কথা শুনেই এক গাল হাসি দেখা যায় ঐশ্বর্যর মুখে।
উপহারের মাপকাঠিতে বোনকে বিচার না করে দাদা রোহিত বরং অন্য একটি দিক তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, “শুধু উপহার বলে নয়, ও যে এত সুন্দর করে মিষ্টি সাজায়, তার পর আমাদের দুপুর ও রাতের খাবারের যেই আয়োজন ও করে, সেটাই আমাদের কাছে অনেক বড় উপহার।” বোনের এই আয়োজনে মুগ্ধতা জানানোর পরই ঐশ্বর্যর সহজ স্বীকারোক্তি, “প্রচেষ্টা জরুরি!”
কে বেশি দুষ্টু আর কে বেশি 'প্যাম্পার্ড'— এই প্রশ্নেও একমত দুই দাদা। তাঁদের দু’জনেরই মত, “অবশ্যই ঐশ্বর্য”। বলেন, “দুষ্টুমি করে ও, আর প্যাম্পার আমরাই করে থাকি।” তবে বোন ঐশ্বর্য ঘুরিয়ে তার জবাব দিতে ভুললেন না। বললেন, “আমি যথেষ্ট আদর-যত্নে রাখি আমার দাদাদের।”
বোন কি তবে দাদাদের মাথায় চড়ে থাকে? এই প্রশ্নের উত্তরে রোহিতের জবাব, “হ্যাঁ, সব সময়েই ওর একটা দিদিগিরি চলে বাড়িতে।” ঐশ্বর্য অবশ্য এই ‘দিদিগিরি’র অন্য ব্যাখ্যা দিলেন। তাঁর মতে, “একটু চড়ে থাকা ভাল, কারণ ছেলেদের মাথায় একটু কম বুদ্ধি থাকে। বোন হলেও মেয়েরা একটু তাড়াতাড়ি পরিণত হয়, তাই মনে হয় এটা ভাল।”
বোনের 'ছেলে বন্ধু' নিয়ে দাদারা কতটা সতর্ক, 'প্রোটেক্টিভ' আর 'পসেসিভ'? ঐশ্বর্য সোজাসুজি জানিয়ে দিলেন, “প্রচণ্ড প্রোটেক্টিভ ও পসেসিভ এরা।” রোহিত সঙ্গে সঙ্গে যোগ করেন, “সেটাতে আমরা গর্বিতও বটে।”
বোনের প্রেমে দাদাদের কোনও বন্ধুর পড়ার প্রসঙ্গে রোহিত এক মজাদার ‘কোড’-এর কথা জানান। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের একটা ব্যাপার রয়েছে যে বন্ধুর বোন— বোন, কিন্তু বোনের বন্ধু বোন নয়।” ঐশ্বর্য কিন্তু এই ‘কোড’ মানতে নারাজ। তিনি পালটা চ্যালেঞ্জ জানান, “আমার বক্তব্য যদি এ রকম কোনও ‘কোড’ থাকে, তা হলে বন্ধুর বোনও যে রকম বোন, বোনের বন্ধুও বোন! এবং ওরা যদি এই ‘কোড’টা ভাঙতে পারে, আমিও তা হলে করতে পারি।” ভাইফোঁটার দিনে এই ‘কোড’ ভাঙার তরজা আর মিষ্টি খুনসুটির আড়ালে লুকিয়ে ছিল ভাই-বোনের ভালবাসার অটুট বুনন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।