Celebrity Puja Celebration

পুজোর মধ্যেই মনের মানুষের জন্মদিন, নবমীতে শহর ছাড়বেন ঋতাভরী, তবুও কেন মন ভার নায়িকার?

ঋতাভরী অভিনীত ছবি ‘পাপা বুকা’ এই মুহূর্তে অস্কার দৌড়ে। ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এই ছবি সদ্যই মুক্তি পেল পাপুয়া নিউ গিনিতে। সেই সূত্রেই দেশ ছাড়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা আর হল কই?

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৩১
Share:

প্রতীকী চিত্র

ঋতাভরী অভিনীত ছবি ‘পাপা বুকা’ এই মুহূর্তে অস্কার দৌড়ে। ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এই ছবি সদ্যই মুক্তি পেল পাপুয়া নিউ গিনিতে। সেই সূত্রেই দেশ ছাড়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা আর হল কই?

Advertisement

পুজো প্রায় দোরগোড়ায়, তবে উৎসবের মুখেও মন ভার ঋতাভরী চক্রবর্তীর। তাঁর অভিনীত ছবি ‘পাপা বুকা’ এই মুহূর্তে অস্কার দৌড়ে। ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় তৈরি এই ছবি সদ্যই মুক্তি পেল পাপুয়া নিউ গিনিতে। সেই সূত্রেই দেশ ছাড়ার কথা ছিল তাঁর। তবে সে সবই সার! কলকাতায় বসে ভার্চুয়ালিই ছবির প্রিমিয়ার দেখতে হচ্ছে নায়িকাকে।

এক দিকে পুজো পরিক্রমা, অন্য দিকে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা এবং একই সঙ্গে নতুন সিরিজ় ‘কার্মা কোর্মা’র ডাবিং- সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে দোসর মন খারাপ। আক্ষেপের সুরেই আনন্দবাজার ডট কমকে অভিনেত্রী বলেন, “এমন সুযোগ তো বার বার আসে না। আমি ছবিটার অংশ হওয়া সত্ত্বেও সব কিছু ভিডিয়োতে দেখতে হচ্ছে। আমি কিন্তু বলেই রেখেছি যে অস্কার প্রচারে অবশ্যই উপস্থিত থাকব।”

Advertisement

তবে সব খারাপের মধ্যেও ভাল দিক হল পুজোর সময়ে কাছের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানো। ঋতাভরী বলেন, “আমার অনেক বন্ধু আছে যারা বাইরে থাকে। পুজোর সময়তেই তাদের সঙ্গে দেখা হয়। সবার সঙ্গে সময় কাটানো, জমিয়ে আড্ডা দেওয়া, বেছে বেছে জামা কেনা, এই সব খুব উপভোগ করি আমি।”

তবে জীবন কি একটু হলেও বদলেছে বলা চলে? অকপটে স্বীকার করে অভিনেত্রী বলেন, “এখন পুজো মানেই ব্যস্ততা। ছোটবেলার পুজোটা এমন ছিল না। এখন প্রথম দু’দিন ঘোরার পরই মনে হয় শরীর দিচ্ছে না আর। আসলে তখন মাথাতে কোনও দায়িত্বের বোঝা ছিল না। বড় হয়ে বুঝেছি দায়িত্বও কিন্তু স্বাধীনতা কেড়ে নেয়।” অভিনেত্রীর কথায়, “ছোটবেলায় স্বাধীন ছিলাম। শুধু নিজের ক’টা জামা হল, কবে কোনটা পরব, এই সবই ভাবতাম। এখন কম করে হোক আমার অধীনে ১২ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের সকলের কথাও ভাবতে হয়। পুজোর বোনাস, উপহার দেওয়া- এই সব কিছু তো আগে ছিল না। যদিও এগুলি মন থেকে উপভোগ করি।” মজা করেই তিনি যোগ করেন, “আগে যা খেতাম, তা হজম হয়ে যেত। এখন আস্তে আস্তে সেই ক্ষমতাটাও হারিয়েছি। এখন এগ চাউমিন খাওয়ার পর সামান্য জল খাওয়ার জন্যেও তিন ঘণ্টার বিরতি নিতে হয়।”

তবে শুধুই কি শৈশব হারানোর আফসোস? ঋতাভরী বলেন, “কিছু ভাল দিকও রয়েছে। এত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারছি। ছোট ছোট বাচ্চাদের নতুন জামা কাপড় কিনে দিলে খুব আনন্দ পায় ওরা। এই সব দেখলেই মন ভরে যায়। মাকে স্বচ্ছন্দে বলতে পারি ‘পুজোয় কী চাও? শাড়ি না গয়না?’ এটাই তো গর্ব।”

ব্যস্ততার ফাঁকেও কতদূর এগোল অভিনেত্রীর পুজোর প্রস্তুতি? তিনি বলেন, “প্রায় সকলের জন্যেই অনলাইনে কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছি। ব্যতিক্রমী কেবল মা। আমার মায়ের আবার সহজে মনে ধরে না কিছু। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, আর অনলাইনের ঝক্কি নয়, একটু ফাঁকা হই, তোমাকে সশরীরেই নিয়ে যাব কেনাকাটা করতে।” তবে এই সব ক্ষেত্রে একে বারেই ঝুঁকি নেন না নায়িকার হবু জীবনসঙ্গী সুমিত অরোরা। ঋতাভরী বলেন, “ও সোজাসাপটা আমাকেই জিজ্ঞেস করে নেয় আমি কী চাই। নিজে পছন্দ করে কেনার সাহস করে না। শেষ তিন বছর ধরে ওর থেকে মাসাবা গুপ্তর শাড়ি নিয়ে আসছি। এ বছরেও তার অন্যথা হয়নি। মা আমাকে শাড়ি ও গয়না দুটিই দিয়েছে।”

পুজোয় কি কলকাতায় আসবেন ঋতাভরীর মনের মানুষটি? নায়িকা বলেন, “ও আমার থেকেও বেশি ভালবাসে কলকাতার পুজো দেখতে। এ বারে পঞ্চমীতেই চলে আসবে সম্ভবত। এক দিন পরিবারের সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া সারি। আমার জামাইবাবুর বাড়িতে পুজো হয়। সেখানেও চলবে পেটপুজো।” শীঘ্রই মুক্তি পাবে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’-এর নতুন সিজ়ন। অভিনেত্রীর কথায়, সেই নিয়েই খানিক ব্যস্ততাতে কাটছে হবু স্বামীর বছরটা। নবমীতে তাঁর জন্মদিন। নায়িকা বলেন, “ও একটু দূরে কোথাও জন্মদিনটা কাটাতে চায়। ওর কথা মতোই হবে। নবমীতে কোথাও একটা চলে যাব।”

তবে শুধু নিরিবিলি জায়গাতেই শান্তি নয়, ঋতাভরী চান, দেবী দুর্গা একটু মানুষের মনেও শান্তি এনে দিক। তিনি বলেন, “সমাজমাধ্যমে অধিকাংশ মানুষই দেখি খুব রেগে আছেন। এত ঘৃণা কেন? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অমর্ত সেন, কেউই বাদ যান না কটাক্ষ থেকে। আমি বুঝতে পারি এই রাগের নেপথ্যেও কারণ রয়েছে যথেষ্ট। নিজের জীবন ঘেঁটে থাকলে অন্যের সাজানো-গোছানো জীবন দেখে রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমার মনে হয় মা দুর্গা যদি একটু আমাদের জীবনে সুখ ও শান্তি এনে দেন, তা হলে মানুষ অনেকটা শান্ত হবে। বুঝতে শিখবে যে আমরা কেবলই একটি নিন্দুক, সিংসুটে ও রাগী জাতি নই।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement