প্রতীকী চিত্র
‘দুই শালিক’ ধারাবাহিকে নজর কেড়েছেন বিপুল ভাবে। বর্তমানে তিনি ‘কনে দেখা আলো’র ‘বনলতা’। সদ্য শুরু হওয়া ধারাবাহিক নিয়ে বেজায় ব্যস্ত। তবু তারই ফাঁকে আড্ডার ঝুলি খুলল। পুজোর পরিকল্পনা কত দূর, সেটাই আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন নন্দিনী দত্ত।
অভিনেত্রী কথায় কথায় জানালেন, তাঁর এ বার বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নানা কারণে হয়ে উঠছে না। তা হলে তাঁর পুজোর পরিকল্পনা কী? নায়িকা বললেন, “এ বছর ভেবেছিলাম কলকাতার বাইরে যাব পুজোর সময়। কিন্তু হল না, নানা বিষয় রয়েছে। এ বছরটা একটু চাপের, নানা রকমের চমক পেয়েছি আমরা। বছরটা তেমন সুবিধাজনকও নয়। তাই আর ঝুঁকি নিইনি। কলকাতাতেই থাকব।”
কলকাতাতেই থাকবেন যখন, তখন নিশ্চয়ই বিস্তর ঠাকুর দেখা হবে? আর আড্ডাও? ছোট পর্দার ‘বনলতা’ জানালেন, আড্ডা হলেও ঠাকুর দেখা হবে না। কিন্তু কেন? কারণ ব্যাখ্যা করে নন্দিনী বলেন, “ঠাকুর দেখতে যাওয়া হয়তো অত হবে না। আসলে আমি প্যান্ডেল হপিং করতে পারি না। ছোটবেলা থেকেই আমার ঠাকুর দেখার অভ্যাস নেই তেমন। আগে গাড়ি নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোলে সবাই নেমে যেত, আমি গাড়িতেই বসে থাকতাম। তবে বেরোব তো বটেই। আড্ডা দেওয়া হবে। বন্ধুদের সঙ্গে অত দেখা হয় না এখন। তাই আড্ডা, বাড়ি বসে পার্টি এ সব তো হবেই। একটু এ দিক ও দিক যাব, খাওয়াদাওয়াও হবে।”
তবে পুজোর আগে পুরোদমে কাজের ব্যস্ততা থাকবে বলেই জানালেন নন্দিনী। পঞ্চমী বা ষষ্ঠী অবধি শ্যুটিং থাকবে তাঁদের। তবে সদ্য শুরু হওয়া ধারাবাহিকের ব্যাঙ্কিংয়ের চাপ নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন অভিনেত্রী। বললেন, “আমার অতটাও চাপ মনে হচ্ছে না। কোনও দিনই কাজ নিয়ে অত টেনশন হয়নি। এর আগে আমি অনেক বেশি চাপ দেখেছি। এখন সেই তুলনায় অনেক কম।”
ভরপুর শ্যুটিং চলছে, তার মধ্যেও কেনাকাটা কিছু হয়েছে কি না জানতে চাইলে একগাল হেসে নন্দিনী বলেন, “কেনাকাটা হয়েছে মোটামুটি। পেয়েছি কিছু। মা কিনেছে। আমি নিজে এখনও কিছু কিনিনি। এক দিন গিয়ে পাঁচ মিনিটে কিনে নেব।”
বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততা, কাজের চাপ সবই বাড়ে। কিন্তু ছোটবেলার পুজোর যেন এক আলাদা মিষ্টি সুবাস ছিল। এই সময়ে দাঁড়িয়ে পিছু ফিরে তাকালে সেই সময়ের কোন স্মৃতি মনে পড়ে নন্দিনীর? তাঁর জবাব, “ছোটবেলার পুজো বললে মায়ের কথাই মনে পড়ে। মা এত কড়া ছিল ওই সময়ে যে পাড়ার প্যান্ডেলে গিয়ে বসে থাকলেও মা চলে আসত! ‘মেয়ে কোথায়, মেয়ে কোথায়’ করে ঠিক হাজির। প্যান্ডেলে যেতে পারব– ছোটবেলায় সেই অনুমতিটুকু পাওয়াটাই অনেক বড় ব্যাপার ছিল।"
প্যান্ডেলে হপিং অত পছন্দ না করলেও পাড়ার প্যান্ডেলে কেন যেতে চাইতেন ছোটবেলায়, এ দিন তা নিজেই ফাঁস করলেন নায়িকা। বললেন, “প্যান্ডেলে সেই সময়ে মানে ছোটবেলায় যাকে হালকা ভাল লাগত, সে থাকত বা প্যান্ডেলের আশেপাশে ঘুরত। কথা হতো না, দেখতাম খালি। পুজোর মরসুম মানেই তো প্রেমের মরসুম।” ঠিকই তো, এই কথা অস্বীকার করে কোন বাঙালি?
সপরিবারে দেবীর আগমন ঘটল বলে! মাতৃশক্তির কাছে এ বার কী প্রার্থনা থাকবে নন্দিনীর? “আমার ভালবাসার মানুষদের খুব ভালবাসি। সে মা বলুন, বাবা বলুন, বা বন্ধুরা– সবাইকে যেন দেবী ভাল রাখেন, সুস্থ রাখেন। আর একটাই কথা বলব, সবার দিন আসে। তাই আমায় যেন তিনি পরিশ্রম করার সুযোগ দেন। আমি গুণ বা স্মার্ট ওয়ার্ক করে এগোতে চাই না। পরিশ্রম করে এগোতে চাই। সেই সুযোগ যেন পাই,” সহজ জবাব তাঁর। কেবল চাওয়া নয়, নন্দিনী জানালেন দেবী দুর্গার কাছে তিনি কৃতজ্ঞ। কেন? তাঁর কথায়, “এখন যেখানে পৃথিবীতে এত কিছু ঘটছে, জীবন এত বেশি অনিশ্চয়তায় ভরে গিয়েছে, নানা জায়গায় যুদ্ধ, পহেলগাঁওয়ের ঘটনা– সব কিছুর মধ্যে আমি এবং আমার পরিবার যে সুস্থ আছি, তার জন্য দেবীকে অনেক ধন্যবাদ জানাব।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।