Shruti Das's Puja Plan

সম্প্রচার শুরু নতুন ধারাবাহিকের, তাও পুজোতে এ বার হালকা বিষাদের সুর শ্রুতির জীবনে! কেন?

বহু দিন পর ছোট পর্দায় ফিরলেন শ্রুতি দাস। এ বছর কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই পুজোর কী পরিকল্পনা তাঁর?

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৩১
Share:

সংগৃহিত চিত্র

বহু দিন পর ফের ছোট পর্দায় ফিরলেন ‘রাঙা বউ’। তবে এ বার নতুন নাম এবং রূপে। সদ্যই জ়ি বাংলার পর্দায় শুরু হয়েছে তাঁর নতুন ধারাবাহিক ‘জোয়ার ভাঁটা’। ঠিক পুজোর মুখেই শুরু হয়েছে এই ধারাবাহিক। ফলে ব্যস্ততা তুঙ্গে। তার ফাঁকে কতটা কী পুজোর পরিকল্পনা হল শ্রুতির?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কমকে ‘আমার বস’-খ্যাত নায়িকা জানালেন এ বছর পুজোর আনন্দ কিছুটা হলেও ফিকে তাঁর কাছে। সম্প্রতি এক প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তিনি। কথায় কথায় শ্রুতি বলেন, “হ্যাঁ, এ বছর পুজোর আগে সত্যিই একটা ভাল সময় কাটাচ্ছি। এত দিন পর ছোট পর্দায় ফিরলাম। খুব খুশি। সবটা মিলিয়ে পুজোর পরিকল্পনা বলতে আমাদের তো বাড়িতেই পুজো হয়। দশ বছর পেরিয়ে গেছে। সবই ঠিক আছে, কিন্তু আমার জেঠু সম্প্রতি চলে গেলেন, এই জুন মাসে। তাই এই বছরটা একটু অন্য রকম। সেই অর্থে মন ভাল নেই, কেনাকাটা কিচ্ছু করিনি।” তবে, অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি কেনাকাটা না করলেও, “অনেকে উপহার পাঠান, সেগুলিই রয়েছে। এ বছর ইচ্ছেও করছে না সত্যি বলতে।”

কর্ম জীবনে দেখতে দেখতে ৬ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন। অল্প সময়েই খ্যাতি পেয়েছেন। তাঁর করা চরিত্রগুলির হাত ধরে তিনি বাঙালির ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছেন। কিন্তু আজও পিছু ফিরে তাকালে ছোটবেলার কোন রঙিন স্মৃতি মনে পড়ে পুজোর? শ্রুতির জবাব, “ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি বলতে, আমার মামাবাড়ি যেহেতু কলকাতায়, সেহেতু ছোট থেকে এখানেই আমার দুর্গাপুজো কেটেছে। তবে, হ্যাঁ, দশমী আমি বাড়িতে, মানে কাটোয়ায় থাকতাম সবসময়। কারণ আমাদের পাড়া, মানে কাটোয়ায় আমাদের যে পাড়া সেখানকার মাকে বরণ না করলে আমার মায়ের পুজো সম্পূর্ণ হত না। তাই প্রতি বছর ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত কলকাতায় সারা রাত হইহুল্লোড় করে ঠাকুর দেখে, দশমীর দিন সকালের মধ্যে কাটোয়ায় চলে যেতাম।” বিরতি নিয়ে অভিনেত্রীর আরও সংযোজন, “দুর্গাপুজোর সঙ্গে যেহেতু ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে, তাই পুরোটাই খুব বিশেষ। আলাদা করে অমন কিছু নেই। তবে একটা খুব বিশেষ মুহূর্ত আছে আমার জীবনে যা দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িত। সালটা আমার মনে নেই, তবে খুব সম্ভবত সেই বছর ‘দুর্গা’ বলে একটি ধারাবাহিক যেটা খুবই জনপ্রিয় ছিল, তার শিল্পীরা ম্যাডক্স স্কোয়ারে এসেছিলেন। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে বাসে করে ঠাকুর দেখতে বেড়িয়েছিলাম। আমি দারুণ উচ্ছ্বসিত ছিলাম যে ওখানে শিল্পীরা এসেছেন। আর যে দু’জন শিল্পী এসেছিলেন তাঁরা হলেন, সন্দীপ্তা সেন এবং স্বাগতা মুখোপাধ্যায়। এখন দু’জনই খুবই কাছের, কিন্তু সেই সময় বাস থেকে নেমে অনেক দূর হেঁটে গিয়েছিলাম ওঁদের দেখব বলে। পাগল হয়ে গিয়েছিলাম দেখে যে বাপরে! ছোট পর্দার শিল্পী, কী সুন্দর দেখতে! কী গ্ল্যামারাস, কত ভিড় হয়েছে ওঁদের দেখার জন্য। কখনও ভাবিনি যে এই জগতেই আসব, এখন পুজোর অনেক অনুষ্ঠানে গিয়েছি, আমাদের ধারাবাহিক যখন চলত আমাদেরকেও দেখার জন্য কত মানুষ আসতেন। এটা না একটা খুব আবেগের জায়গা আমার কাছে, যে একটা সময় আমি একজনকে দেখার জন্য পাগলের মতো করেছি, আর আজ আমি যতটুকু যা করেছি, খুবই ছোট জীবন আমার কাজের, সবে তো ৬ বছর হল, অনেক বাকি এখনও, তবুও, এই অভিজ্ঞতাটা আমার হয়েছে। খুবই বিশেষ স্মৃতি এটা আমার।”

Advertisement

ছোটবেলায় অঞ্জলির ফাঁকে কি কখনও চোখাচোখি, ফুল ছোঁড়া হয়েছে? বা কথা অনুযায়ী ‘ষষ্ঠীতে শুরু দশমীতে শেষ’ এমন পুজোর প্রেম? পর্দার ‘রাঙা বউ’ বলেন, “যখন ছোট ছিলাম তখন দুই-একজন ক্রাশ ছিলেন আমার। অঞ্জলির ফাঁকে এরম অনেককেই দেখেছি। কিন্তু পরে জানতে পেরেছি হয় বউ আছে, নইলে অনেক বড়। এরম অনেক কিছুই হয়েছে, আসলে পাকা ছিলাম বরাবরই। কিন্তু, এখন পুজো মানেই বেশি অনুভূতি কাজ করে। প্রেমটা তো বড্ড বেড়ে গিয়েছে এখন। মানে পুজোর সময়টা তো এখন শ্বশুর বাড়িতে, নিজের বাড়িতে একসঙ্গে বরের সঙ্গে, পরিবারের সঙ্গে থাকা। সবটাই আছে, এখন শুধু একটু বড় হয়ে গিয়েছি।” কিন্তু পুজোর প্রেমে ঠিক বিশ্বাসী নন তিনি। সেই প্রসঙ্গে বলেন, “আমি একদমই ওই ‘পার্ট টাইম’ ভালবাসায় বিশ্বাস করি না। থেকে যাওয়া বাদ দিয়ে আমার জীবনে কোনও মানুষের অস্তিত্ব নেই। যারা থেকে যেতে পারে না, তাদের সঙ্গে আমি বেশি দিন থাকতে পারি না।”

ইতিমধ্যেই খাতায় কলমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন শ্রুতি। ২০২৩ সালে দীর্ঘ দিনের প্রেমিক তথা পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে আইনি বিবাহ সারেন অভিনেত্রী। এ বার পুজোয় তিনি কি সিঁদুর খেলবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাড়িতেই যেহেতু পুজো হয়, বাড়ির লোকের সঙ্গেই সিঁদুর খেলব। ঠাকুর ভাসানের সময় একসঙ্গে যাব, গাড়িতে মাকে জড়িয়ে থাকি। খুব মজা হয় যেমন, কষ্টও হয় ভীষণ, কারণ বাড়ির মা তো, ভীষণ জীবন্ত। মা মাত্রেই জীবন্ত, সেটা নয়। মা চলে গেলে বাড়িটা খুব ফাঁকা হয়ে যায়। বাড়ির যে হলে পুজো হয় সেখানটা ভীষণ ফাঁকা লাগে। আমরা তো নতুন বাড়িতে শিফ্‌ট করেছি, আর তারপর এটা দ্বিতীয় দুর্গাপুজো। আগের বছর খুব খাঁ খাঁ করছিল। মা ছিলেন সপরিবারে, যখন চলে যান আর খালি প্রদীপটা জ্বলে খুব কষ্ট হয়। মনে হয় কবে লক্ষ্মী পুজো আসবে? আবার এক বছরের একটা অপেক্ষা।”

পর্দায় একাধিকবার মহালয়ায় দেবী রূপে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বাড়িতেও প্রতি বছর সাড়ম্বরে আরাধনা করেন তাঁর। দেবীর কাছে এ বার কী প্রার্থনা থাকবে শ্রুতির? অভিনেত্রী জানালেন, “ঈশ্বর আমায় যে জীবনটা দিয়েছেন, আমি ভাবিনি জীবনটা এমন কাটাব, তাই আমি এখন আমার গোটা জীবনটাই ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করে দিয়েছি। আমার জীবনে কোনও কিছুই পরিকল্পনা করে হয়নি। যেহেতু পুরোটাই ওঁর হাতেই ছাড়া, সেহেতু আমার যতটা প্রাপ্য ততটুকু পাব, তার বেশি যতটা পাব আমি যেন নিষ্ঠা সহকারে করতে পারি, মানুষের মন জয় করতে পারি। পরিবারকে ভাল রাখতে পারি। আমি নিজে যেন সুস্থ থাকতে পারি, পরিবারের সবাই যেন সুস্থ থাকেন। আশেপাশের মানুষরা ভাল থাকুন, আর আমি যেন কাজের স্বীকৃতি পাই এটুকুই চাই।”

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement