প্যান্ডেলে ঢাক বাজাচ্ছেন প্রীতম।—ফাইল চিত্র।
ছোটবেলায় থাকতে আমার পুজো মহালয়া থেকে আরম্ভ হয়ে যেত। সে দিন থেকে পুজোর ছুটি পড়ত। সে সময় স্কুল থেকে ফেরার পথে বাঁশ বাঁধা, প্যান্ডেল বাঁধা কতদূর এগলো দেখতে দেখতেই পুজো এসে যেত। পুজোর আগে নতুন জামা-কাপড়, সে সব পরে পাড়ার প্যান্ডেলে আনন্দ করব, সেই প্ল্যান থাকত।
আত্মীয়-স্বজন সকলেই নতুন জামা-কাপড় পাঠাতেন। বাবা-মা তো দিতেনই। যেহেতু আমাদের পাড়ায় খুব বড় করে পুজো হত প্রচুর স্টল বসত পুজোর দিনগুলোতে। ধুমধাম লেগে থাকত সরাক্ষণ। ঝালমুড়ি, ফুচকা, শোনপাপড়ির স্টল বসত। আমি শোনপাপড়ি খেতে খুব ভালবাসতাম। একটা টিনের বাক্সে শোনপাপড়ি নিয়ে বসতেন এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক। আমি যে দিনে কত শোনপাপড়ি খেতাম...! এ ছাড়া প্রচুর লোক আসত বাইরে থেকে। এ ভাবে পুজোর চারদিন কেটে যেত।
কলকাতার পুজোতে যাওয়া হয়নি প্রায় বছর পনেরো। মাঝে একবার একদিনের জন্য কলকাতায় গেছিলাম ঢাকি প্রতিযোগিতায় বিচারক হয়ে। প্রায় ২৫ বছর আমি কলকাতার বাইরে, তার মধ্যে একবারই গিয়েছিলাম কলকাতার পুজোয়। এখন মুম্বইয়ের পুজোই আমার পুজো। আমি যেখানে থাকি সেই বাঙ্গুরনগরে কালীমন্দিরে পুজো হয় এবং মুখোপাধ্যায়দের পুজো—এই দুটো পুজোর মধ্যে ঘুরে সময় কেটে যায় আমার। আর হ্যাঁ, পুজোর ভোগ আমি খাবই।
আরও পড়ুন: পুজোয় কলকাতা ছাড়বেন সোহিনী, কেন জানেন?
আরও পড়ুন: মেয়ের এটা প্রথম পুজো, আমার কাছে খুবই স্পেশ্যাল
এই বছর অষ্টমীতে মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজোয় আমার অনুষ্ঠান আছে। সেখানেই ভোগ খাবো। ওখানে আমাদের বন্ধু-বান্ধব আছে, তাঁদের সঙ্গেই এদিক-ওদিক ঘুরবো। রাত জেগে ঠাকুর দেখব পোয়াই, ভাসি এ সব জায়গার। কলকাতায় সারারাত ঠাকুর দেখে ভোরে শেষ করতাম দক্ষিণেশ্বরে। গাড়ি নিয়ে বেরোতাম আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে। মুম্বইয়ের পুজোতেও তাই করি।
একদিনের জন্য কলকাতা গিয়ে পুজো দেখার কোনও মানে নেই। গেলে পাঁচদিনের জন্য যাব। এখন আমি শুনেছি কলকাতার পুজো অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। কলকাতায় গেলে আমার পুরনো পাড়া এন্টালি পোস্ট অফিসের সামনে গোপ লেনের পুজোয় থাকার ইচ্ছে আছে। আমাদের সময় একটাই পুজো হতো গোপ লেনের। খুব মনে পড়ে সে সব কথা...।