Delhi

এ বার পুজোয় মুম্বই ছাড়ছি, কেন জানেন?

দিল্লির পুজো যে ভাবে কাটিয়েছি মুম্বইয়ের পুজোয় সেটা হয় না। কারণ...

Advertisement

শান্তনু মৈত্র

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮ ১০:০১
Share:

পুজো আমাকে শিখিয়েছে, আমি এত ভাল সুর তৈরি করতে পারি। আমি ১৪ বছর দিল্লি ছেড়েছি। চিত্তরঞ্জন পার্কের পুজোয় যে প্রাণবন্ত ব্যাপার ছিল সেটা মুম্বইয়ের পুজোতে পাইনি। ওখানে (চিত্তরঞ্জন পার্ক) একটা ক্লাব ছিল, ৪০-৪৫ জন সদস্য। সেই ক্লাবের পুজোয় আমরা সব করতাম। প্যান্ডেল বাঁধা থেকে ঠাকুর আনা, ভোগ বিতরণ— সব আমরাই করতাম। এরপর মুম্বই চলে আসার পর শুধু দর্শক হয়ে থাকাটা নিতে পারি না। তাই ঠাকুর দেখতে যেতে চাই না।

Advertisement

কলকাতার পুজো সে ভাবে দেখা হয়নি। কারণ, ওখানকার বন্ধুবান্ধব ছুটিতে দিল্লি চলে আসত। ফলে আড্ডাটা চিত্তরঞ্জন পার্কেই বসত। এ ছাড়া আমি যখন চিত্তরঞ্জন পার্কে পুজো কাটাই তখন কলকাতার নামজাদা শিল্পীরা— মান্না দে, হেমন্ত কুমার দিল্লিতে অনুষ্ঠান করতে আসতেন। ওঁদের মতো শিল্পীদের অনুষ্ঠান সামনে থেকে দেখার পর আর কোথাও যেতে ইচ্ছা করত না।

দিল্লির পুজোয় কালচারাল অনুষ্ঠান খুব জোরদার হত। যেটা আবার সে সময় কলকাতায় ছিল না। ফলে কলকাতার শিল্পীরা ওখান থেকে বেরিয়ে দেশের নানা জায়গায় অনুষ্ঠান করতেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্ত্রী পিয়াকে নিয়ে পুজোয় কলকাতা ছাড়ছেন অনুপম

তবে আমি শুনেছি, কলকাতার পুজোয় লাইটিং, প্যান্ডেল এ সবের একটা জনপ্রিয়তা আছে। তাই সে সব দেখতে এক বার কলকাতায় যাওয়ার ইচ্ছা আছে। পুজোয় প্রেম বলতে আমার তেমন কিছু ছিল না। কারণ আমাদের বয়েজ ক্লাব ছিল। ৪০-৪৫ জন ছেলে একসঙ্গে থাকতাম। নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। একটা পুজো নামানো, হইহই ব্যাপার— তাতেই সময় কেটে যেতো।

তা ছাড়া সে সময় মোবাইলের চল ছিল না। তাই একটু লাজুক ব্যাপার ছিল। কাউকে গিয়ে বলা আমি তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই— এই ব্যাপারটা হত না। আসলে একটা পুজো নামানোর অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে কাজ ম্যানেজ করতে। এই যে আমি সুরকারদের সঙ্গে কাজ করি, সেই অভিজ্ঞতা পুজো থেকে সঞ্চয় করা। পুজো আয়োজন আমাকে পেশাদার জীবনে অনেক সাহায্য করেছে।

আরও পড়ুন: পুজো এলেই কেমন যেন মনের মধ্যেটা গুড়গুড় করে

উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার দক্ষতাও আমাকে পুজো শিখিয়েছে। এই পুজো আমাকে সুরকার বানিয়েছে। সে সময় ভোরে উঠে চা খেতে খেতে মহালয়া শোনা। স্বরচিত গানে সুর বাঁধা। এ সব পুজোর ছ’দিনে খুব হত। তুমি ভাল তবলা বাজাও, গান গাও সেটা আগে থেকে বোঝা যায়। কিন্তু ভালো সুরকার হবে— সেটা প্রেডিক্ট করা মুশকিল। আমার এক বন্ধু ছিল ভাল ফুটবল খেলতো সঙ্গে ভাল গান গাইতো। তাঁকে নিয়ে বসা। একটা সুর তৈরি করা। সেটা প্যান্ডেলের অন্যদের শোনানো। কেউ বলতো ভাল, কেউ খারাপ। এ ভাবে শেখা। আমাদের সময় শ্যামল মিত্র, মান্না দে-র পুজোর গান বেশ মনে ধরত। এখন তো সিডি বানানো ব্যাপারটাই উঠে গিয়েছে।

বিষয়টা হল, দিল্লির পুজো যে ভাবে কাটিয়েছি মুম্বইয়ের পুজোয় সেটা হয় না। কারণ ওই যে বললাম, শ্রোতা বা শুধু দর্শক হয়ে পুজোর সময় থাকতে পারি না। তাই এখন পুজোয় আমি বেরিয়ে পড়ি। কখনও পাহাড়, কখনও জঙ্গল। এ বার যেমন গোয়াকে বেছেছি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন