প্রতীকী চিত্র
মার্চ মাসে দ্বিতীয় বার মা হয়েছেন ‘নিম ফুলের মধু’-খ্যাত অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্ত। তাঁর ছেলের এটিই প্রথম পুজো। দুই সন্তানকে নিয়ে এ বার কী কী পরিকল্পনা রয়েছে পর্দার ‘মৌমিতা’র? ব্যস্ততার ফাঁকে সেই কথাই আনন্দবাজারের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী।
মানসী সেনগুপ্ত সাধারণত পুজোর সময় বেড়াতে যান। কিন্তু তাঁর ছেলের বয়স তো মাত্র ৬ মাস। একরত্তিকে নিয়ে নিশ্চয় পুজোয় বেড়াতে যাবেন না, তা হলে কী পরিকল্পনা জানতে চাইলে অভিনেত্রী জানান ছেলেকে নিয়েই তাঁরা পুজোয় বেড়াতে যাচ্ছেন, কারণ “বেড়াতে যাওয়া মিস করা যাবে না”। মানসী বলেন, “ওই সময়টা আমরা একটা বড় ছুটি পাই, আমার বোন-ও যেহেতু সিরিয়াল করে, ও-ও সেই সময় ছুটি পায়। আমার আরও দুই বোন রয়েছে। তাই কোনও বছরই পুজোয় আমরা এখানে থাকি না। এ বছরও আমরা থাকব না আর কী! ঘুরতে যাব। এ বার সমস্যাটা হচ্ছে যে আমার খুদেটা তো খুবই ছোট, বিমানে করে অনেক জায়গাই যেতে পারবে না। ওটাই প্ল্যানিং চলছিল। তাই অবশেষে ট্রেনেই টিকিট কাটলাম। কিন্তু ঘোরা মিস করা চলবে না।” তবে, এ বার পুজোর কিছু দিন কলকাতাতেই থাকছেন অভিনেত্রী, সেই কথা জানিয়ে বললেন, “অনেক কাজের চাপ আছে এ বার। তাই অন্যান্য বার যেমন ষষ্ঠীতে বেরিয়ে যাই, এ বার নবমীতে বেরোচ্ছি।” যদিও গন্তব্য কোথায় সেটা উহ্যই রেখেছেন তিনি।
নবমীতে বেড়াতে যাওয়া মানে পুজো প্রায় শেষ, বাকি পুজো মানসীর কলকাতাতেই কাটবে। তা হলে কি জমিয়ে প্যান্ডেল হপিং চলবে? মানসী বলেন, “প্যান্ডেল হপিংটা না ছোট থেকেই হয় না। ষষ্ঠী, সপ্তমী অবধি এমনই উদ্বোধন থাকবে। তার পরে এ বার ঠিক করেছি যে কোনও মণ্ডপে বসে আড্ডা দেব। তবে কোন মণ্ডপ বা কী সেটা ঠিক করিনি। তা ছাড়া আমি প্রতি দিন কাজে বেরিয়ে যাই, আমার বোনেরা আমার সন্তানদের দেখে রাখে। ওদের অভিযোগ যে, ওদের জীবন আমার সন্তানদের নিয়েই কেটে যাচ্ছে, তাই আমি বলেছি পুজোর কটা দিন তোরা প্রেম কর, আমি ওদের সামলাব।”
প্যান্ডেল হপিং হোক বা প্যান্ডেলে বসে আড্ডা, যাই হোক, কলকাতায় পুজোর সময় বেরোলে নতুন জামা তো চাই চাই-ই! তার জন্য পুজো বললেই যেটা মনে পড়ে, কেনাকাটা, সেটা কি হয়েছে মানসীর? প্রশ্ন শুনেই অভিনেত্রী বলেন, “না, না। ১৪ তারিখ আমার ছেলের অন্নপ্রাশন। সেটার কেনাকাটা পুরো বিয়ের মতো করে হচ্ছে। আমার ছেলের বিয়ে আর কী! ওর মাসিরা যা সাজছে, শাড়ির পর শাড়ি নিচ্ছে, সেগুলি পরছে…। এখনও আমরা ওটা থেকেই বেরোতে পারিনি যে সে দিন আমরা কে কী সাজব। ওটা গেলে পুজো নিয়ে ভাবতে পারব। অন্নপ্রাশন নয়, আমার ছেলের বিয়ের প্রস্তুতি চলছে।” বলেই হাসতে থাকেন তিনি।
এ বার দুই সন্তানকে নিয়ে অঞ্জলি দেবেন। মণ্ডপে যাবেন। দেবীর কাছে কী প্রার্থনা থাকবে মানসীর? অভিনেত্রী বলেন, “দেবী বলুন বা ইতিবাচক শক্তি, তাঁর কাছে একটাই প্রার্থনা থাকবে যে আমার সন্তানরা যেন সুস্থ থাকে। শুধু আমার সন্তান নয়, সব মায়ের সন্তান যেন সুস্থ থাকে, ভাল থাকে। দুই সন্তানের মা হয়ে এখন বুঝি সন্তানের থেকে বড় আর কিছু নেই।''
পুজো নিয়ে কথা হবে আর পুজোর প্রেমের প্রসঙ্গ উঠবে না তাই কখনও হয়! তবে অভিনেত্রী জানান তিনি ‘প্রেমিকা মানুষ’ হলেও, পুজোর প্রেম তাঁর হয়নি। কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমি না খুবই প্রেমিকা মানুষ। আমি এখনও প্রতি দিন প্রেমে থাকি। এখন একই মানুষের সঙ্গেই প্রতি দিন প্রেমে পড়ি, সেটা আলাদা। ৮ বছরের পুরনো মানুষটার উপর আমি এখনও একই ভাবে প্রেমে পড়ি। ওই রকমই শিহরণ লাগে যখন মণ্ডপে যাই, দেখি। কিন্তু এখন এটা মেনে নিতেই হবে যে একটু তো চেনা-পরিচিতি বেড়েছে, তাই আগে মণ্ডপে যে ভাবে পুজো উপভোগ করতে পারতাম, এখন সেটা পারি না। ওই জন্য এখন আর হয় না। আর আগের কথা বললে, পুজোতে আমার বাবা-মা প্রেমে পড়তে দেয়নি। কারণ প্রতিটি জায়গায় নিয়ে যেত, দু’টো ঠাকুর দেখিয়ে বাড়ি নিয়ে আসত। তাই পুজোতে প্রেম হয়নি।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।