এই পুজোয় আড্ডার সেরা ঠিকানা লেভেল সেভেন।— নিজস্ব চিত্র।
কী করতে চাইছেন পুজোর ক’দিন? পছন্দের মানুষের হাতে হাত রেখে খানিক অবসর? নাচের তালে বন্ধুদের আসর মাতিয়ে তোলা? নাকি দেদার পার্টি আর নিশিযাপনে একটু সাহসী জীবনকে ছুঁয়ে দেখা— কোনটা?
সব কিছুই যদি মেলে এক ছাদের তলায়, তা হলে ক্ষতি কী! আপনার এমন পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করে তোলার আয়োজন করেছে ‘লেভেল সেভেন’! তপসিয়া অঞ্চলে এই রুফ টপ রেস্তঁরার একটাই নীতি, ‘রেগুলার ফুড উইথ আ ডিফারেন্ট টুইস্ট।’ আর এই টুইস্টকে কেন্দ্র করেই ভোজন রসিকদের মনে দাগ কেটেছে লেভেল সেভেন।
তা কেমন সেই পদ্ধতি?
সব রকম মেজাজ, সব রকম কাবাব স-অ-ব থাকবে এক ছাদের তলায়— এই ভাবনা থেকেই এই রেস্তঁরার পথ চলা শুরু বলে জানালেন ‘লেভেল সেভেন’-এর কর্ণধার সিদ্ধার্থ বান্টিয়া।
তা কেমন সেই পদ্ধতি?
যেমন ধরুন, মাশরুম আপনার ভারী পছন্দের। তা হলে ‘লেভেল সেভেন’-এ পাবেন কলকাতার একমাত্র মাশরুম বল। কুচনো মাশরুমকে নানা মশলা, ক্রিম ও চিজ সহযোগে রান্না করে বলের আকার দিয়ে তাকে জার্মান ব্রেডক্রাম্বে মিশিয়ে ছাঁকা তেলে ভেজে ফেলা। সহজ এই পদকে অসাধারণ মুনশিয়ানায় আপনার প্লেটে হাজির করবেন এখানকার প্রধান শেফ দেবাশিস বৈদ্য। তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত এই খাবার ইতিমধ্যেই বিখ্যাত করে তুলেছে এই রেস্তঁরাকে।
শুধু তা-ই নয়, রেস্তঁরাকে মানুষের কাছাকাছি নিয়ে যেতে ড্রিঙ্কস কাস্টমাইজ করার কাজটি সারেন গোপাল মজুমদার। আপনার পছন্দের স্বাদ বলুন, জানিয়ে দিন কতটা মশলা পছন্দের? ঝাল ভালবাসেন না কি মিষ্টি? ব্যস। আপনার কাজ শেষ। এ বার আপনার চাহিদা অনুযায়ী নাইট্রোজেনের ধোঁওয়া ওঠা পানীয় বানিয়ে দেবেন গোপাল। প্রিয়জনের সঙ্গে সেই পানীয়তে চুমুক দিন পুজোর ক’দিন। বেরি বেরি, স্পাইসি ম্যাঙ্গো ডিলাইট ইত্যাদি মনকাড়া সব মকটেল নিয়েই পুজোর মেনু সাজাচ্ছে লেভেল সেভেন। ককটেলেও থাকছে নানা বিকল্প।
আরও পড়ুন: তিরুঅনন্তপুরমের হেঁশেল মিশেছে ‘সারফিরে দ্য কোস্টাল ক্যাফে’-তে
রুফ টপ বলে রোদগলা দুপুরে গেলে ঠকবেন— এমনটা আবার ভেবে বসবেন না যেন! আধুনিক পদ্ধতির এই রুফ টপ রেস্তঁরা রোদ-বৃষ্টির হাত থেকেও বাঁচাবে আপনাকে। শুধু তা-ই নয়, প্রকৃতির সঙ্গে মিলে কৃত্রিম উপায়ে ঠান্ডা হাওয়ারও জোগান রাখেন কর্তৃপক্ষ। তাই রোদ বা ভ্যাপসা গরমের চোখ-রাঙানি নেই এই রুফ টপে। বরং ছাদে দাঁড়িয়ে অস্তমিত সূর্য আর আলো জ্বলে ওঠা কলকাতাকে সামনে রেখে মুখে তুলতেই পারেন ট্রাফেল মাশরুম রিশোতো। তিন রকমের মাশরুমকে নানা মশলায় মিশিয়ে চিজ ও ক্রিম মাখানো ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয় এই ইতালীয় খাবার। সঙ্গে ব্রেড টোস্ট। ইতালীয় খাবারে এদের অন্যতম আকর্ষণ কিন্তু পাস্তা, পিৎজাও।
কী বলছেন? ইতালীয়র চেয়ে আপনার পছন্দ চাইনিজ খানা? তা বেশ তো! তা হলে এখানে এসেই অর্ডার করুন চাইনিজ কম্বো। নুডলস বা রাইসের সঙ্গে চার রকমের ভিন্ন সসের বিকল্প পাবেন। বেছে নিন নিজের পছন্দেরটা। এদের নুডলস মুখে দিলে বুঝবেন, কেন তপসিয়ার এই রেস্তঁরা চাইনিজ খানায় ওই অঞ্চলে বেতাজ বাদশা! আর একটা খাবার না চাখলে দুয়ো দিতে ইচ্ছে করবে নিজেকেই। গ্রিলড কলকাতা ভেটকি ইন লেমন বাটার সস। হালকা হলদেটে এই সসের সঙ্গে ভেটকির সখ্য না খেলে বুঝবেনই না, কেন ‘লেভেল সেভেন’-এ এই রান্নার খোঁজে বারবার ফিরে আসেন সেলিব্রিটিরা।
অবশ্য এ সব ফিউশনে না গিয়ে পুজোয় বাঙালি খাবার ছাড়া অন্য কিছু মুখে তুলতে না চাইলে সে ব্যবস্থাও রাখছে লেভেল সেভেন। ভাত, শুক্তো, ডাল, পাঁচ রকম ভাজা, মোচার ঘণ্ট, মাছ-মাংস থেকে শুরু করে চাটনি, পাঁপড়, গাজরের হালুয়া, মিষ্টি— কী নেই সে তালিকায়! ভেজ ও নন ভেজ দু’রকম থালিই পাবেন যথাক্রমে ৯৯৯ ও ১১৯৯ টাকায় (কর অতিরিক্ত)।
আরও পড়ুন: এ বার পুজোয় রেস্তরাঁর মটন তৈরি হোক আপনার রান্নাঘরেই
আরও পড়ুন: পুজোর রান্নায় থাকুক বনেদিয়ানার ছোঁয়া
যদি বাঙালিয়ানা ছেড়ে পুজোর ক’দিন শুধুই পার্টির মেজাজে থাকেন, তাতেও আপত্তি নেই ‘লেভেল সেভেন’-এর। প্রেয়সী বা বন্ধুদের সঙ্গে জমাট বাঁধা রাতে আপনার সঙ্গী হবে এদের ককটেল মেনু ও ডিজের ডান্সিং বিট। ভোর ৪টে থেকে রাত ১টা পর্যন্ত খোলা থাকছে পুজোয়। দু’জনের খেতে খরচ পড়বে ২০০০ টাকা, সঙ্গে জিএসটি।