রাত জেগে ঠাকুর দেখার পরদিন সকালে আর বাড়িতে রান্না করতে ইচ্ছে করে নাকি? তেমনই কোনও একদিন, অথবা বছরের অন্যান্য যে কোনও সময়ে সাতসকালে হেঁশেলকে ছুটি দিন। বদলে প্রাতরাশ সারতেই পারেন কলকাতার এই জায়গাগুলির একটিতে। কোন কোন ঠিকানা রয়েছে সেই তালিকায়?
শ্যামবাজারের কাছে ইংরেজি আমলে তৈরি এই ব্রেকফাস্ট জয়েন্ট শহরে প্রাতরাশের অন্যতম সেরা ঠিকানা। ১১০ বছর পুরনো এই রেস্তরাঁর নাম 'ন্যাশনাল ইকোনমি রেস্তরাঁ'। এখানে মূলত ইংলিশ ব্রেকফাস্ট পাওয়া যায়। যেমন চা, কফি, বিভিন্ন ধরনের টোস্ট, ওমলেট, ইত্যাদি। এই দোকানেই কিন্তু শ্যুটিং হয়েছিল 'আবহমান', 'কহানি'-র মতো কিছু জনপ্রিয় ছবির।
তালিকায় পরের নামটা থাকুক শ্যামবাজারের আরও একটি দোকানের। ‘আদি হরিদাস মোদক’, যার বয়স ২৫০ বছর পার। শ্রীরামকৃষ্ণ, সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, গিরিশ ঘোষের মতো ব্যক্তিত্বরা এক সময়ে প্রাতরাশ সেরেছেন এই দোকানে। কলাপাতায় করে দেওয়া হয় কচুরি বা লুচি। সঙ্গে ছোলার ডাল, আলুর তরকারি, আর বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি।
উত্তর থেকে এ বার একটু দক্ষিণে আসা যাক। লেক মার্কেট এলাকায় রাধুবাবুর দোকানও ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই দোকানে প্রাতরাশের জন্য ঢুঁ মেরে আসছেন বহু নামীদামি ব্যক্তিত্ব। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে আজও এখানে পাওয়া যায় ইংলিশ ব্রেকফাস্ট।
শরৎ বসু রোডে ‘মহারাজ’-এও কিন্তু একদিন ব্রেকফাস্ট করতেই পারেন। পেয়ে যাবেন চা, কচুরি, আলুর তরকারি-সহ মিষ্টি, জিলিপি। রবিবারের পারফেক্ট ব্রেকফাস্ট যাকে বলে!
পিজি ওরফে এসএসকেএম হাসপাতালের কাছে ‘বলবন্ত সিং’ ধাবাও রয়েছে তালিকায়। এখানকার মালাই চা দারুণ বিখ্যাত। এ ছাড়াও জলখাবারে এই দোকানে পেয়ে যাবেন কচুরি, তরকারি, লস্যি, ইত্যাদি।
দক্ষিণ কলকাতার আর এক জনপ্রিয় জলখাবারের ঠেক হল ‘শ্রীহরি’। ভবানীপুর থানার ঠিক উল্টো দিকে যার অবস্থান। এখানেও লস্যি, কচুরি, মিষ্টি দিয়ে জমিয়ে ভূরিভোজ সারতে পারবেন।
উত্তর কলকাতার ‘নীলাচল’-এর কচুরি মানেই মাছের কচুরি! সকাল সকাল গঙ্গার পাড় ঘুরে বাগবাজারের এই দোকানে ঢুঁ মারতেই পারেন।
চাইনিজ ব্রেকফাস্ট করতে চান? শহরের বুকে অন্যতম ঠিকানা হল ‘টেরিটি বাজার’। পোদ্দার কোর্টে এলাকায় এই জায়গায় রাস্তার উপরেই লোভনীয় সব চিনা পদের মেলা বসে সকাল সকাল। কী নেই তাতে? মিট বল স্যুপ, ফিশ স্যুপ, ডাম্পলিং, স্যুপ নুডলস— যা চাইবেন হাজির!
উত্তর শহরতলির দিকে এগোলে নিউ ব্যারাকপুরে রয়েছে ‘অজিতের কচুরি’। প্রাতরাশের জন্য বিখ্যাত এই দোকানটি বহু পুরনো। বিকেলে চপ পাওয়া যায় এই একই দোকানে।
বিবাদী বাগের ‘কোনা’ দোকান জনপ্রিয় তার মালাই টোস্ট, কচুরি-আলুর তরকারির জন্য। এ ছাড়া চা তো আছেই! (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।