বাঙালির কাছে বিজয়া মানেই মিষ্টিমুখ! তাতে অবশ্য অনেকেরই ভারী দুশ্চিন্তা! এত মিষ্টি খেয়েও দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষিত থাকবে তো? নিশ্চয় থাকবে। শুধু মাত্র তার জন্য কিছু নিয়ম ও অভ্যাস মেনে চলতে হবে। সেগুলি নিয়েই এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
নিয়মিত জল পান: দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখতে মিষ্টি খাওয়ার পর সব থেকে সহজ ও কার্যকরী উপায় হল জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলা। চিনি ও অ্যাসিডের মাত্রা লঘু করে দেয় জল। এবং জলই দাঁতের উপরিভাগ থেকে খাদ্য কণা ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে। মুখে অ্যাসিডের মাত্রা কমে গেলে দাঁতের ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়।
মিষ্টি খেয়েই ব্রাশ নয়: অ্যাসিডিক বা মিষ্টি খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর দাঁত ব্রাশ করুন। কারণ মিষ্টি খাওয়ার ঠিক পরেই দাঁতের এনামেল কিছুটা নরম থাকে। তখন ব্রাশ করলে এনামেলের ক্ষতি হতে পারে। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করলে মুখের ভিতরের লালা স্বাভাবিক ভাবে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট: দাঁতের এনামেল শক্তিশালী করতে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। সেই সঙ্গে একটি নরম-ব্রিসলের টুথব্রাশ ব্যবহার করুন এবং হালকা হাতে, গোলাকার গতিতে ২ মিনিট ধরে ব্রাশ করুন। শক্ত ব্রাশ এবং জোরে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল ও মাড়ির ক্ষতি হতে পারে।
প্রতি বার খাওয়ার পর কুলকুচি: দিনে দুই বার ব্রাশ করা আবশ্যক হলেও, উৎসবের সময় মিষ্টি বা চিটচিটে খাবার খাওয়ার পর ভাল করে কুলকুচি করে নিন বা সম্ভব হলে মুখ ধুয়ে নিন। এতে মুখে লেগে থাকা চিনির কণা দাঁতে বা মাড়িতে জমতে পারে না।
ফ্লস করুন: দিনে এক বার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন। বিশেষত রাতে ঘুমানোর আগে। ফ্লসিংয়ের মাধ্যমে দাঁতের ফাঁকে এবং মাড়ির কাছাকাছি জমে থাকা খাদ্য কণা ও প্ল্যাক দূর করা সম্ভব। এ ছাড়াও, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় এবং সতেজ শ্বাস বজায় থাকে।
চিনিমুক্ত চিউইং গাম: যদি ব্রাশ বা কুলি করার সুযোগ না থাকে, তা হলে চিনিমুক্ত চুইং গাম চিবোন। চুইং গাম লালা উৎপাদন বাড়ায়, যা মুখের অ্যাসিডকে কমাতে এবং খাদ্য কণা ধুয়ে দিতে সাহায্য করে। জাইলিটল যুক্ত গাম বিশেষ ভাবে উপকারী।
আঠালো মিষ্টি এড়িয়ে চলুন: চিটচিটে বা আঠালো মিষ্টি (যেমন- রসগোল্লা, সন্দেশ) দাঁতে বেশি ক্ষণ লেগে থাকে, যা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই, এগুলি যদি খেতেই হয়, তা হলে খাবার খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর মুখ ভাল ভাবে পরিষ্কার করুন। এ ছাড়াও, কম চিনিযুক্ত বা সুগার-ফ্রি মিষ্টির দিকে নজর দিতে পারেন।
স্ন্যাকিং নয়, মিল-টাইম: সারা দিন অল্প অল্প করে মিষ্টি না খেয়ে, খাবারের মূল সময়ের সঙ্গে মিষ্টি খান। লালা খাবার খাওয়ার সময় বেশি পরিমাণে তৈরি হয়, যা মিষ্টির ক্ষতিকারক প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। বার বার অল্প অল্প মিষ্টি খেলে দাঁত দীর্ঘ সময় চিনির সংস্পর্শে থাকে, যা ডেন্টাল ক্ষয় ত্বরান্বিত করে।
স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস: মিষ্টির পাশাপাশি দাঁত-বান্ধব খাবার খান। যেমন - ডিম, পনির, দই (চিনি ছাড়া), বা ক্রাঞ্চি সবজি (যেমন গাজর বা শশা)। এগুলি চিবানোর ফলে লালা উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং দাঁত পরিষ্কার হয়। মিষ্টিমুখের পর অল্প একটু পনির খেলে তা দাঁতের সুরক্ষায় সাহায্য করতে পারে।
চেক-আপ: প্রয়োজন হলে দাঁতের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রুটিন চেক-আপ করিয়ে নিন। চিকিৎসক কোনও সম্ভাব্য সমস্যা (যেমন ক্যাভিটি বা মাড়ির রোগ) আগে থেকেই চিহ্নিত করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এই জিনিসগুলি মেনে চললে বিজয়ার আনন্দে মিষ্টিমুখ হবে ভরপুর। আর আপনার দাঁতও থাকবে সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল! (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।) (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)