পুজো আসছে। সঙ্গে ছড়িয়ে যাচ্ছে একটা মন কেমন করা গন্ধ। সেই গন্ধের সঙ্গে এক হয়ে মিশে মেঘলা আকাশ আর হঠাৎ বৃষ্টি। ইদানীং বাঙালির পুজো আর বৃষ্টি যেন একই সুতোয় গাঁথা। এই সময়ে এক হাতে পুজোর বাজার আর অন্য হাতে ছাতা, সে ছবিই যেন দস্তুর এখন। কিন্তু তারই ছুতোয় ছাতাও কি ঢুকে পড়ল পুজোর ফ্যাশনে?
একসময় ছাতা মানেই ছিল একঘেয়ে কালো রঙের একটা ভারী জিনিস। সময় বদলেছে, সঙ্গে পাল্টেছে ছাতার ধরনও। ছাতা এখন শুধু বৃষ্টি আটকানোর উপায় নয়, বরং আপনার ব্যক্তিত্বের আয়নাও বটে।
এ কালের ছাতা তৈরি হচ্ছে এমন ভাবে, যা ফ্যাশন দুনিয়াতেও জায়গা করে নিয়েছে। কোনও ছাতার হাতল বাঁশের, আবার কোনওটা কাঠের। তার কাপড়ও এখন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়। সমুদ্রের প্লাস্টিক রিসাইকেল করে তৈরি পলিয়েস্টার থেকে শুরু করে পরিবেশবান্ধব উপকরণ, সবই এখন ছাতার ক্যানোপিতে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রঙের খেলায় ছাতা এখন আপনার মনের কথা বলে। লাল রঙের ছাতা আত্মবিশ্বাস নিয়ে জানান দেয় তার উপস্থিতি। নীল রঙের ছাতা মনকে শান্তি দেয়। হলুদ ছাতা একমুঠো রোদ এনে দেয় মেঘলা দিনে।
ছাতার ক্যানভাসে ফুটে ওঠে নানা ধরনের ডিজাইন, বোল্ড টাইপোগ্রাফি, এমনকি শিল্পীর আঁকা ছবিও। কিছু ছাতা তো এমনও হয় যে বৃষ্টিতে ভিজলেই তার উপর লেখা বা ছবি ফুটে ওঠে। অনেকে আবার ছাতার ভিতরের দিকটায় আকাশের ছবি আঁকিয়ে নেন, যাতে মনে হয় বৃষ্টির মধ্যেও মাথার উপরে এক ঝলমলে আকাশ।
শুধু তাই নয়। প্রযুক্তির ছোঁয়াও লেগেছে ছাতায়। এলইডি লাইট লাগানো ছাতা রাতের অন্ধকারে পথ দেখায়।
কিছু ছাতার হাতলে সোলার চার্জিং-এর সুবিধা থাকে। ব্লু-টুথ ব্যবহার করে ছাতাই এখন জানিয়ে দেয় কখন বৃষ্টি আসতে পারে। এমনকি যাঁরা ছাতা হারিয়ে ফেলায় সিদ্ধহস্ত, তাদের জন্য আছে লোকেশন ট্র্যাকিং-এর ব্যবস্থাও।
এ ছাড়াও রয়েছে রং বদলের ছাতা। এ ছাতার ক্যানোপি তাপমাত্রার উপরে নির্ভর করে রং পরিবর্তন করবে। অন্য দিকে রয়েছে, সুগন্ধী ছাতা। ছাতার কাপড় থেকে বেরোনো হালকা সুবাস মনকে সতেজ করে তুলবে।
কম্প্যাক্ট ফোল্ডেবল ছাতা মানেই হালকা, ছোট, আর সহজে বহনযোগ্য। এই ছাতাগুলো এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ভাঁজ করে পকেটে বা ছোট ব্যাগের মধ্যেও রাখা যায়। বৃষ্টির সময়ে হঠাৎ প্রয়োজন পড়লে বোতাম টিপে সহজেই এটি খুলে যায়। প্রয়োজন ফুরোলে সহজেই আবার ছোট্ট হয়ে যায়। ভারী ছাতা বয়ে বেড়ানোর দিন ফুরিয়েছে, বলাই যায়!
পুজোয় এক নতুন সাজে নিজেকে সাজাতে তাই হাতের ছাতাকেও করে তুলতে পারেন ফ্যাশনের অঙ্গ। নতুন কায়দার এই ছাতাগুলো নিয়ে আপনার কী পরিকল্পনা? (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)