বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। আদ্যন্ত বাঙালিয়ানায় ভরপুর এই উৎসবেরই একটি অবিচ্ছিন্ন অংশ হল দশভূজার জয়ধ্বনি - 'বলো দুগ্গা মাই কি জয়!'
এখান থেকেই মনে একটি প্রশ্ন জাগে, যে সংস্কৃতি, যে ঐতিহ্য আগাগোড়া বাঙালির, সেখানে এমন হিন্দি ঘেঁষা স্লোগান এল কী ভাবে? এর পিছনেও রয়েছে এক ইতিহাস!
১৭৫৭ সালে পলাাশির যুদ্ধের পর থেকেই কলকাতা শহর জুড়ে দুর্গাপুজোর রমরমা শুরু হয়। বনেদি বাড়ি, জমিদার বাড়ি এবং রাজবাড়িগুলির কাছে দুর্গাপুজো একটি 'স্টেটাস সিম্বল' হয়ে ওঠে!
এই সময় থেকেই কলকাতার দুর্গাপুজোগুলিতে অত্যধিক জাঁকজমক শুরু হয়। যা এক কথায় ছিল চোখ ধাঁধানো!
পুজোর অন্যান্য আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি যে বিষয়টি সকলের নজর কাড়ত, তা হল প্রতিমা বিসর্জনের এলাহী আয়োজন।
বিসর্জনের সময়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করা হত। এমনকী, বিসর্জনের আগে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো, গান স্যালুট দেওয়া, কামান দাগা, বুলবুলির লড়াই করানো, আতর দিয়ে ঘর মোছা, নোটের ঘুড়ি ওড়ানোর মতো নানা রেওয়াজও শুরু হয়!
সেই সময়ে অধিকাংশ প্রতিমা ছিল একচালা। তবে, পরবর্তীতে পাঁচচালা প্রতিমারও উল্লেখ মেলে। সেই প্রতিমা গঙ্গার ঘাট অবধি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শক্তিশালী ভারবাহকদের প্রয়োজন পড়ত।
শোনা যায়, এই ভারবাহক বা মুটেদের ভাড়া করে আনা হত পড়শি রাজ্য বিহার থেকে। তাঁরা যখন বিরাট প্রতিমা ঘাড়ে চাপিয়ে বয়ে নিয়ে যেতেন একত্রে বলতেন 'বোলো দুর্গা মাই কি জয়!'
ঠিক যে ভাবে পাল্কিবাহকরা 'হুম হুম না রে, হুম হুম না' বলেন, এটা একেবারেই তেমন একটি প্রক্রিয়া। পরবর্তীতে বাঙালিরা বিহারি মুটেদের এই স্লোগানই আপন করে নেয়। কিছুটা বদলে সেটি হয় - 'বলো দুগ্গা মাই কি জয়!'
জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির দুর্গাপুজো যে আদতে মহামানবের মিলন উৎসব, এই ঘটনা বা ইতিহাস আরও এক বার সেটাই মনে করিয়ে দেয়। ( ‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’)। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।