প্রতীকী চিত্র
দেবী লক্ষ্মী– কারও মতে তিনি ভার্গব অর্থাৎ ঋষি ভৃগুর সন্তান এবং সমুদ্রমন্থনে তাঁর পুনর্জন্ম হয়। কোথাও আবার জড়িয়ে দূর্বাশা মুনির অভিশাপের কথা। সে সব কথা থাক। অনেকের তিনি আদি জগন্মাতা, বিষ্ণুশক্তি, পরমেশ্বরী।
চেনা প্রতিমায় দেবী লক্ষ্মীর চারটি হাত। সেই চার হাতে তিনি চতুর্বর্গ ফলপ্রদায়িনী।
দেবী চতুর্ভুজা। চতুর্দিক জুড়ে তার ব্যাপ্তি। সর্বত্রই তিনি বিরাজমানা। দেবী চতুর্বর্গ ফলপ্রদায়িনী, যাকে নির্দিষ্ট করছে তাঁর চারটি হাত। অর্থাৎ, তাঁর চার হাত যথাক্রমে ধর্ম, কাম, অর্থ ও মোক্ষকে দর্শায়।
ধর্মের অর্থ এক জন মানুষের অবশ্য পালনীয় সামাজিক কর্তব্য। যেমন আর্তের সেবা, দীনের সাহায্য, নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ইত্যাদি।
কামের অর্থ হল ইচ্ছা। এখানে কামনাকেই কাম হিসেবে বোঝানো হয়েছে। মানুষের কামনা থাকবে, তার নিজের উত্তরোত্তর উন্নয়ন। নিজের অন্তঃশ্রীর বৃদ্ধির ইচ্ছা জাগরুক করাকেই এখানে কাম বলে অভিহিত করা হয়েছে।
অর্থ হল জীবনের লক্ষ্য। বেঁচে থাকার লক্ষ্য কী? শুধুই যাপন? কেন মানুষ এই সমাজে আসে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে বেঁচে থাকে? সেই লক্ষ্যকে বুঝতে পারা এবং তাকে উপলব্ধি মরমে ধারণ করা হল অর্থ।
মোক্ষ হল মুক্তি। নিজের লোভ থেকে মুক্তি অর্থাৎ আত্মত্যাগ ও আত্মোপলব্ধি হল মোক্ষ।
এমন অপূর্বশ্রী দেবীর বাহন প্যাঁচা হল কেন? এ প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। দেবী লক্ষ্মী বিষ্ণু শক্তি। শ্রীবিষ্ণু যখন আদিত্য, দেবী লক্ষ্মী তখন পদ্ম। শ্রীবিষ্ণু যখন পরশুরাম অবতারে, দেবী লক্ষ্মী তখন ধরিত্রী। তাই তাঁর বাহনও বৈচিত্র্যময়।
একেবারে প্রথম শতাব্দীর কুনিন্দরাজ অমোগাভূতির মুদ্রায় মা লক্ষ্মীর পাশে হরিণ আছে। উল্টো পিঠে স্বস্তিক!
আবার, কুমার গুপ্তের টাকায় লক্ষ্মীর সঙ্গে ময়ূর। বঙ্গাধীপ শশাঙ্কের মুদ্রায় লক্ষ্মী ও হাঁস। এমন বহুভেদ পাওয়া যায়, কোথাও সিংহ ( কাশ্মীর) কোথাও কূর্ম। কিন্তু শেষমেষ প্যাঁচাই স্থায়ী হয়েছে।
এর পিছনে মূলত দু’টি কারণ; প্যাঁচা রাতচরা পাখি। কোজাগরীর লক্ষ্মী পুজোর যে কিংবদন্তি রয়েছে, তার সঙ্গে রাত্রির যোগ রয়েছে। প্যাঁচা রাতেও দিব্যি দেখতে পায় অর্থাৎ অন্ধকারে নিজেকে আলোকিত করে রাখে। নিজের পথ খুঁজে নেয়। যা বোধোদয়ের দ্যোতক।
দ্বিতীয়ত, প্যাঁচা ইঁদুর, বাদুড় প্রভৃতিকে শিকার করে। ইঁদুর ফসল নষ্ট করে। বাদুড় নষ্ট করে ফল। এদের হাত থেকে আমাদের ফসল ও ফলকে রক্ষা করছে প্যাঁচা। তাই সে শস্যদেবী লক্ষ্মীর বাহন।
এ ছাড়াও প্যাঁচাকে ভীষণ বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ প্রাণী বলা হয়। চার হাতের মাহাত্ম্য থেকে এটুকু বোঝা যায়– দেবী লক্ষ্মী বাইরের ঐশ্বর্যের পাশাপাশি অন্তরের ঐশ্বর্যও প্রদান করেন। মনে রাখতে হবে, তিনি কিন্তু কেবল ঘরকে আলোকিত করছেন না। তিনি আলোকিত করছেন মনের ঘরটিও, যেটি সবচাইতে অন্ধকার। তিনি এসে বলছেন, কে জেগে আছো…
অর্থাৎ ঐশ্বর্যকে রক্ষা করতে হলে নিজের অন্তরাত্মাকে জাগরিত কর। অন্তরের ঐশ্বর্যই সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।