Hooghly Jagadhatri Puja 2025

আরামবাগের পাল বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর নেপথ্যে রয়েছে প্রায় ১৭৫ বছরের প্রাচীন এক রহস্যময় ঘটনা!

কেন এই বাড়ির প্রতিমাকে সকলে 'ছোট মা' বলে সম্বোধন করেন?

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:০৯
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

হুগলির আরামবাগের জয়রামপুর। এই এলাকার বাসিন্দা পাল পরিবার। এই বাড়িতেই গত ১৬ বছর ধরে দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু হয়েছে। এই দেবী স্থানীয়দের কাছে 'পাল বাড়ির ছোট মা' হিসাবে সুপরিচিত। কিন্তু, কেন এই নামকরণ? এর নেপথ্যে রয়েছে প্রায় ১৭৫ বছরের প্রাচীন এক ইতিহাস! যা এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছে এক লোক কাহিনি তথা কিংবদন্তী!

Advertisement

এই বাড়িরই সন্তান দেবরাজ পাল আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, এই ঘটনার সূত্রপাত হয় ১৮৫০ সাল নাগাদ। অর্থাৎ - এই 'কাহিনি'র যিনি প্রধান চরিত্র, সেই বিভূতিভূষণ পাল হলেন দেবরাজের তিন পুরুষ আগের মানুষ! তিনি সম্পর্কে দেবরাজের ঠাকুরদার বাবা।

পারিবারিক তথ্য বলছে, সেই ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বিভূতিভূষণ কোনও এক বিশেষ কাজে কৃষ্ণনগর গিয়েছিলেন। সেটা ছিল দীপাবলির সময় - ঘোর অমাবস্যা। সেই একটি রাত তিনি কৃষ্ণনগরেই কাটিয়েছিলেন। আর, সেই রাতেই স্বপ্নে মা জগদ্ধাত্রীর সাক্ষাৎ পান বিভূতিভূষণ। দেবী তাঁকে দর্শন দেন বালিকা রূপে। যাঁর এক হাতে ছিল পদ্ম এবং অন্য হাতে তির-ধনুক।

Advertisement

বলা হয়, সেই সময়েই মায়ের আরাধনা করার আদেশ পেয়েছিলেন বিভূতিভূষণ। কিন্তু, তিনি সেই স্বপ্নাদেশ রক্ষা করার আগেই অসুস্থ হয়ে দেহত্যাগ করেন। তবে, মৃত্যুর আগে বিভূতিভূষণ তাঁর সন্তান মহানন্দ পালনকে বলে যান, তিনি যেন পাল বাড়িতে মায়ের পুজো শুরু করার বন্দোবস্ত করেন। প্রাথমিক ভাবে পিতৃ-আদেশ রক্ষা করলেও পরবর্তীতে মহানন্দও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং পুজো বন্ধ হয়ে যায়।

এর পর ২০১০ সাল থেকে পুনরায় পুজো শুরু করেন মহানন্দের ছেলে বিশ্বেশ্বর পাল। এর পরের বছরই তাঁর বাবা অর্থাৎ মহানন্দ প্রয়াত হন। বিশ্বেশ্বরের ছেলে দেবরাজ জানান, যেহেতু প্রাথমিক ভাবে মা জগদ্ধাত্রী বালিকা রূপে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন এবং যেহেতু তাঁর বাবা ও ঠাকুরদা দু'জনই বাড়ির কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন, তাই পাল বাড়ির এই পুজোর দেবী 'ছোট মা' রূপে পরিচিতি লাভ করেন।

আরও শোনা যায়, পরবর্তীতে বিশ্বেশ্বর এবং তাঁর এক কাকাও দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁরা স্বপ্নে দেবীকে সর্প রূপে দর্শন করেছিলেন! এ ছাড়া, পাল বাড়িতে যে মন্দির রয়েছে, সেই মন্দিরে মায়ের বেদীতেও নাকি সাপের দেখা মিলেছিল! এই সমস্ত ঘটনার জেরে এই পুজো ঘিরে ভক্তদের মনে শ্রদ্ধা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে এক রহস্যময় কৌতূহল। যা এই পুজোকে অনন্য করে তুলেছে।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement