প্রতীকী চিত্র
১৩০৮ বঙ্গাব্দ। বেলুড় মঠে ধুমধাম করে মণ্ডপ গড়ে দুর্গাপুজোর আয়োজন হয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দ দীর্ঘদিন ধরে মনস্থ করে রেখেছিলেন দুর্গাপুজো করবেন। সেই সঙ্গে করা হবে কুমারী পুজো। কিন্তু তিনি যে সন্ন্যাসী, তাই মা-কে ডেকে আনলেন।
মা সারদা এসে উপস্থিত হলেন বেলুড়মঠে। ৯ জন কুমারী বালিকাকে সাজিয়ে তুললেন গৌরী মা (শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের অন্যতম শিষ্যা)। বিবেকানন্দ বস্ত্র, পাদ্য, অর্ঘ্য, মিষ্টান্ন দিয়ে আভূমি নত হয়ে প্রণাম করলেন সেই কুমারী কন্যাদের।
তাদেরই মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ কন্যাটি আপন ভাবের ঘোরে বিহ্বল। তার কপালে রক্তচন্দন পরাতে গিয়ে শিউরে উঠলেন স্বামীজি। বললেন, “আহা, মা তোমার তৃতীয় নয়নে আঘাত করে ফেলিনি তো! ” কিন্তু কাকে বলা? সে মা তখন মনের আনন্দে মিষ্টান্ন খেতে ব্যস্ত।
মঠে সেই প্রথম দুর্গাপুজো এবং কুমারী পুজো।
কুমারী পুজোয় সচরাচর এক কন্যাকে পবিত্র গঙ্গাজলে স্নান করিয়ে লাল অথবা সোনালী পাড়ের আগুন রঙা শাড়ি পরানো হয়। সাজিয়ে তোলা হয় ফুল ও গয়নায়।
যে ভাবে যে নিয়মে মা দুর্গাকে পুজো করা হয়, ঠিক সেই রীতি মেনেই কুমারী পুজো সমাধা হয়। দেবী দুর্গাকে দেওয়া অর্ঘ্য ও নৈবেদ্যই সমর্পিত হয় কুমারীর পায়েও। বিধি মতে মন্ত্র পড়েই পুজো ও আরতি করা হয় কুমারীকে। সন্ন্যাসীরা তাকেই মাতৃজ্ঞানে পুষ্পাঞ্জলি দেন, প্রার্থনা করেন।
কুমারী দেবী ভগবতীর অতি সাত্ত্বিক রূপ অর্থাৎ সাধকের শুদ্ধ মনে দেবী এই রূপে দেখা দেন। অন্য অর্থে, সাধকের শুদ্ধচৈতন্যেই কুমারীর দেবীত্ব ধরা পড়ে, মানবীয় স্থূল দৃষ্টি সেখানে অন্তর্হিত। যুগাবতার শ্রীরামকৃষ্ণও কুমারীকে ভগবতীর অংশ বলেছেন। তিনি বলতেন, মাতৃ ভাব বড় শুদ্ধ ভাব। কুমারীর মধ্যে দৈবী ভাবের প্রকাশ দেখা বা তাকে জননী রূপে পুজো করা সেই শুদ্ধসত্ত্ব ভাবেরই এক সার্থক প্রকাশ। দুর্গাপুজোয় কুমারীপুজোর অনুষ্ঠান তারই শাস্ত্রীয় ও বাস্তবায়িত রূপ। এ বছর বেলুড় মঠে কুমারী পুজোর ১২৪তম বর্ষ।
তথ্যসূত্র — বেলুড়মঠের কুমারী পুজো- স্বামী দেবেন্দ্রানন্দ
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।