প্রতীকী চিত্র
দুর্গাপুজোর সঙ্গে মিশে থাকে একাধিক রীতি, রেওয়াজ, নিয়ম। ষষ্ঠীতে বেলতলায় বোধন, সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকার স্নান, মহানবমীর বলিদানের মতোই দুর্গাপুজোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ হল সন্ধিপুজো। অষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে এই পুজো হয় বলে এমন নামকরণ। অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট এবং মহানবমী তিথির প্রথম ২৪ মিনিট অর্থাৎ মোট ৪৮ মিনিট ধরে চলে পুজো।
সন্ধিপুজোয় দেবী দুর্গাকে চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হয়। এ সময়ে তিনি সর্বসংহারিণী। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, দেবী দুর্গা যখন মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন, তখন তাঁকে আক্রমণ করে দুই অসুর সেনাপতি চণ্ড ও মুণ্ড। এক মহাসন্ধিক্ষণে চামুণ্ডা রূপে চণ্ড ও মুণ্ডের নিধন করেন দেবী। সে কারণেই সন্ধিপুজো করা হয়।
৪৮ মিনিটের মধ্যে এই বিশেষ পুজো সম্পন্ন করতে হয়। বাড়ির পুজোর ক্ষেত্রে সময় এবং পুজোর যাবতীয় নিয়মকানুন অক্ষরে অক্ষরে মানা হয়। সন্ধিপুজোর ৪৮ মিনিটের সময় পরিমাপ করার জন্য এক কালে ‘তাঁবি’ বসানোর প্রথা ছিল। আজও কোনও কোনও বনেদি বাড়িতে সন্ধিপুজোর সময়ে এই প্রথা মানা হয়।
এখন ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ডে সময়ের পরিমাপ করা হলেও সে কালে সময় মাপা হত প্রহর, দণ্ড ইত্যাদির মাধ্যমে। গোটা একটি দিনে আটটি প্রহর থাকে। এক একটি প্রহর তিন ঘণ্টার। মোট ১৮০ মিনিটি। এক প্রহরের সাড়ে সাত ভাগের এক ভাগ হল এক দণ্ড। অর্থাৎ ১৮০-র সাড়ে সাত ভাগের এক ভাগ হল ২৪। ২৪ মিনিটে এক দণ্ড। অষ্টমী তিথির শেষ এক দণ্ড এবং নবমী তিথির প্রথম এক দণ্ড, মোট দুই দণ্ডের পুজো সন্ধিপুজো।
‘তাঁবি’ কী?
খুব সম্ভবত, তামার বাটি থেকে ‘তাঁবি’ শব্দটা এসেছে। একে এক ধরনের জলঘড়ি বলা যেতে পারে।
খুব ক্ষুদ্র ছিদ্রযুক্ত গোলাকার তামার বাটি, জলভর্তি বড় একটা মাটির হাঁড়িতে বা বড় গামলা জাতীয় ধাতব পাত্রের মধ্যে বসিয়ে দেওয়া হত। একটু একটু করে সেই ছিদ্র দিয়ে জল তামার বাটিতে প্রবেশ করত। জল ঢুকতে শুরু হলে আস্তে আস্তে তামার বাটি নিমজ্জিত হতে আরম্ভ করত। পুরো বাটিটা ডুবে যেতে যত সময় লাগত, তা-ই এক দণ্ড। এ ভাবেই বাটির ডুবে যাওয়া দেখে দণ্ডের পরিমাপ করা হত। সেই অনুযায়ী চলত সন্ধিপুজো। কোনও কোনও পরিবারে আবার এক বার বাটি ডুবলে তোপ দেগে বা শূন্যে গুলি ছুড়ে জানিয়ে দেওয়া হত এক দণ্ড সমাপ্ত হল। তোপ দাগা বা গুলি ছোড়া না হলেও, এখনও কিছু পরিবার ‘তাঁবি’ বসিয়ে সময় মেপে সন্ধিপুজো করে।
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।