প্রতীকী চিত্র
মানুষ মানুষকে পুজো করে। বৃদ্ধ, প্রবীণ সাধক নাতনির বয়সী কুমারীকে পুজো করেন দেবী জ্ঞানে, এ বড় আশ্চর্য!
শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, “কুমারীপূজা করে কেন? সব স্ত্রীলোক ভগবতীর এক একটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ। ”
“ হোমাদিকং হি সকলং কুমারীপূজনং বিনা।
পরিপূর্ণফলং ন স্যাৎ পূজয়া তদ্ ভবেদ্ ধ্রুবম্।
কুমারীপূজয়া দেবি ফলং কোটিগুণং ভবেৎ।
পুষ্পং কুমার্যৈ যদ্দত্তং তন্মেরুসদৃশং ফলম্। কুমারী ভোজিতা যেন ত্রৈলোক্যং তেন ভোজিতম্।। "
অর্থাৎ, দেবী আদ্যাশক্তির সম্যক প্রকাশ দেবী কুমারীর মধ্যে। কুমারী অবস্থায় বালিকাদের শুদ্ধ আধারে দেবী অবস্থান করেন। কুমারী অর্থ ভবিষ্যতের মহাবীজাধার। শুরু থেকে তার যত্ন না নিলে বোধ খুলবে কেন!
পুষ্পিতা রমণীকে একার্থে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু কুমারী একইসঙ্গে কন্যা, মাতা এবং কর্ত্রী।
তাই তো তন্ত্রসার বলছে,
“ কুমারী যোগিনী সাক্ষাৎ কুমারী পরদেবতা। ”
অর্থাৎ, কুমারী হলেন যোগিনী এবং সাক্ষাৎ কুলদেবী। তিনিই কুললক্ষ্মী।
জামল তন্ত্রের ভাষ্যে কুমারী পুজোর কুমারীদের বয়স্ক্রম অনুযায়ী তাদের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
একবর্ষীয়া কন্যার নাম সন্ধ্যা, দ্বিবর্ষীয়া কন্যার নাম সরস্বতী, ত্রিবর্ষীয়া কন্যার নাম ত্রিধামূর্তি, চতুর্বর্ষীয়া কন্যার নাম কালিকা, পঞ্চবর্ষীয়া কন্যার নাম সুভগা, ষড়বর্ষীয়া কন্যার নাম উমা, সপ্তবর্ষীয়া কন্যার নাম মালিনী, অষ্টবর্ষীয়া কন্যার নাম কুব্জিকা, নবমবর্ষীয়া কন্যার নাম কালসন্দর্ভা, দশবর্ষীয়া কন্যার নাম অপরাজিতা, একাদশবর্ষীয়া কন্যার নাম রুদ্রাণী, দ্বাদশবর্ষীয়া কন্যার নাম ভৈরবী, ত্রয়োদশবর্ষীয়া কন্যার নাম মহালক্ষ্মী, চতুৰ্দ্দশবর্ষীয়া কন্যার নাম পীঠনায়িকা, পঞ্চদশবর্ষীয়া কন্যার নাম ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোড়শবর্ষীয়া কন্যার নাম অম্বিকা। কন্যা যে পর্যন্ত ঋতুমতী না হয়, সেই পর্যন্ত তাদের এই ক্রমানুসারে পুজো করতে হবে। যখন সে পুষ্পিতা, তখন সে পূর্ণা।
মহাষ্টমীর মহাপুণ্যলগ্নে মহাদেবীর সামনে আসনে কুমারী কন্যাকে দেবী রূপে সাজিয়ে বসানো হয়। পূজক পাদ্য অর্ঘ্য আসন স্বাগত বসন ভূষণ নৈবেদ্য পুষ্প চন্দন ধূপ দীপ ভোজ্য পানীয়-সহ ষোড়শোপচারে মহাপুজো করা হয় কুমারী দেবীর।
“ পাদ্যমর্ঘং তথা ধুপং কুঙ্কুমং চন্দনং শুভম্। ভক্তিভাবেন সংপূজ্য কুমারীভ্যো নিবেদয়েৎ।। ”
অর্থাৎ ভক্তিভরে ধূপ, কুমকুম, চন্দন কুমারীর চরণে নিবেদন করা হয়।
কুমারী হলেন দেবীর আয়না স্বরূপ। প্রতিমাস্থ দেবী পূজিতা কুমারীর মধ্যে প্রকাশিত হন। সর্ব দেবদেবী অধিষ্ঠান করেন কুমারী পুজোয়।
প্রকৃতিরূপিণী রমণী যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন ক্রমে ক্রমে প্রতি বছর নতুন নতুন বোধ ও শক্তির সমাবেশ হয়। সেই শক্তিকে সেই ক্রমে আরাধনা ও আয়ত্ত করাই কুমারী পুজো।
তথ্যসূত্র - কালী কথা - পত্রভারতী
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।