প্রতীকী চিত্র
‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক-মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা…’, ভোরবেলা রেডিয়োতে বাজতে থাকা ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র সুরেই শুরু হয় মহালয়ার দিন। শিউলির গন্ধ, আকাশে শরতের মেঘ, কাশফুল, আর মন ভরিয়ে দেওয়া মায়ের আগমনী সুরে যেন আপামর বাঙালির বুকে ঢেউ খেলে যায়। এই দিনটিতেই তো আসলে দুর্গাপুজোর সূচনা। কিন্তু শুধু পুজোর অপেক্ষা নয়, মনে করা হয় এই দিনে এই শুভ কাজগুলি করলে সংসারে আসে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি।
সব চেয়ে আগে বলা যাক তর্পণ-এর কথা। ভোরবেলায় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে একটি তামার ঘটিতে কাঁচা দুধ, কালো তিল, আতপ চাল, সাদা ফুল এবং গঙ্গাজল মিশিয়ে কোনও জলাশয় বা বাড়ির ফাঁকা জায়গায় ঢেলে দিতে হয়। বিশ্বাস করা হয়, এতে তাঁদের আত্মা শান্তি পায় আর আশীর্বাদ ফিরে আসে সংসারে।
এ ছাড়া এই দিনে পশু-পাখিদের খাবার দেওয়াও খুব শুভ। এক মুঠো ভাত বা সামান্য জল-ও যদি ওদের পেটে যায়, তাতেই পুণ্য লাভ হয় বলে মনে করা হয়।
তবে শুধু তর্পণই নয়, এই দিনে অসহায় এবং অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানোও অত্যন্ত শুভ। খাদ্য, বস্ত্র বা প্রয়োজনীয় কোনও জিনিস দান করলে তাঁদের আশীর্বাদে জীবনে শুভ ফল আসে। মহালয়ার দিনে শিশুদের পেট ভরে খাবার খাওয়ানোও পুণ্যের কাজ। এতে সংসারে আনন্দ এবং সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
অনেকে বাড়ি পরিষ্কার করেন, প্রবেশদ্বার সাজান, ঘরে নিরামিষ খাবার করেন। কোথাও কোথাও পুরোহিতদের নিমন্ত্রণ করে তাঁদের সেবা করার রীতি রয়েছে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে সতর্কতা আর ভক্তি ভরে দিন কাটানোও এই সময়ে পালনীয় বলে মনে করা হয়।
মহালয়া মানেই শুধু দেবী বন্দনা নয়, সঙ্গে থেকে যায় দায়িত্ব, দান, আর ভক্তির ছাপ।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।