প্রতীকী চিত্র।
আর মাত্র কয়েকটি দিনের অপেক্ষা। এই বছরের মতো দীপাবলি হয়ে গেলেও, দেব দীপাবলি আসছে। আগামী ৫ নভেম্বর পালিত হবে এই উৎসব। কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে সেজে উঠবে কাশী। এখানকার ৮৪টি ঘাট সেজে ওঠে প্রদীপের আলোয়। সাড়ম্বরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি বছর এখানে উদ্যাপিত হয় দেব দীপাবলি। এই বছরও ১০ লক্ষ প্রদীপ জ্বালানো হবে। কিন্তু জানেন কি এই উৎসব কেন গোটা দেশ জুড়ে পালিত হয় না, বরং কেবল কাশীতেই হয়?
পুরাণ মতে বারাণসী হল দেবাদিদেবের শহর। ব্রহ্মার বরে যখন ত্রিপুরাসুর প্রায় অপরাজেয় হয়ে ওঠে এবং দেবলোক আক্রমণ করে, তখন দেবতাদের রক্ষা করতে অর্ধনারীশ্বর রূপ ধারণ করে কার্তিক পূর্ণিমার সন্ধ্যায় তাকে বধ করেন শিব। সেই থেকে তিনি হয়ে ওঠেন ত্রিপুরারি। ত্রিপুরাসুর বধের পর দেবতারা দীপাবলি পালন করেন। স্বর্গের পাশাপাশি তাঁরা শিবের শহরে নেমে আসেন। এখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে দীপাবলি পালন করেন।
অন্য আরেক মত অনুযায়ী, দেব দীপাবলির দিন বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর বিশেষ পুজো হয়। আষাঢ় মাসের শুক্ল একাদশী থেকে ভগবান বিষ্ণু চার মাসের জন্য যোগনিদ্রায় যান, জেগে ওঠেন কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশীতে। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তুলসীর সঙ্গে। এর পর কার্তিক পূর্ণিমায় সমস্ত দেব দেবীরা বিষ্ণুর ঘুম থেকে জেগে ওঠার আনন্দে তাঁর এবং লক্ষ্মীর আরতি করেন প্রদীপ জ্বালিয়ে। সেই থেকে এ দিন দেব দীপাবলি পালিত হয়।
তৃতীয় মত অনুযায়ী, বামনদেবের স্বর্গ প্রাপ্তি বলে সমস্ত দেবতা একত্রে কার্তিক মাসের পূর্ণিমা উদযাপন করেছিলেন। গঙ্গার পাড়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে ছিলেন। সেই থেকেই দেব দীপাবলি পালিত হয়ে আসছে।
লোকবিশ্বাস অনুযায়ী দেব দীপাবলির রাতে দেবতারা রূপ পরির্বতন করে কাশীর গঙ্গার তীরে এসে দীপাবলি উদ্যাপন করে। এই দিন গঙ্গা স্নানের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। মনে করা হয় গঙ্গা স্নান করে দেবাদিদেবের পুজো করলে মনের সমস্ত ইচ্ছে পূর্ণ হয়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।