Durga Puja Celebration

রাজবাড়ির পুজো অথবা বাঁশের কেল্লা, শিল্প নির্দেশকের তৃপ্তির ঠিকানা

দীর্ঘ ২০ বছরের ফিল্মি কেরিয়ারে টলিউড, বলিউড মিলিয়ে প্রায় ১০০টি ছবিতে কাজ করেছেন তন্ময়। 

Advertisement

স্বরলিপি ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:০০
Share:

আহিরিটোলা নিয়ে এণনই ভাবনা তন্ময়ের।

অপর্ণা সেনের ‘গয়নার বাক্স’য় পিসিমার ঘরটার কথা মনে আছে? অথবা মণিরত্নের ‘যুবা’য় রানি মুখোপাধ্যায়-অভিষেক বচ্চনের রোম্যান্সের সেই ব্যাকগ্রাউন্ড? নিশ্চয়ই মনে পড়ছে আপনাদের। এই সব বিখ্যাত দৃশ্যের ডিজাইন করতে নেপথ্যে যে মানুষটি পরিশ্রম করেছিলেন তিনি শিল্প নির্দেশক তন্ময় চক্রবর্তী।

Advertisement

দীর্ঘ ২০ বছরের ফিল্মি কেরিয়ারে টলিউড, বলিউড মিলিয়ে প্রায় ১০০টি ছবিতে কাজ করেছেন তন্ময়। তবে গত তিন বছরে তাঁর ঝুলি ভরেছে অন্য অভিজ্ঞতাতেও। বিভিন্ন প্যান্ডেলে দুর্গা পুজোয় থিমের কাজ করছেন তিনি। এ বছর তাঁর কাঁধে তিনটি পুজোর দায়িত্ব।

প্রথম,আহিরিটোলা সার্বজনীন। সেখানে রাজবাড়ির পুজো যেমন হয় তা তুলে ধরছেন শিল্পী। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই জানেন না, রাজবাড়ির পুজোর চেহারা কেমন, তার উত্সবের রং কেমন।আগের বছর কালীপুজোয় ওঁরা ডেকেছিলেন আমাকে। দেখে মনে হয়েছিল, এমন জায়গায় একটা রাজবাড়ি হলে মন্দ হয় না। ওঁদের প্রোপোজাল দেওয়াতে ওঁরা রাজি হয়ে যান। তার পর লে আউট ডিজাইন করি। আমি কাজের সূত্রে অনেক বাড়িতেই গিয়ে দেখি হয়তো শুধু ঠাকুরদালানটা রংকরা। বাকি বাড়িতে ৪০ বছর হয়তো রং হয়নি। আমি জানতে চাই, এটা কি শুটিংয়ের জন্য রং করা হয়েছে? উত্তর পেয়েছি আগের বার পালা ছিল সে জন্য রং করিয়েছিলাম। তেমনই এখানে দেখাতে চাইছি।’’

Advertisement

বেহালা ক্লাব নিয়ে এমনই ভাবনা রয়েছে তন্ময়ের

আরও পড়ুন: রেষারেষিটা বাস-ট্রেকারের দৌড়কেও লজ্জা দেবে​

তন্ময়ের ভাবনায় রয়েছে নিঃসঙ্গ একটা বাড়ি। একটা বা দুটো পরিবার যেখানে এখনও টিকে আছে কোনওমতে। বাকিরা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছেন। এ বার এই রাজবাড়ির পালা। সেখানে মা ডাক দিয়েছে খোকাকে। আসছিস তো এ বার পুজোয়?প্রায়৬০জন শিল্পী এই রাজবাড়ি তৈরির কাজ করছেন। মুম্বই থেকে পেন্টার নিয়ে এসেছেন তিনি। তন্ময় বললেন, ‘‘রিয়ালিস্টিক কাজ করার চেষ্টা করছি। অনেকেরই মনে হতে পারে এই বাড়িটা ছিলই। সেখানে পুজো হচ্ছে।’’

তন্ময়ের দ্বিতীয় দায়িত্ব বেহালা ক্লাব। সেখানকার থিম নোট ‘বাংলা আমার মাতৃভাষা’।শিল্পী শেয়ার করলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাটা ব্রাত্য জায়গায় চলে গিয়েছে। সেটা মাথায় রেখে নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষা তুলে ধরতে চাইছি।’’

তন্ময় জানালেন, এই পুজোর বাজেট কম ছিল। সস্তায় কী উপকরণ ব্যবহার করা যায়, তা আগে থেকে ভাবতে হয়েছিল। এখানে উল নিয়ে কাজ করছেন তিনি। প্রায় ১৬ জন দেড়়মাস ধরে হাতে উল বুনে চলেছেন। আমরা যতই ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হই, বাংলা ভাষার আবেদন কোনওদিনও ভুলতে পারব না, এটাই এই পুজোর থিম।

এই প্রথম সল্টলেকে কাজ করছেন তন্ময়

আরও পড়ুন: ৪০ ফুটের বড় দুর্গা এ বার পাঁশকুড়ার পুজোয়​

তন্ময় নিজে সল্টলেকবি এল ব্লকের বাসিন্দা। কিন্তু এতদিন সল্টলেকের কোনও পুজোর কাজ তিনি করেননি। এই বছর হাতে রয়েছে সল্টলেক ইসি ব্লকের পুজো। এখানকার থিম নোট বাঁশের কেল্লা। প্রায়১৫ জন শিল্পী তৈরি করছেন এই পুজো মন্ডপ।

চলতি পুজোয় তন্ময়ের শিল্প নির্দেশনায় রিলিজ করতে চলেছে ‘ব্যোমকেশ গোত্র’, ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এর মতো ছবি। নিয়মিত চলছে প্রায় আট-১০টা সিরিয়াল। কিন্তু তার মধ্যেও পুজোর কাজ তাঁকে আলাদা তৃপ্তি দেয়। কারণ জানতে চাইলে হেসে বললেন, ‘‘রিয়ালিস্টিক কাজ শুটিংয়ে রোজ করি। কিন্তু দর্শকের সঙ্গে ডিরেক্ট কানেক্ট করার জায়গা পুজো প্যান্ডেল। সেই সুযোগটা পেলাম…।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন