মন্দিরবাজারেও রয়েছেন 'বড়মা'! কে এই দেবী, সেই সম্পর্কে জানতে হলে দয়ারামপুরের কালীপুজো সম্পর্কে জানতে হবে। তথ্য বলছে, বর্তমানে ১৪ হাত উঁচু এই বিশাল প্রতিমা আদতে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা এক ঐতিহ্যের প্রতীক! (প্রতীকী ছবি)
এই বিখ্যাত মন্দিরটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে অবস্থিত। স্থানীয় ভাবে এই এলাকার নাম দয়ারামপুর। তাই একে দয়ারামপুরের কালীপুজোও বলা হয়। নৈহাটি ছাড়াও এখানে মা কালী পূজিতা হন 'বড়মা' রূপে। প্রতিমা দর্শন করতে গেলে ভক্তদের ঘাড় উঁচু করে উপরে তাকাতে হয়! (প্রতীকী ছবি)
বিভিন্ন দাবি অনুসারে, দয়ারামপুরের এই কালীপুজো ইংরেজ আমলের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল। সেই সময় থেকেই এই পুজো ঘিরে মানুষের মধ্যে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। পুজো শুরুর সালটি ছিল ১৩৫২ বঙ্গাব্দ। ইংরেজি সাল অনুযায়ী যা ছিল ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ। (প্রতীকী ছবি)
স্বাধীনতার আগে থেকেই এই পুজোর বিশাল আয়োজন করা হয়। স্থানীয় মানুষ একত্রিত হয়ে কালীপুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। আগে গ্রামে দুর্গাপুজো বা অন্য বড় উৎসবের চল ছিল না। তাই কালীপুজো উপলক্ষে গ্রামবাসীরা আনন্দ উৎসবে মাততেন। (প্রতীকী ছবি)
প্রথম দিকে মাটির প্রতিমা গড়ে ধুমধাম করে পুজো হত। তৎকালীন প্রতিমার উচ্চতা ছিল আরও বেশি– প্রায় ১৬ হাত! পুজো শেষে এই বিশাল প্রতিমা নিরঞ্জনও করা হত। এই বিশালত্বের জন্যই এই কালী প্রতিমা 'বড়মা' নামে পরিচিত। (প্রতীকী ছবি)
পরবর্তী সময়ে প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। গ্রামে বিদ্যুতের তার ও টেলিফোনের তার পাতার পরে প্রতিমা নিয়ে যেতে অসুবিধা হত। অগত্যা বাধ্য হয়ে প্রতিমার উচ্চতা কিছুটা কমানো হয়। (প্রতীকী ছবি)
বর্তমানে কালী প্রতিমার উচ্চতা ১৪ হাত। এত উঁচু প্রতিমা দেখতে ভক্তদের ঘাড় উঁচু করতে হয়। প্রতি বছর কালীপুজোর আগে প্রতিমার গায়ে পড়ে নতুন রঙের প্রলেপ। (প্রতীকী ছবি)
বর্তমানে এই পুজোর জন্য একটি স্থায়ী মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে এখন স্থায়ী কালী মূর্তি বিরাজমান। এর ফলে পুজোর জৌলুস ও আকর্ষণ আরও বেড়েছে। এটি এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান। (প্রতীকী ছবি)
কালীপুজোর রাতে এখানে প্রচুর পুণ্যার্থী ভিড় করেন। হাজার-হাজার মানুষ প্রতি বছর এখানে আসেন। পুজোর সময় খুব ধুমধাম করে অন্নভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকে। অলঙ্কার পরিয়ে দেবীর বিশেষ সাজসজ্জা করা হয়। (প্রতীকী ছবি)
দয়ারামপুরের এই কালীপুজো প্রায় ৮০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য বহন করছে। এটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম সেরা কালীপুজো। মন্দির কমিটির সদস্যরা সবাইকে এই প্রতিমা দর্শনের আবেদন জানান। এটি শুধু পুজো নয়, স্থানীয় সংস্কৃতি ও মানুষের বিশ্বাসের প্রতীক। (প্রতীকী ছবি) (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।