বাঁকুড়ার সোনামুখীর অন্যতম প্রাচীন এবং জনপ্রিয় কালীপুজো হল মাইতো কালী।
এই পুজোর বয়স কারও মতে প্রায় ৪০০ বছর! কারও মতে আবার ২৫০ ছুঁই ছুঁই।
জনশ্রুতি অনুযায়ী এক বর্গী সেনাপতির হাত থেকে দেবীর কৃপাতেই নাকি প্রাণে বেঁচেছিলেন এই মন্দিরের বৃদ্ধ সেবায়েত।
কিন্তু কী ঘটেছিল আসলে? আর কেনই বা এই দেবীর নাম ‘মাইতো কালী’?
শোনা যায়, ১৭৮২ সালে সোনামুখী রানিরবাজারের কালী মন্দিরের সামনে জমায়েত করে এক দল বর্গী। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে আসা এই বর্গীদের উদ্দেশ্য ছিল সোনামুখীতে লুটপাট চালানো।
দিনের বেলাতেই এই অঞ্চলে কেউ আসত না। শুনশান এই জায়গায় মানুষ একা আসতে ভয় পেত।
তবে সে দিন সন্ধ্যায় অন্যান্য দিনের মতোই বৃদ্ধ সেবায়েত সন্ধ্যারতি করতে গিয়েছিলেন।
তিনি যখন প্রদীপ ঘরের সামনে রেখে তিনি যখন হাঁড়িকাঠ প্রণাম করছিলেন তখন বর্গি সর্দার ভাস্কর পন্ডিত তাঁকে বলি দিতে যান।
কিন্তু শূন্যেই খাঁড়া আটকে যায়। দৃষ্টি হারান তিনি। সবটা বুঝতে পারেন বৃদ্ধ সেবায়েত।
তিনি বোঝেন এ সবই দেবীর লীলা। তখন তিনি ঘট থেকে জল নিয়ে ছিটিয়ে দেন ভাস্কর পন্ডিতের উপর।
দৃষ্টি ফিরে পেয়ে, সুস্থ হয়ে তিনি জানতে চান এখানে কোন দেবী বিরাজ করছেন? জবাবে সেই বৃদ্ধ সেবায়েত জানান এখানে মা কালী রয়েছেন।
সেটা শুনে ভাস্কর পন্ডিত বলে ওঠেন, 'মা-ই তো কালী হ্যায়।' সেই থেকেই এটি লোকমুখে ‘মাইতো কালী’ নামে প্রচার পায়।
কার্তিক অমাবস্যায় পাঁচ দিন ধরে চলে পুজো।
এ দিন চক্ষুদান করা হল দেবীর। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)