Susanna Anna Maria Memorial

চন্দননগরে পুজো দেখতে যাচ্ছেন? ঘুরে আসতে পারেন সুসানার সমাধি থেকে! জানেন কে সেই রহস্যময়ী?

সত্যিই কি সাত স্বামীকে খুন করেছিলেন এই ওলন্দাজ সুন্দরী?

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ২০:২৩
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগর যাচ্ছেন? তবে ঠাকুর দেখার পাশাপাশি এই স্মৃতিসৌধটি ঘুরে দেখতে পারেন। দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে হুগলির চুঁচুড়ায় গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড সংলগ্ন খাদিনা মোড় ও তালডাঙার মাঝে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছে এক ওলন্দাজ সুন্দরীর স্মৃতিসৌধ! আপনি কি জানেন, এই স্মৃতিসৌধটিই বলিউড সিনেমা 'সাত খুন মাফ'-এর কেন্দ্রীয় চরিত্রের নেপথ্যের অনুপ্রেরণা? যাঁর কথা জানার পরই প্রখ্যাত সাহিত্যিক রাস্কিন বন্ড লিখেছিলেন, 'সুসানাস সেভেন হাসব্যান্ডস' এবং সেই কাহিনি অবলম্বন করেই ২০১১ সালে বিশাল ভরদ্বাজ তৈরি করেছিলেন 'সাত খুন মাফ'! যার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া।

Advertisement

'সাত সাহেবের বউ' - যে জনশ্রুতি কিংবদন্তী তৈরি করে!

এই স্মৃতিসৌধটি স্থানীয়দের কাছে 'সাত সাহেবের বউয়ের কবর' নামেই পরিচিত! কথিত আছে, অত্যন্ত সুন্দরী ও ব্যক্তিত্বময়ী ডাচ রমণী - সুসানা আন্না মারিয়া - সাত বার বিয়ে করেছিলেন এবং বিয়ের পর তাঁর প্রত্যেক স্বামীই রহস্যজনকভাবে অন্তর্হিত হন। জনশ্রুতি সুসানাকে 'সাত স্বামীর হত্যাকারী' হিসাবে চিহ্নিত করলেও, এর স্বপক্ষে কোনও প্রামাণ্য নথি পাওয়া যায়নি।

Advertisement

লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিস রেকর্ড অনুযায়ী, এই ওলন্দাজ মহিলার আসল নাম সুসানা আন্না মারিয়া এবং তাঁর বিবাহ হয়েছিল দু'বার। সেই অনুসারে - তাঁর প্রথম স্বামী ছিলেন বাংলার ডাচ ডিরেক্টর পিটার ব্রুয়েস এবং দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন ইংরেজ ব্যবসায়ী থমাস ইয়েটস।

শোনা যায়, ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে সুসানার মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছা অনুসারেই উল্লেখিত স্মৃতিসৌধটি তাঁর প্রিয় বাগানবাড়ি 'আয়েশবাগ'-এ নির্মাণ করা হয়। স্থাপত্যের দিক থেকে এটি ইন্দো-ইউরোপীয় শৈলীর এক চমৎকার নিদর্শন।

স্থাপত্য: স্মৃতিসৌধটির চার দিক খোলা এবং চারদিক থেকেই সিঁড়ি উঠে গিয়েছে। এর গঠন অষ্টভূজাকার এবং এর চূড়ায় ইউরোপীয় ধাঁচের এক অর্ধগোলাকৃতি গম্বুজ ও তার উপর একটি চূড়া রয়েছে। এর এই গঠনের জন্যই স্থানীয়দের কাছে এটি 'ডাচ মন্দির' নামেও পরিচিত।

লিপি: গম্বুজের গায়ে ওলন্দাজ ভাষায় সুসানার নাম ও মৃত্যুর তারিখ খোদাই করা আছে।

উইল ও দানধ্যান: সুসানার উইল থেকে জানা যায়, তিনি অত্যন্ত দান-ধ্যান করতেন। তাঁর নিজের এবং স্বামীদের সমাধিসৌধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মোট ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছিলেন সুসানা। সম্পত্তির উদ্বৃত্ত অর্থ দরিদ্রদের দান করার জন্য উইল করে যাওয়ায়, স্থানীয় ভারতীয়দের মধ্যে তিনি 'রানিমা' নামেও পরিচিত ছিলেন। তাই, এই সৌধটি 'রানি আন্না মারিয়ার কবর' নামেও পরিচিত।

জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে আপনি যদি চন্দননগর যান, তা হলে আসা-যাওয়ার পথে এই সমাধি ঘুরে দেখতে পারেন। কে বলতে পারে, আপনিও হয়তো সেখানে কোনও নতুন রহস্যের সন্ধান পেয়ে যাবেন! কিংবা, পাবেন নতুন কোনও রচনার রসদ!

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement