প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিন্হা।
বাংলাদেশে দেশছাড়া হওয়া প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত কে করতে পারে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট নজির-বিহীন ভাবে বিবৃতি জারি করে ছুটি নিয়ে বিদেশ সফরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিন্হার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার ও অনিয়মের ১১ দফা অভিযোগ এনেছে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আইন মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক কর্তাদের বদলি করেছে। কিন্তু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, সিন্হার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলির তদন্ত করা হবে।
কিন্তু প্রধান বিচারপতির মতো সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত কে করবে, তা নিয়েই বিতর্ক উঠেছে। আগে বিচারপতি নিয়োগ, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত এবং অপসারণের দায়িত্ব ছিল জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে। কিন্তু সরকার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে জুডিসিয়াল কাউন্সিল ভেঙে দিয়ে এই দায়িত্ব সংসদের হাতে নিয়ে আসে। কিন্তু তা নিয়ে মামলার পরে হাইকোর্ট সরকারের ওই পদক্ষেপ খারিজ করে দেয়। সিন্হার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল আদালতও হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে, যা নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় প্রধান বিচারপতির।
আরও পড়ুন: বিতর্কের মধ্যেই দীর্ঘ ছুটি নিয়ে দেশ ছাড়লেন প্রধান বিচারপতি
কিন্তু এই রায়ের পরে সংসদের হাতে কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত করার এক্তিয়ার আর নেই। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে সরকার কাকে দিয়ে সিন্হার বিরুদ্ধে তদন্ত করাবে?
সুপ্রিম কোর্টের এক বর্ষীয়ান আইনজীবীর ব্যাখ্যা— জানুয়ারির শেষ দিনে মেয়াদ শেষ হবে সিন্হার। তার পরে দুর্নীতি দমন কমিশনকে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করানো যেতে পারে। আর তার আগেই যদি এই কাজ করা হয়, তবে সে বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তই শেষ কথা হতে পারে। কারণ বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদাধিকারী তিনিই।