International

সন্ত্রাসীদের অপচেষ্টা জলে, আসেমের সব দেশ বাংলাদেশের পাশে

বিশ্বের চোখে বাংলাদেশের উজ্জ্বলতা বেড়েছে বই কমেনি। উপর্যুপরি সন্ত্রাসী হামলায় নিষ্প্রভ হওয়ার শঙ্কা ছিল। সংশয় ছিল স্বয়ং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও। সেটা কেটেছে মঙ্গোলিয়ায় ১১তম এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ১৫:৪২
Share:

.

বিশ্বের চোখে বাংলাদেশের উজ্জ্বলতা বেড়েছে বই কমেনি। উপর্যুপরি সন্ত্রাসী হামলায় নিষ্প্রভ হওয়ার শঙ্কা ছিল। সংশয় ছিল স্বয়ং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও। সেটা কেটেছে মঙ্গোলিয়ায় ১১তম এশিয়া-ইউরোপ মিটিং (আসেম) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর। উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছেন, সবার দৃষ্টি বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে। উটকো সন্ত্রাসকে তাঁরা পাত্তাই দিচ্ছেন না। সন্ত্রাসী উপদ্রব কোন দেশে নেই। নয়ছয় করার ছক তাদের সর্বত্র। নাশকতায় অস্তিত্ব জাহিরের প্রয়াস। তাতে গণতন্ত্র নস্যাৎ করা কী সম্ভব। বাংলাদেশই তার প্রমাণ। ১ জুলাই ঢাকার গুলশনে সন্ত্রাসী হামলার পরই গোটা দেশ ঐক্যবদ্ধ। নীতিগত বিভেদ ভুলে সব রাজনৈতিক দল এক মঞ্চে। এক জাতি এক প্রাণ। সব চক্রান্ত ম্লান। সন্ত্রাসীরা জাপানি অতিথিদের হত্যা করে ভেবেছিল, বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সব সম্পর্ক শেষ। জাপান মুখ ফেরাবে। সাহায্যের হাত গুটোবে। হয়েছে উল্টো। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হাসিনাকে কথা দিয়েছেন, সহযোগিতার হাত সঙ্কুচিত হবে না। যতটা প্রসারিত ছিল, ততটাই থাকবে। জাইকা যেমন সাহায্য করছিল, তেমনই করবে। যে ৬০০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা, তাও দেওয়া হবে। ঢাকার মেট্রো রেল নির্মাণে জাপানের বিশেষজ্ঞরা বিশেষ ভরসা। তাঁদের অনেকেরই মৃত্যু গুলশন হামলায়। তা সত্ত্বেও পিছপা নয় প্রধানমন্ত্রী আবে। চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা তাঁরও। বিপদে বাংলাদেশের হাত আরও শক্ত করে ধরতে চাইছেন। যাতে হাসিনা বুঝতে পারেন, তিনি একা নন।

Advertisement

মঙ্গোলিয়া দেশটা বড় রুক্ষ। চাষবাস সামান্য। পশুপালন ভরসা। দক্ষিণের গোবি মরুভূমির গরম হাওয়া রোখার উপায় নেই। সবুজ দেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনার আকর্ষণ তাই বোধহয় মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ডেনডেভ তেভিসডাগাদার কাছে সবচেয়ে বেশি। কৃষিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতিতে তিনি মুগ্ধ। উত্তরে রাশিয়া, দক্ষিণে চিনকে সামলাতে হয় তাঁকে। রাজনৈতিক জটিলতার জট ছাড়ানোর অভ্যাস তাঁর আছে।

সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি অন্য নেতাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলেছেন হাসিনা। ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি হাসিনার সঙ্গে বাক্য বিনিময়ে সন্তুষ্ট। বাংলাদেশের উন্নয়নে সঙ্গী হওয়ার প্রতিশ্রুতি তিনিও দিয়েছেন। সন্ত্রাস দমনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে হাসিনা তাঁকে জানিয়েছেন। সব সাহায্যে রাজি রেনজি। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি আনাতোলিয়েভিচ মেদভেদেভের সঙ্গেও হাসিনা কথা বলেছেন। মত বিনিময় সৌহার্দ্রের বার্তা স্পষ্ট। হাসিনা তাঁকে এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একাত্তরের মুক্তি যুদ্ধে বাংলাদেশকে শায়েস্তা করতে আমেরিকা সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল। রুখেছিল তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন, যার অস্তিত্ব ছিল বর্তমান রাশিযাকে ঘিরেই। সোভিয়েত চেয়ারম্যান অব দ্য কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স অ্যালেক্সি কোসিগিনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ছিল হার্দিক সম্পর্ক।

Advertisement

জার্মানির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালই। মাঝে মধ্যে তাঁদের হঠকারি সিদ্ধান্ত বিভ্রান্তি জাগালেও, জার্মানি যে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে সেটা হাসিনাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলার অ্যাঞ্জেলা মারকেল। তাঁকেও ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন হাসিনা। বাংলাদেশের গা ছুঁয়ে মায়ানমার। সুখে দুঃখে জড়িয়ে দু’টি দেশ। মায়ানমারের ইরাবতী নদীতেও ইলিশ মেলে। পদ্মার ইলিশের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারলেও ঢাকা, কলকাতায় ইলিশ পাঠিয়ে তারা বন্ধুত্ব বজায় রাখে। মায়ানমারের রাষ্ট্রপতি থেন সেইনের সঙ্গে কথা হয়েছে হাসিনার। সেইন আর মায়ানমারের শাসক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির সভানেত্রী আউং সান সুচিকে ঢাকা সফরের আহ্বান হাসিনার। ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারিকেও বাংলাদেশে আসতে বলেছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তো হাসিনার বড় ভাইয়ের মতো। আনসারিকেও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বাঁধতে চান হাসিনা।

আরও পড়ুন:
সন্ত্রাসের তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচন ডিসেম্বরেই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন