বাংলাদেশের অধিকাংশ মন্দিরের সেবায়েত ও পুরোহিতরা খুন হওয়ার আতঙ্কে। উড়ো চিঠি পাঠিয়ে একের পর এক মন্দিরের পুরোহিত এবং আশ্রমের সেবায়েতকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্ক এতটাই যে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরচ্ছেন না পুরোহিতরা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছ’মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ছ’জন সেবায়েত ও পুরোহিত খুন হয়েছেন। হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে আরও দু’জনকে। তার পর গত ১৫ দিনে ১৬ পুরোহিত খুনের হুমকি পেলেন।
পঞ্চগড়, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, রংপুর, পিরোজপুর, নোয়াখালি, মৌলভিবাজার, বাগেরহাট, মাগুরা, ভোলা, পটুয়াখালি ও পাবনায় হুমকির ঘটনাগুলি ঘটেছে। কোথাও হমকি পেয়েছেন মঠের অধ্যক্ষ বা সন্ন্যাসী, কোথাও সেবায়েত বা পুরোহিতকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শেরপুরের নকলায় মসজিদ, ইউএনও অফিস, থানা ভবন ও দুই আওয়ামি লিগ নেতার বাড়ি গ্রেনেড ও বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার রাত ৯টা নাগাদ নকলা উপজেলা আওয়ামি লিগের নেতা অনিল কুমার রায়ের বাড়িতে আইএস ও ইসলামি ছাত্র শিবিরের নামে ওই চিঠিটি পৌঁছয়। নকলা থানায় অভিযোগও জমা পড়েছে।
রংপুরের কলেজ রোডে আনন্দময়ী সেবা আশ্রমের পুরোহিত বিজয় চক্রবর্তীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার তিনি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পিরোজপুর শহরের কেন্দ্রীয় কালী মন্দির ও পালপাড়া দুর্গা-কালী মন্দিরের পুরোহিতকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার রাতে ও গতকাল সোমবার সকালে মন্দিরে হুমকি সংক্রান্ত চিঠি আসে। দুর্গা-কালী মন্দিরের সভাপতি নরেন্দ্র নাথ জানান, রাতে পুরোহিত রুহিদাস মন্দিরে ঢুকে চিঠি পড়ে থাকতে দেখেন। চিঠিতে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সকালে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের পুরোহিত সলিল মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘সোমবার সকালে মন্দিরে এসে চিঠি দেখতে পাই। খুলে দেখি তাতে আমাকে জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।’’ সদর থানার ওসি জানান, বিষয়টি তাঁদের নজরদারিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন:গুলশন হামলায় চার অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ, পড়ুয়া ধৃত