Aroop Biswas Resign

সরকার ‘সক্রিয়’! দেখালেন মমতা, এক ধাক্কায় ব্যবস্থা ডিজি, পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে, ‘ছবি বিশ্বাস’ অরূপও আর নেই ক্রীড়াদায়িত্বে

শাসকদলের অন্দরে এবং প্রশাসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চমক তৈরি করেছে তদন্ত চলাকালীন ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে অরূপের চিঠি। যে চিঠিতে সোমবারের তারিখ (১৫ ডিসেম্বর) উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:১০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শনিবার দুপুরে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল যুবভারতী। সেই ঘটনার জেরে সরকার তথা প্রশাসনের উপর ক্রমশ ‘চাপ’ বাড়ছিল। ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মাথায় মঙ্গলবার সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনে কার্যত ঝড় বইয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে একের পর এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য রাজনীতি এবং প্রশাসনের অন্দরমহল। হতচকিত রাজ্যবাসীও।

Advertisement

ঈষৎ ‘রংফুটে’ বিরোধীরা। গত কয়েকদিনের তুলনায় খানিকটা হাঁপ ছেড়েছে শাসক তৃণমূল। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা দেখিয়েছেন, তাঁর সরকার ‘সক্রিয়’। যুবভারতী কাণ্ডকে ‘লঘু’ নজরে দেখছে না তাঁর সরকার। সর্বোপরি, তাঁর সরকার কাউকে আড়াল করারও চেষ্টা করছে না। রাজ্যের শাসক শিবিরের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, ‘‘আরও সাত-দশ দিন পরে বিষয়টা এমনিতেই ধামাচাপা পড়ে যেত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তা চাননি। তিনি দেখাতে চেয়েছেন, তাঁর সরকার সক্রিয়। এমন একটা নিন্দনীয় ঘটনা, যা রাজ্যের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করেছে, সরকারের বিরুদ্ধে গিয়েছে। তার বিচার করতে বসে রাজ্যপুলিশের ডিজি থেকে ক্রীড়ামন্ত্রী— কাউকেই রেয়াত করা হয়নি। মনে রাখতে হবে, সামনে বিধানসভা ভোট।’’

তবে রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও প্রশাসনিক কারণও রয়েছে। রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ আমলার বক্তব্য, যুবভারতীর ঘটনায় গঠিত কমিটির ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলা আদালত গ্রহণ করেছে। চলতি সপ্তাহেই সেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে, এই ধরনের শুনানিতে প্রথমেই আদালত রাজ্য সরকারের কাছ থেকে হলফনামা চায়। সে কথা মাথায় রেখেই এমন পদক্ষেপ আগে থেকেই করে রাখা হল। যাতে সরকার হলফনামা দিয়ে বলতে পারে যে, কমিটি নিরপেক্ষ। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার পদক্ষেপও করেছে। এর ফলে আদালত যাতে পৃথক কোনও তদন্ত কমিটি না-গড়ে, তারও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে রাখা গেল।

Advertisement

রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের মধ্যে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে চমকপ্রদ অরূপের চিঠি লিখে ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাওয়া। বস্তুত, তৃণমূলের মোট তিনটি মেয়াদের মধ্যে অরূপই হলেন একমাত্র মন্ত্রী, যিনি কোনও কেলেঙ্কারির পর নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাঁর সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলেন।

অরূপের চিঠির পরে বিরোধীদের মোকাবিলায় দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে নেমেছে তৃণমূল। দলের নেতারা বলছেন, ১৯৮০ সালের ১৬ অগস্ট যখন ইডেনে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে ১৬ জন দর্শকের প্রাণ গিয়েছিল, তখন জ্যোতি বসু ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্র এবং ক্রীড়া দফতরও ছিল তাঁরই হাতে। কিন্তু তিনি এ ভাবে তদন্ত চলাকালীন তাঁর দফতর থেকে অব্যাহতি নেননি। দ্বিতীয়ত, ১৯৯৬ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইডেনে ভারত-শ্রীলঙ্কা সেমিফাইনাল ম্যাচ দর্শকের ক্ষোভে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। তখন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র এবং পুলিশমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু তিনিও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেননি। উত্তরপ্রদেশে মহাকুম্ভের মহাবিপর্যয় বা আইপিএলজয়ী আরসিবি-র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনার পর কংগ্রেস বা বিজেপি সরকার এমন প্রশাসনিক পদক্ষেপ করেনি। কোনও মন্ত্রী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেননি। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘ওরা করতে পারেনি। কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি! ওরা পারেনি। কিন্তু মমতা’দি রাজধর্ম পালন করেছেন।’’

শনিবার যুবভারতী কেলেঙ্কারির অব্যবহিত পরেই তার তদন্তের জন্য প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মমতা। সেই কমিটি কাজ শুরু করে রবিবার থেকেই। সোমবার রাতেই জানাজানি হয়, কমিটির প্রধান প্রাক্তন বিচারপতি মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করবেন। সেখানেই প্রাক্তন বিচারপতি জানিয়ে দেন, কমিটি তাদের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করেছে। কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করার।

ওই তথ্য প্রকাশ্যে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই রাজ্যপুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার এবং বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমারকে শো কজ় করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ (যিনি বিচারপতি রায়ের নেতৃত্বাধীন কমিটিরও সদস্য)। পাশাপাশি, বিধাননগর পুলিশের ডিসি অনীশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। বলা হয়, তদন্ত যত দিন চলবে, তত দিন নিলম্বিত (সাসপেন্ড) থাকবেন তিনি। ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিংহকেও শো কজ় করা হয়।

ওই ঘোষণার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আচম্বিতে প্রকাশ্যে আসে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে লেখা একটি চিঠি। যাতে তিনি লিখেছেন, যুবভারতীকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তিনি ক্রীড়ামন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি চাইছেন। সে চিঠির তারিখ সোমবার, ১৫ ডিসেম্বরের। নবান্ন থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী ওই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। যত দিন না যুবভারতীকাণ্ডের তদন্ত শেষ হয়, তত দিন পর্যন্ত ক্রীড়া দফতর তাঁর হাতে থাকবে।

ছবিতেই অবিশ্বাস

যুবভারতীকাণ্ডের সময় রাজ্য প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে অরূপকেই সবচেয়ে বেশি লিয়োনেল মেসির পাশে পাশে দেখা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে মেসির ছবি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। সে ভাবে বলতে গেলে গোটা যুবভারতী কেলেঙ্কারির ‘মুখ’ হয়ে গিয়েছেন অরূপই। কারণ, ঘটনার সময় যাঁরা সেখানে হাজির ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ধারে-ভারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনি। প্রথমত, তিনি রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী। দ্বিতীয়ত, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার ওজনদার সদস্য। তাঁর হাতে ক্রীড়া ছাড়াও বিদ্যুৎ এবং আবাসন দফতরের দায়িত্ব রয়েছে। জটলায় মেসি ঢাকা পড়ে যাওয়ায় যখন গোটা গ্যালারি উত্তাল, তখনই হাতে হাতে মোবাইলে ঘুরতে শুরু করে মেসির পাশে অরূপের হাসিমুখের ছবি। ফলে শুরু থেকেই গোটা কেলেঙ্কারির দায় গিয়ে পড়ে অরূপের ঘাড়ে। পাকেচক্রে তিনিই হয়ে যান মুল ‘খলনায়ক’। অথচ, অরূপ ছাড়াও ওই জটলায় আরও অন্তত ২০০ লোক ছিলেন। মঙ্গলবার অরূপের ক্রীড়ামন্ত্রক থেকে অব্যাহতি চেয়ে লেখা চিঠি প্রকাশ্যে আসার পরে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বলেন, ‘‘সিট বা তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে দেখুক না! মেসির সঙ্গে ছবি তোলা ছাড়া দাদার আর কোনও দোষ আছে বলে কেউ দেখাতে পারবে না। আর রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে উনি মেসির পাশে থাকবেন না তো কে থাকবেন!’’ তবে অরূপের ওই ঘনিষ্ঠও মেনে নিয়েছেন যে, মেসির সঙ্গে হাস্যমুখের ছবির সুবাদেই অরূপ গোটা যুবভারতী কেলেঙ্কারির ‘মুখ’ হয়ে গিয়েছেন। ছবির প্রতি তাঁর অমোঘ আকর্ষণের কারণে পরিচিতেরা রসিকতা করে যাঁকে ‘ছবি বিশ্বাস’ বলে ডাকতেন, তাঁর ছবিতেই জনতার ক্ষোভ এবং অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।

কমিটি ‘লোকদেখানো’ নয়

শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা তদন্ত কমিটি গঠনের পরে বিরোধী শিবির অভিযোগ করেছিল, মমতার কমিটি গঠন লোকদেখানো। ওই কমিটি আসলে ঠুঁটো জগন্নাথ। আসলে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দিতে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এ বার এই কমিটি অন্যান্য অনেক প্রশাসনিক কমিটির মতোই দীর্ঘসূত্রিতার নিয়ে কাজ করবে, যাতে গোটা বিষয়টাই ক্রমশ মানুষের স্মৃতি থেকে বেরিয়ে যায় এবং অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রশাসক মমতা সেই ধারণারও মূলে কুঠারাঘাত করতে চেয়েছেন। শনিবার দুপুরে গঠিত কমিটি মঙ্গলবার সকালে তাদের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়ে দিয়েছে, এমন উদাহরণ প্রশাসনে বিরল। ফলে তদন্ত কমিটি নিয়ে যে ‘নেতিবাচক’ ধারণা তৈরির চেষ্টা হয়েছিল, মমতা তা-ও ভেঙে দিতে পেরেছেন।

সকলেই সমান

প্রশাসন এবং শাসকশিবিরের অন্দরে এই তথ্য সকলেই জানেন যে, রাজ্যপুলিশের ডিজি রাজীব এবং মন্ত্রী অরূপ মমতার ‘আস্থাভাজন’। কিন্তু তাঁরা দু’জনেই ‘শাস্তির’ কবলে পড়েছেন। ঘটনার দিন যুবভারতীতেই রাজ্য প্রশাসনের তরফে প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজীব। তিনি গোটা ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। মেসি সফরের মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তকে আটক (পরে গ্রেফতার করা হয়) করার খবর দিয়ে তিনি জানান, দর্শকদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু পাশাপাশিই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও প্রশ্নের জবাব দেবেন না। রাজীব উঠে যাওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাব দেন অন্য শীর্ষ পুলিশকর্তা জাভেদ শামিম। যুবভারতী বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের আওতায়। ফলে ওই ঘটনার আঁচ যে বিধাননগরের পদস্থ পুলিশকর্তাদের উপর পড়বে, তা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। কিন্তু রাজীবের উপরেও যে শো কজ়ের খাঁড়া নেমে আসবে, তা অধিকাংশই ভাবতে পারেননি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা সেই সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। কারণ, ঘটনার দায়ভার পুলিশের উপরেও বর্তায়। ফলে রাজ্যপুলিশের সর্বোচ্চ অফিসারকেও শাস্তি পেতে হয়েছে। বস্তুত, মঙ্গলবারের সিদ্ধান্তে মমতা এই প্রচারেরও মোকাবিলা করতে চেয়েছেন যে, শতদ্রু দত্তকে ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত মন্ত্রী বা পুলিশকে আড়াল করা হচ্ছে। দলের এক প্রভাবশালী নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সকলকেই একই ফ্রেমে এনে ফেলেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কোনও ব্যক্তিবিশেষকে দেখে না।’’

‘ইস্তফা’ না ‘অব্যাহতি’?

শাসকদল এবং প্রশাসনের অন্দরে সবচেয়ে বেশি চমক তৈরি করেছে ক্রীড়া দফতর থেকে ‘অব্যাহতি’ চেয়ে মমতাকে অরূপের চিঠি। অনেকের দাবি, অরূপকে ওই চিঠি লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, ওই ঘটনায় জনমানসে অরূপ সম্পর্কে তুমুল ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যদিও মন্ত্রীর কাছের লোকজনের বক্তব্য, বিষয়টি আদৌ তা নয়। অরূপ নিজে থেকেই ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব থেকে তদন্ত চলাকালীন অব্যাহতি চেয়েছেন। অরূপের এক ঘনিষ্ঠের কথায়, ‘‘চিঠিতে কোথাও কিন্তু ইস্তফার কথা লেখা নেই। লেখা আছে, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তিনি ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অব্যাহতি চাইছেন। আবার মুখ্যমন্ত্রী যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে তিনি লিখেছেন, যত দিন না তদন্ত সম্পূর্ণ হবে, ততদিন ক্রীড়া দফতর তিনি নিজের হাতে রাখবেন। অর্থাৎ, তিনি মন্ত্রিসভার অন্য কারও হাতে ক্রীড়া দফতরের দায়িত্ব দেননি। যা থেকে এটা স্পষ্ট যে, এটা মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফার চেয়েও অনেক বেশি দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি। এখানে সাময়িক শব্দটা গুরুত্বপূর্ণ।’’ ক্রীড়া দফতর থেকে অব্যাহতি নিয়েছএন বটে। কিন্তু অরূপ একইসঙ্গে রাজ্যের বিদ্যুৎ এবং আবাসন দফতরেরও মন্ত্রী। ফলে তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় থাকছেন। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘অরূপ বিশ্বাসকে শুধুমাত্র খেলাধুলার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলে চলবে না। মন্ত্রিসভা থেকেই অব্যাহতি দিতে হবে। কারণ, যদি তিনি মন্ত্রিত্বে থাকেন, তা হলেই তিনি প্রভাব খাটাবেন।’’

মঙ্গলের আগে সোম

সোমবার অরূপ তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র টালিগঞ্জের ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লিতে গিয়েছিলেন নবনির্মিত একটি শিবমন্দির উদ্বোধন করতে। শনিবার যুবভারতীর ঘটনার পর রবিবারই অরূপের কেন্দ্রে সিপিএম কয়েকশো লোক নিয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাঁর ইস্তফার দাবিতে চারটি মিছিল করেছিল। তারই প্রতিক্রিয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় অরূপ প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, ‘‘অনেকে অনেক কথা বলছেন! আমি এঁদের কিচ্ছু বলব না। শুধু বলব, সময় সব উত্তর দেবে। যে দিন অঞ্চলের মানুষ চাইবেন, সে দিন পদত্যাগ করব। তার আগে কারও ক্ষমতা নেই যে পদত্যাগ করাতে পারে। সারা জীবন মরার আগে পদত্যাগ করলেন না! বাংলাটাকে রসাতলে পাঠিয়ে দিলেন! আর এখন মিছিল করছেন?’’ তার পরেই মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এল তাঁর হাতে লেখা চিঠিটি। যেখানে তারিখ আছে সোমবারেরই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement