মৌলবাদ রুখতে দিল্লিকে চায় ঢাকা

ভারতীয় সাংবাদিকদের সাদরে আপ্যায়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। বলেছেন, ‘‘উন্নয়নের পথে চিন আমাদের নতুন বন্ধু। কিন্তু ভারতের বন্ধুত্বের সঙ্গে তার তুলনাই হয় না। ভারত সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বন্ধু।’’ শুধু এক বার, ২০০১-এ ভারতের সহযোগিতা যে তিনি পাননি, তা-ও উল্লেখ করতে ছাড়েননি হাসিনা।

Advertisement

অনমিত্র চট্টোপাধ্যায়

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৯
Share:

তিস্তার বাড়তি পানি মেলেনি। রোহিঙ্গা সমস্যায় সে ভাবে পাশে পাওয়া গেল না বলে রয়েছে অভিমানও। বিপুল বাণিজ্য অসাম্য নিয়ে আক্ষেপেরও অন্ত নেই। কিন্তু ভারতের বন্ধুত্বকে কোনও মূল্যেই হারাতে চায় না বাংলাদেশ। শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাই বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদ মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে ভারতকে ছাড়া আমাদের চলবে না। আমাদের স্বাধীনতায় ভারতীয় সেনাদের রক্তঋণ রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ সে ঋণ ভুলতে পারেন না!’’

Advertisement

দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারি স্তরে তৎপরতা তো রয়েছেই। তার পাশাপাশি মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে দু’দেশের সাংবাদিকদের মত বিনিময়ের মতো ‘ট্র্যাক টু’ কূটনীতির একটি উদ্যোগ নজর কেড়েছে ঢাকার একটি পরিচিত ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ ইনস্টিউট অব কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (আইসিএলডিএস)-এর উদ্যোগে। তিনটি ভাগে গত ন’বছরে দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সমন্বয় নিয়ে আলোচনায় যেমন উঠে এসেছে ভিন্নমতের বিষয়গুলি, তেমনই সেগুলি কাটিয়ে ওঠার কিছু পন্থা প্রকরণও। ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা নিজে হাজির থেকে গোটা একটি বেলা আলোচনা শুনেছেন, নোটও নিয়েছেন। ১৯ থেকে ২১— তিন দিনের অনুষ্ঠানে আগাগোড়া উপস্থিত থেকেছেন হাইকমিশনের পদস্থ অফিসারেরা।

ছিলেন বাংলাদেশের সিনিয়র মন্ত্রী ও আমলারা। উপস্থিত ভারতীয় সাংবাদিকদের সাদরে আপ্যায়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। বলেছেন, ‘‘উন্নয়নের পথে চিন আমাদের নতুন বন্ধু। কিন্তু ভারতের বন্ধুত্বের সঙ্গে তার তুলনাই হয় না। ভারত সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বন্ধু।’’ শুধু এক বার, ২০০১-এ ভারতের সহযোগিতা যে তিনি পাননি, তা-ও উল্লেখ করতে ছাড়েননি হাসিনা।

Advertisement

ওবায়দুল কাদেরের কথায়, ‘‘মনে রাখা দরকার, আমরা না-থাকলে ভারতের পশ্চিমেও থাকবে পাকিস্তান, পূবেও সেই— পাকিস্তানই!’’ তাঁর কথায়, ভোটের তাগিদে কখনও কখনও কিছু নমনীয় পথ সরকারকে নিতে হচ্ছে। তবে কাদেরের কথায়, ‘‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা কখনও মৌলবাদের সঙ্গে আপস করবেন না, এ ব্যাপারে আপনারা চোখ বুজে ভরসা রাখুন।’’ আইসিএলডিএস-এর এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রশিদের কথায়— যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল, তাকে ধরে রাখাই আজ এ দেশের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষের বড় বল-ভরসা বন্ধু ভারতের পাশে থাকাটা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন