জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে এলে পুনর্বাসনের আশ্বাস সরকারের
Gulshan Cafe Attack

গুলশন হামলার অস্ত্র সরবরাহকারী বড় মিজান ঢাকায় গ্রেফতার

নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী চক্রের প্রধান পাণ্ডা 'বড় মিজান'কে (৬০) অবশেষে জালে আটকানো সম্ভব হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বনানী থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ২৩:৩২
Share:

নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী চক্রের প্রধান পাণ্ডা 'বড় মিজান'কে (৬০) অবশেষে জালে আটকানো সম্ভব হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বনানী থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ। তাকে আদালতে পাঠিয়ে ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার আবেদন করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, গুলশনের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড ও পিস্তল বড় মিজানের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করে ঢাকায় আনা হয় এবং বসুন্ধরার তানভির কাদেরীর ফ্ল্যাটে তামিম চৌধুরীর কাছে পৌঁছনো হয়।
জানা গিয়েছে, বড় মিজান নব্য জেএমবিতে যোগ দেওয়ার আগে "জুন্দ আল তাওহীদ" নামের জঙ্গি সংগঠনের প্রধান সামরিক কমান্ডার ছিলেন। পরবর্তী সময়ে সে তামিম চৌধুরীর মাধ্যমে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়।
পুলিশের মতে, এই মিজানের নেতৃত্বেই নব্য জেএমবির চাপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত কেন্দ্রিক অস্ত্র ও গ্রেনেড তৈরির উপকরন, ডেটোনেটর ও জেল চোরাচালানের একটি চক্র বা সিন্ডিকেট তৈরি হয়। মুলত তারাই দীর্ঘদিন ধরে নব্য জেএমবির প্রায় সকল অস্ত্র, ডেটোনেটর ও জেল সরবরাহ করছিল।
এ দিন জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন তাঁর সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিপথগামী কোনও সদস্য জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে এলে তাকে আইনি সহায়তা দিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
জঙ্গিবাদ বন্ধে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু সফল অভিযানে শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি নেতা-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গ্রেফতার ও নিহত হয় এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এসব অভিযানের ফলে বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গি দমনে এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সক্ষম হয়েছে। একাদশ আসেম সম্মেলন ও ৭১ রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের নেতারাও বাংলাদেশের জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জঙ্গিবাদবিরোধী ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে অনেক জঙ্গি সদস্য ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। তিনি জানান, বিভিন্ন সন্দেহভাজন নিখোঁজ ব্যক্তি ও পলাতক জঙ্গিদের সঠিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রচুর প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। অনেকে তাদের গৃহেও ফিরে এসেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলির অনলাইনভিত্তিক প্রচারে গোয়েন্দা নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে। যাতে জনগণের মধ্যে জঙ্গিবাদী মতাদর্শের র‌্যাডিক্যালাইজেশন না ঘটে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জঙ্গিবাদবিরোধী ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, মসজিদের ইমাম, আলেম সমাজ, শিক্ষক-ছাত্রসমাজ, অভিভাবক, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলার জন্য একটি যুগোপযোগী এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) তৈরি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement