দু’মাস আগে সাপের ছোবলে মৃত্যু হয় তামিলনাড়ুর গণেশনের। এ বার ওই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। — প্রতীকী চিত্র।
প্রথমে পুলিশ মনে করছিল সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু প্রায় দু’মাস পরে দেখা গেল, খুন করা হয়েছে প্রৌঢ়কে। বিমার তিন কোটি টাকা পাওয়ার জন্য তামিলনাড়ুর ওই প্রৌঢ়কে তাঁর পুত্রেরা খুন করেছেন বলে অভিযোগ।
ঘটনাটি ঘটে গত ২২ অক্টোবর। সাপের ছোবলে মৃত্যু হয় তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর এলাকার বাসিন্দা গণেশনের। ৫৬ বছর বয়সি গণেশন তামিলনাড়ুর এক স্কুলে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে সাপের ছোবলে মৃত্যু ধরে নিয়েই ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু পরে অনুসন্ধানে উঠে আসে, গণেশনের পুত্রেরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বেশ কিছুটা দেরি করেছিলেন। সেখান থেকেই সন্দেহ জাগে পুলিশের।
তিরুভাল্লুরের পুলিশ সুপার বিবেকানন্দ শুক্ল জানান, সাধারণত যখন কাউকে সাপে ছোবল দেয়, তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা আগে করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রৌঢ়ের পুত্রেরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অকারণে দেরি করেছিলেন। বাড়ির কাছেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল। কিন্তু তাঁরা প্রৌঢ়কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করেন তাঁরা। এখান থেকেই পুলিশের সন্দেহ জাগতে শুরু করে বলে জানান শুক্ল।
পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক ওই প্রৌঢ়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তে উঠে আসে, গণেশনকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই তাঁর পুত্রেরা বিমা সংস্থায় ফোন করেন। কী ভাবে বিমার টাকা তুলতে হবে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এতে সন্দেহ আরও বৃদ্ধি পায় পুলিশের। ফলে সাপের ছোবলের ফলে ওই মৃত্যু শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে বাড়িতে ফেলে রেখে মৃত্যু নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ।
এই ঘটনার তদন্তের জন্য ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে গণেশন মোট ১১টি বিমা করিয়েছিলেন। তার মধ্যে চারটি ছিল জীবনবিমা। সেই সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই মৃতের দুই পুত্র নিজেদের দোষ স্বীকার করে নেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। এই কাজে গণেশনের দুই পুত্রকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর বন্ধুরা। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।