তথ্য মিলল নয়া জেএমবি-র

বাংলাদেশের পুলিশ জেরা করল মুসাকে

আইএসের নামে যারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে, সে দেশের সরকারের মতে, তারা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-রই একটি অংশ। এদের ‘নয়া জেএমবি’ বলছে বাংলাদেশের পুলিশ-প্রশাসন।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩২
Share:

আইএসের নামে যারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে, সে দেশের সরকারের মতে, তারা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-রই একটি অংশ। এদের ‘নয়া জেএমবি’ বলছে বাংলাদেশের পুলিশ-প্রশাসন। বর্ধমান স্টেশনে ধরা পড়া সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি মহম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসার থেকে এই নয়া জেএমবি সম্পর্কেই বিস্তারিত খোঁজ নিল বাংলাদেশ পুলিশ আইএসে যোগ দেওয়া নিয়ে মুসার পথপ্রদর্শক যে, বাংলাদেশি সেই আবু সুলেমান ওরফে মহম্মদ সুলেমান যে নয়া জেএমবি-রই এক জন চাঁই, বাংলাদেশ পুলিশ সে ব্যাপারে নিশ্চিত। বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা মুসা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে আগেই সে ইঙ্গিত দিয়েছিল।

Advertisement

এনআইএ সূত্রের খবর, মুসা বলেছে, বয়সে তরুণ, তথ্যপ্রযুক্তিতে দড়, জেএমবি সদস্যদের একাংশ সিরিয়ায় থাকা আইএসের চাঁইদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা চালাচ্ছে। সুলেমান এদের অন্যতম মাথা বলে মুসার দাবি। গোয়েন্দারা জানান, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে জেএমবি-র নেটওয়ার্ক বেআব্রু হয় এবং একের পর এক চাঁই ও সদস্য ধরা পড়ে। সেই জেএমবি মূলত ছিল আল কায়দার অনুসারী। কিন্তু খাগড়াগড়ের ঘটনার কিছু দিন পরেই জেএমবি-র ওই তরুণ সদস্যেরা সংগঠনের মধ্যে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয় এবং আইএসের পথ ধরে।

এক এনআইএ কর্তা বলেন, ‘‘খাগড়াগড়-কাণ্ডের পর জেএমবি-র তরুণ এক দল সদস্য মনে করে, বিশাল প্রস্তুতির দরকার নেই, শত্রু হত্যার জন্য দ্রুত পরিকল্পনা করে ঝটিতি কাজ সারতে হবে।’’ ওই কর্তার কথায়, ‘‘নয়া জেএমবি হোক কিংবা আইএসের শাখা, তাদের সদস্য সংখ্যা কম হলেও তৎপরতা বেশি।’’

Advertisement

বাংলাদেশ সরকারের দাবি, গত জুলাই মাসে ঢাকার গুলশন ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পরপর জঙ্গি হামলা এবং তার আগে বাংলাদেশে একের পর এক মুক্তমনাদের হত্যায় নয়া জেএমবি-ই জড়িত। বুধবারই বাংলাদেশের ৬৩টি জেলার ৩০০টি জায়গায় ৫০০ বিস্ফোরণের ১১ বছর পূর্ণ হল। ২০০৫-এর ১৭ অগস্ট হওয়া ওই ধারাবাহিক নাশকতা তাদের কাজ বলে জেএমবি জানিয়েছিল। তার পরেই তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সল্টলেকের এনআইএ অফিসে মুসার সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তিন কর্তা। এনআইএ-র দুই শীর্ষকর্তাও সেখানে ছিলেন। ফের বুধবার ভোর ৫টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মুসার সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ কথা বলে। মঙ্গলবার মুসাকে হেফাজতে পেয়েছিল এনআইএ। গুলশন ও কিশোরগঞ্জে জঙ্গি হামলার তদন্তে আসা বাংলাদেশ পুলিশের দলটি শহরে আসে তার আগের রাতেই। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের পুলিশ-কর্তারা মুসার সঙ্গে কথা বলার পরে কার্যত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ দিন সন্ধেয় তাঁরা ঢাকার বিমান ধরতে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন