রোহিঙ্গা: বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমার সেনার হামলা?

বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুসারে- ১৭ হাজার রোহিঙ্গা বান্দরবান সীমান্তে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে। আর অন্তত সাত হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায়।

Advertisement

অঞ্জন রায়

ঢাকা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখাতে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের সরে যেতে মায়ানমার সৈন্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তের ওপারে থাকা মায়ানমারের বর্ডার গার্ড সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। স্থানীয় ঘুনধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো জাহাঙ্গীর আজিজ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, মায়ানমার সৈন্যদের ফাঁকা গুলিবর্ষণের পর এলাকায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুসারে- ১৭ হাজার রোহিঙ্গা বান্দরবান সীমান্তে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে। আর অন্তত সাত হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে মায়ানমারের অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। বিকেলে এই বিষয়ে ঢাকায় দায়িত্বরত মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ’কে তলব করেছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আনুষ্ঠানিক পত্র-নোট দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এম খোরশেদ আলম এই তলব করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তে মায়ানমার সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ভাল নয় বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

Advertisement

এই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দু’দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। সে সময়ে বাংলাদেশ এই ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল।

এ দিকে বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমার সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের উত্তেজনার সময়েই তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে শুক্রবার আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিনিয়র ডিরেক্টর লিসা কার্টিস। রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখার জন্য কক্সবাজারের ক্যাম্পে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।

গত বছরের ২৫ অগস্ট থেকে মায়ানমারের রাখাইন অঙ্গরাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর অব্যাহত নিপীড়ন ও গণহত্যার কারনে সেখান থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে ঢাকা। এমন সময়ে সীমান্তে মায়ানমারের সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নতুন জটিলতা তৈরি করতে পারে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই জানিয়েছেন, ওরা বাংলাদেশকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে। এর আগে আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনাও আপনারা দেখেছেন। আমরা বিষয়টি দেখছি। আমরা কূটনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করছি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন