Bangladesh News

তিন বছরের মধ্যেই আখাউড়া-আগরতলা রেল, খুলছে নতুন দুয়ার

বাঙালির আঠারো মাসে বছর। নড়তে চড়তে বছর ঘোরে। দৌড়তে গিয়েও দাঁড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ-ত্রিপুরার বাঙালি তীব্র প্রতিবাদ কথাটা উড়িয়ে স্বপ্নের ডানায় ভেসেছে। শপথ নিয়েছে, মাত্র তিন বছরে আখাউড়া-আগরতলা রেল লাইন নির্মাণের কাজ শেষ করার।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ১৫:২৮
Share:

আখাউড়া রেল স্টেশন।ফাইল চিত্র।

বাঙালির আঠারো মাসে বছর। নড়তে চড়তে বছর ঘোরে। দৌড়তে গিয়েও দাঁড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ-ত্রিপুরার বাঙালি তীব্র প্রতিবাদ কথাটা উড়িয়ে স্বপ্নের ডানায় ভেসেছে। শপথ নিয়েছে, মাত্র তিন বছরে আখাউড়া-আগরতলা রেল লাইন নির্মাণের কাজ শেষ করার। রেলে জুড়বে বাংলাদেশ-ত্রিপুরা। ট্রেন চলবে ২০১৯-এর ৩১ মার্চ। ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ওই বছরই। তার আগেই ত্রিপুরা হয়ে যাবে পূর্বের প্রবেশ দ্বার। ধীরে ধীরে ট্রান্স এশিয়ান নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরাও। ছড়ানো রেল লাইন ধমনীর মতো বইবে বাংলাদেশ, ভুটান, চিন, নেপাল, মায়ানমারের মধ্যে।

Advertisement

আখাউড়া-আগরতলা মাত্র ১৫ কিলোমিটারের জন্য আটকে ছিল রেল বন্ধন। ২০১৩-র ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারতের মৌ চুক্তি। দু’দেশের পুবের সীমান্ত পেরিয়ে রেল চলতে তবুও দেরি। নষ্ট তিনটি বছর। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সখ্য দীর্ঘদিনের। ঢাকা-আগরতলার যোগাযোগে বিঘ্ন নেই। বাংলাদেশের সব থেকে বেশি বাণিজ্যিক সাফল্য ত্রিপুরায়। ত্রিপুরার নিত্য প্রয়োজনীয় অধিকাংশ পণ্যই আসে বাংলাদেশ থেকে। রেল চললে পরিবহণ অনেক সহজ হবে। খরচও কমবে। নতুন লাইন আগরতলা স্টেশন থেকে সিদ্ধি আশ্রম শ্মশান, বাধারঘাট মাতৃপল্লি, চারিপাড়া, নিশ্চিন্তপুর হয়ে বাংলাদেশের গঙ্গানগরে যাবে। সেখান থেকে আখাউড়া।

বাংলাদেশ-ত্রিপুরা আগের সব লাইনই ছিল মিটার গেজ। সেটা ন্যারো গেজের চেয়ে একটু চওড়া হলেও আন্তর্জাতিক স্তরে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণে যথেষ্ট নয়। তাও বাতিল দীর্ঘ না ব্যবহারে। নতুন লাইন হবে ব্রডগেজের। নতুন লাইনে আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতার দূরত্ব কমে ৫১৪ কিলোমিটার। বর্তমানে ভারতীয় রেল নেটওয়ার্কে আগরতলা-কলকাতা ১৬১৩ কিলোমিটার। ত্রিপুরা, অসম-মিজোরামের মাঝে ঝুলন্ত রাজ্য। তিন দিকে বাংলাদেশ। কলকাতার রসগোল্লার নয়, বাংলাদেশের কুমিল্লার রসমালাই নাগালে। চট্টগ্রাম মাত্র ২১৩ কিলোমিটার। আশুগঞ্জ বন্দর ৫৪ কিলোমিটার। ট্রেনে পণ্য আনা নেওয়ায় কোনও অসুবিধেই হবে না।

Advertisement

আগরতলা দিল্লি রেল চলছে ৩১ জুলাই থেকে। স্বাধীনতার ৬৯ বছর পর দিল্লি-আগরতলার রেল যোগাযোগ। ১৮৭২ কিলোমিটার সফর ৪৭ ঘন্টায়। দিল্লির আনন্দবিহার স্টেশন আর আগরতলা স্টেশনের মধ্যে যাতায়াত আপাতত সপ্তাহে একদিন। ১৯৭২-এ যাত্রা শুরু অসমের চোরাইবাড়ি থেকে ত্রিপুরার ধর্মনগর। ১৫৮ কিলোমিটার লাইন ধরে ট্রেন আগরতলায় পৌঁছেছে ২০১২তে। ২০২০ সালে উত্তর পূর্বের সাতটি রাজ্যের মধ্যে রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ হবে। অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অসম, ত্রিপুরা, রেল লাইন শিরা উপশিরার মতো ছড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর পূর্ব ভারতের সম্পর্ক হবে নিবিড়। বাণিজ্যিক বিস্তারের রাস্তায় দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক বিকাশ। উন্নয়নে নতুন দিগন্ত। দু’দেশের মানুষ আরও কাছে।

মৈত্রীর নতুন দরজা খুলবে আখাউড়া রেল স্টেশন। গত ৩১ জুলাই আগরতলার সুদৃশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই স্বপ্নকে বাস্তব করার কথাই ঘোষণা করলেন বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ মুজিবুল হক। তাঁর পাশে ছিলেন ভারতের রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনজনে বোতাম টিপে উদ্বোধন করছেন ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক। আখাউড়া আগরতলা রেল লাইন বানানোর খরচ ৯৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সবটাই দেবে ভারত সরকার।

আরও খবর...

কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গি সাবেক পূর্ব-পাকিস্তানের সেই কুখ্যাত গভর্নরের নাতি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন