বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ঝালিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে দু’তরফেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মাটিতে নিহত ভারতীয় সেনাদের একটি তালিকা তৈরি করেছে ঢাকা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৬৬১ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ দিয়েছিলেন সেই যুদ্ধে। তাঁদের নিকটাত্মীয়ের হাতে সম্মান ও স্বীকৃতি তুলে দেওয়ার কাজটি হাসিনার সফরেই শুরু করা হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আগামী ৮ তারিখ নয়াদিল্লির ‘মানেকশ সেন্টার’-এ এই তালিকার প্রথম ৭ জন সেনার স্বজনদের হাতে মানপত্র, রৌপ্য মেডেল এবং ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও উপস্থিত থাকবেন ওই অনুষ্ঠানে।
নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য মোট ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে হাসিনা সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর ধাপে ধাপে তালিকার বাকিদের পরিবারকেও ওই সাম্মানিক দেওয়া হবে। মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য এর আগেও দু’দফায় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ভারতীয়দের পুরস্কৃত করা হয়েছিল ঢাকায়। সূত্রের খবর, হাসিনার সফরের আগে বিরোধী দল বিএনপি যে ভারত-বিরোধী প্রচার শুরু করেছে, তার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সামনে আনতে চাইছেন বাংলাদেশের আওয়ামি লিগ নেতৃত্ব। দূতাবাসের এক কর্তার কথায়, ‘‘আর কোনও দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের চেয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যে ঐতিহাসিক ভাবেই আলাদা— সেটাও স্পষ্ট করতে চাইছেন মুক্তিযুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবের কন্যা।’’
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ, বাণিজ্য, তথ্য ও সম্প্রচার সংক্রান্ত যে চুক্তিগুলি সই হবে, তা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে গঙ্গা অববাহিকার সংস্কার নিয়েও। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, যশোরে ভারতের হিরো মোটোকর্প-এর কারখানা খোলা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি সই হবে। যৌথ উৎপাদনে তৈরি মোটরবাইক অন্যান্য দেশে রফতানি করা হবে। পাশাপাশি ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ভুটানে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করার ব্যাপারেও চুক্তি সই হবে। ভারত থেকে ফিরে আগামি ১৯ তারিখ ভুটানে যাবেন শেখ হাসিনা।